পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রার্থনা ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নব জীবনের যাত্রার পথে দাও দাও এই বর হে হৃদয়েশ্বর, প্রেমের বিত্ত পূর্ণ করিয়া রাখুক চিত্ত, যেন সংসার মাঝে দক্ষিণ মুখ রাখে, সুখে পাই তব ভিক্ষা, ছুখে পাই তব দীক্ষা, মন ক্ষুদ্রতা করুক মুক্ত, নিখিলেব সাথে হোক সে যুক্ত, শুভ কাজে যেন না মানে ফ্লাস্তি । শাস্তি: শাস্তি: শান্তিঃ ॥ বঙ্গলক্ষ্মী ] প্রাচীন ভারতে রাজার অন্নপানীয়ে বিষপরীক্ষা প্রাচীন কালে প্লাজবৈদ্যকে কেবল রাজার চিকিৎসাকার্যের জন্যই ব্যাপৃত থাকিতে হইত না। রাজা যখন যুদ্ধযাত্রা করিতেন, তখন উtহার সঙ্গে থাকিয় রাজাকে শত্রুপক্ষের প্রযুক্ত ধিয হইতে রক্ষা করিবার ভায় রাজবৈদ্যের ছিল । কেন না শত্রুপক্ষ রাজাকে এবং রাজার সৈন্যসামন্তগণকে বিনাযুদ্ধে কৌশলে বিনাশ করিবার জন্য রাজা যে পথ দিয়া যুদ্ধের জনা যাত্রা করিতেন সেই পথ ; যে সকল জলাশয়ের জল পান করিতেন সেই সকল জলাশয়ের জল, যে সকল খাদ্যদ্রব্য ভোজন কfরতেন সেই সকল ভোজনসবা, এবং বিশ্রান্ত হইয়া যে সকল বৃক্ষের ছায়ায় বিশ্রাম করিতেন, সেই সকল বৃক্ষের ছায়াকে, এমন কি রাজার অন্নব্যঞ্জনাদি পাকের জন্য ব্যবহার্য ইন্ধন বা জ্বালানি কাষ্ঠ ও অশ্ব প্রভৃতির খাদ্যদ্রব্য সকলকেও দূষিত বা বিষাক্ত করিয়া রাথিত। রাজার সন্নিহিত রাজবৈদ্যকে এই সকল ফ্রব্যকে রাজার বা রাজ-অমুচয়গণের ব্যবহারের পূর্বে পরীক্ষা কবিয়া দেখিতে হইত এবং দূষিত বলিয়া বিবেচিত হইলে, উহাদিগকে শোধিত করিয়া ব্যবহারযোগ্য করিয়া निष्ठ ट्झेउ ॥ রাজার অন্নপানীয় যাহাতে শত্রুপক্ষ বা বিষ্টি ভূত কর্তৃক বিষাক্ত ন হইতে পারে, তাহার জন্য রাজা যথোচিত ব্যবস্থা তো করিতেন-ই, অধিকন্তু তিনি আর এক জন বৈদ্যকে অন্নপানীয় প্রভৃতি পরীক্ষার জন্য র্তাহায় পাকশালার অধ্যক্ষরূপে নিযুক্ত করিতেন। ইনিও রাজবৈদ্য বলিয়া খ্যাতিলাভ কঞ্জিতেন। উtহার নিকট ভোজ, পানীয় প্রভৃতি পরীক্ষার উপকরণ এবং বিবিধ প্রকার বিষনাশক ঔষধসকলও থাকিত। রাজার অন্নপানীয় বিষাক্ত কিনা পরীক্ষার জন্য পাকশালাধ্যক্ষ বৈদ্যের আদেশে, কাক, ক্ৰৌঞ্চ, কোকিল, হংস, জীবজীবক, শুক, শারিকা ও ময়ূর প্রভৃতি পক্ষী এবং মৰ্কট ও পৃষত নামক মৃগ প্রভৃতি সযত্বে রাজভবনে প্রতিপালিত হইত। ইহাদের দ্বারা রাজার অন্নপালীয়াদির পরীক্ষা এবং রাজভবনের শোভাবধান-উভয়ই ইহঁত। এক্ষণে রাজার অন্নপানীয় বিধসংযুক্ত কিনা তাহার পরীক্ষা পাকশালাধ্যক্ষ যেরূপভাবে করিতেন, তাহার কিঞ্চিৎ পরিচয় উল্লিখিত হইতেছে। এই পরীক্ষণশ মূল্যবান কোন যন্ত্রের আবস্তৃক ছিল না। fবষাক্ত অন্ন পরীক্ষণ যথা-(১) রাজার আল্লাদি খাদ্যদ্রব্য হইতে কিয়দংশ মক্ষিকা ও বায়ুস প্রভূতি পক্ষাদিগকে প্রথমে খাওয়াইয়া দেখা হইত। যদি উহা ভক্ষণ করিয়া মক্ষিক ও বায়সাদি মৃত্যুমুখে পতিত হুইত, তাহা হইলে উহা যে বিষযুক্ত তাহ প্রতক্ষ প্রমাণীকৃত হইত। অথবী— (২) ভোজ্যদ্রব্যের কিয়দংশ অগ্নিতে নিক্ষেপ করিলে যদি অত্যন্তু চটচট করিয়া শব্দ এবং ময়ূবের কণ্ঠের মত তীব্র উজ্জ্বল শিখ নির্গত হইত কিংবা অগ্নিশিখ বিচ্ছিন্ন ও তাহ হইতে তীক্ষ ধূম নির্গত হইত এবং সে ধূম সহসা উপশমিত ন হইত, তাহ হইলে উহা বিধসংযুক্ত বলিয়া নির্দেশ করা হইত। অদ্ভন্ন,— (৩) বিষসংযুক্ত অল্লাদি দর্শন করিলে চকোরের চক্ষুর বর্ণ ভিন্নরূপ করিত এবং— (৪) বিষাক্ত অন্নাদি দর্শন করিলে জীবজীবক পক্ষীর মৃত্যু (৫) কোকিলের স্বরবিকৃতি (৬) ক্রৌঞ্চের মত্তত (৭) ময়ূরের উদ্বেগ ও রোমাঞ্চ (৮) শুক ও সারিকার চীৎকার (৯) হংসের বিকট আৰ্ত্তনাদ (১ -) ভূঙ্গরাজের নিনাদ (১১) পৃষত নামক স্বগের অশ্রুধিসর্জন ও (১২) বানরের মতভেদ হইত। শ্ৰীভারতী ] প্রগতি-সাহিত্য শ্ৰীশুভেন্দু ঘোষ বৰ্ত্তমান শতাব্দীর প্রারম্ভ, বিশেষতঃ বিগত মহাসমরের পর হতে মামুষের জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে একটা প্রচণ্ড বিপৰ্য্যয় দেখা দিয়েছে ; ৰাস্তব জীবনেয় নানান.অভিজ্ঞতা মামুষকে তার জীবনদর্শন বদলে ফেলতে বাধ্য করেছে, তার রুচির পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, রসাম্বভূতির নূতন বিষয়বস্তু উপস্থিত করছে। বৰ্ত্তমানের অনিশ্চয়ত ভেদ করে নূতনের অঙ্গীকার ফুটে উঠছে ; মানুষের মনে নূতন আশা ও নূতন বিশ্বাসের সঞ্চার হচ্ছে। যে সাহিত্যে জীবনেয় এই জয়যাত্রা রূপায়িত, তারই নামকরণ হয়েছে প্রগতি-সাহিত্য ।