পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহামতি দ্বিজেন্দ্রনাথ প্রক্ষিতিমােহন সেন শাস্তিনিকেতন আশ্রমে যোগ দিবার পূৰ্ব্বে স্বৰ্গীয় দ্বিজেজনাথের লেখা দূর হইতে পড়িয় তাহার অপূৰ্ব্ব প্রতিভার পরিচয় পাইয়াছিলাম। তাহার পরে যখন মহর্ষিদেবের শ্ৰাদ্ধ জোড়াসাকোর বাড়ীতে অনুষ্ঠিত হইয়াছিল তখন পিতৃশ্ৰাদ্ধরত এই সৌম্য মহাত্মাকে প্রথম দেখিয়া মনে মনে প্রণাম করিলাম। ইংরেজী ১৯০৮ সালে শাস্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয়ে যোগ দিতে আসিয়া ইহঁাকে ভাল করিয়া দেখিলাম। এখন যাহা লিখিতেছি তাহা প্রধানতঃ আমার নিজের অভিজ্ঞতা হইতে । পুরাতন ঘটনা সাল তারিখ প্রভৃতি আমার জানা থাকিবীর কথা নহে। নিতান্ত প্রয়োজন বশত অন্তের লেখা হইতে তাহার উল্লেখ মাত্র করিব । শাস্তিনিকেতনের পূৰ্ব্বভাগে বনস্পতিবেষ্টিত 'নীচু বাংলা’ নামক বাড়ীতে তিনি তখন বাস করিতেন। বাড়ীটি ছিল ছায়াচ্ছন্ন শাস্তস্নিগ্ধ, যেন একটি আশ্রম। সেখানে তিনি পশুপক্ষী কাঠবেড়ালী প্রভৃতি জীবের সঙ্গে গভীর মৈত্রীবন্ধনে বদ্ধ হইয়া বাস করিতেন। অথচ দিনরান্ত্রি গভীর তত্ত্ববিদ্যার ধ্যান-ধারণায় তাহার জীবন অতিবাহিত হইত। তাহার কথাবার্তা শুনিয়া বুঝিলাম তাহার যে পরিচয় তাহার লিখিত প্রবন্ধাদি পড়িয়া পাইয়াছিলাম, তাহা হইতে তিনি স্বয়ং অনেক বড়। ১২৪৬ সালের ২৯শে ফাঙ্কন তাহার জন্ম । কাজেই আমি যখন র্তাহাকে শ্রাদ্ধবাসরে প্রথম দেখি তখন র্তাহার বয়স পয়ষট্টি বৎসর। যখন র্তাহার কাছে আমি উপস্থিত হইবার সৌভাগ্য লাভ করিলাম তখন র্তাহার বয়স ৬৮ বৎসর । তাহার শেষজীবনের সঙ্গেই আমাদের পরিচয়। তাহার প্রথম জীবনে র্তাহার শিক্ষাদীক্ষা কি ভাবে হইয়াছিল তাহার বিশেষ খবর আমরা পাই নাই। র্তাহার কাছে শুনিয়াছি টোলের পণ্ডিতদের কাছেই তিনি ్కూ ു. প্রধানত: তাহার শিক্ষা লাভ করেন। মহৰ্ষির বাড়ীটি তখন নানা জ্ঞানী ও গুণী মহাপুরুষের সমাগমে একটি জীবন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ছিল । সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই র্তাহার শিক্ষাদীক্ষা চলিয়াছিল। টোলের পণ্ডিতদের কাছে শিক্ষালাভ করাতে র্তাহার হস্তাক্ষর পর্য্যস্ত টোলের পণ্ডিতদের ধাঁচের হইয়া দাড়াইয়াছিল। স্কুল-কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি তিনি জানিতেন না, জানিতে পারিলেও কিছুতেই সহ করিতে পারিতেন না। র্তাহার বাল্যবন্ধুদের মধ্যে স্বৰ্গীয় কৃষ্ণকমল ভট্টাচাৰ্য্য ও কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী মহাশয়ের নাম সকলেই জানেন। কৃষ্ণকমল তখনকার দিনের এক মহা পণ্ডিত ছিলেন । বিহারীলালের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রনাথের কাব্যলোচনা গভীর ভাবে চলিত। তবে তাহার অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন স্বৰ্গীয় রাজনারায়ণ বস্ব, যদিও রাজনারায়ণ বস্ব বয়সে অনেক বড় ছিলেন। এই দুই মনখোলা বন্ধুতে যখন আলাপ চলিত তখন নাকি হাস্তের রোলে বাড়ী ফাটিয়া পড়িবার উপক্রম হইত । এই রাজনারায়ণের কথাই তিনি র্তাহার গুম্ফ-আক্রমণ কাব্যের প্রারম্ভে উল্লেখ করিয়াছেন— - প্রবীণ সাধুর সঙ্গে, বিপ্র যুব বিন ভঙ্গে दश्कॉल अ१jटख्छांtद्र बैंॉक्ष्] । বয়সের যে অনৈক্য, তার প্রতি নাহি লক্ষ্য সে অনৈক্যে ীেতির কি বাধা ॥ এই সব বন্ধুর সঙ্গে প্রগাঢ় প্রীতির যোগ থাকা সত্ত্বেও এক দিকে তিনি চিরদিন আপনার একটি স্বতন্ত্র ধ্যানলোকেই বিরাজ করিতেন । ধিনি র্তাহাকে প্রত্যক্ষ না দেখিয়াছেন তিনি তাহার এই ধ্যানলোকস্থিতির কথা ঠিক ভাবে বুঝিতে পারিবেন কিনা সন্দেহ । র্তাহার যেমন মানবপ্রীতি ছিল তেমনি উাহার আপনারমধ্যে-আপনি-সমাহিত ভাব ছিল, এই উভয়ের মধ্যে কোথাও বিরোধ বা অসঙ্গতি ছিল না । উঠা-নামার