পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

68 প্রবাসী -اظ আক্রান্ত হষ্টয়া পলায়ন করিবার সুযোগ না পাইলে গোসাপ আক্রমণকারীর প্রতি রুখিয়া দাড়ায় এবং ফোস ফোস শব্দ করিয়া ঘন ঘন লাঙ্গুল আস্ফালন করিতে থাকে। গোসাপ দেখিলেই কুকুরেরা তাড়া করিয়া যায়। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় এই যে, কুকুরকে ইহারা মোটেই গ্রাহ করে না। কুকুর দেখিলেই ইহারা গল ফুলাইয়া, মাথা Sego উচু করিয়া এমন ভাবে রুখিয়া দাড়ায় যে, उंशत्र আর অগ্রসর হইতে চাহে না। দূরে থাকিয়াই প্রাণপণে ঘেউ ঘেউ করিতে থাকে । চার-পাচ ফুট লম্বা একটা গোসাপ লেজের এক আঘাতেই একটা প্রকাগু কুকুরকে ঘায়েল করিয়া ফেলিতে পারে । ভয়ে মহালয়া শ্ৰীহেমচন্দ্র বাগচী দেবতা রইলেন কোথায় কোন ভক্তের সরল হৃদয়ে— মানুষের ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলাম সেদিন মহালয়ায় কালীঘাটের দেবায়তনের পথে । চলেছে ভিক্ষুকের দল, খঞ্জ, অন্ধ, বিকলাঙ্গ-- লাঠি ভর করে, কারো বা শুধু দুটাে হাত কোনো রকমে চলেছে মাজা ঘষে ঘষে । অদ্ভুত তারা, অদ্ভুত তাদের বেশ, আর অদ্ভুত তাদের আচরণ। জলন্ত রোদরে দু-পাশে ভিক্ষুকের সার মাঝখানে চলেছে যাত্রীর স্রোত নদীর স্রোতের মত । বটের স্নিগ্ধ ছায়ায় শিলাস্তপে পড়ছে পুষ্পাঞ্জলি— উঠছে বেদমন্ত্রধ্বনি, ভক্তিনত অসংখ্য ঘোমটাঘেরা মুখ । ধূপের গন্ধে, পুষ্পবিন্থপত্রের গন্ধে ংশয়হীন সরল বিশ্বাসের প্রণাম । কত দিন ত আসি আর যাই— কিন্তু সেদিন মনে ছিল রং, বিচিত্রকে দেখবার, গ্রহণ করবার অন্তভূতি । মনে হ’ল এ আরেকটা জগং, সিনেমা-রেডিও-গ্রামোফোন আর পেশাদারী বক্তৃতায় ক্লাস্ত কলকাতা অপব্যবহৃত, অতিব্যবহৃত মননশীলতার ঔজ্জ্বল্য থেকে এ আর কোনো একটা জগং অথচ এ এত কাছে – কত দিন ত আসি আর যাই ! 黎 崇 崇 মাঝে মাঝে এক একটা অতি দীর্ঘ নারকেল-গাছ আশ্বিনের দিগ বিজয়ী আকাশে ঝলমল করে । কোনো শিল্পীর আঁকা যেন এই আকাশ, মেঘের আঁজি দেওয়া দেওয়া— কলকাতার অরণ্যবিরল দিগন্তের ইঙ্গিত। কলকাতার ক্লান্ত মনের শরৎ-স্বপ্ন আমার সফল হ’ল সেদিন মহলিয়ায় কালীঘাটের দেবায়ুতনের পথে । 赛 举 肇 কত ছায়া আর কত মায়া ! চেয়ে রইলাম শুধু পায়ের দিকে— কত মানুষ আর কত মুখ । চলমান মুহূৰ্ত্ত যেন থেমে রইল ক্ষণকাল । কত পায়ে পায়ে কত মনে মনে বেজে চলেছে এই চলবার সুর মনুষ্যজন্মের আদি স্বচনা থেকে সুমহান ভবিষ্যতের দিকে । কেউ স্নান ক’রে পটবস্ত্র পরে ফিরছে মন্দির থেকে, ভক্তি আর তৃপ্তির রেখা মুখে— হয়ত মনে | কেউ বা সিন্দুর আর চন্দনলিপ্ত দেহ— কারো বা সৰ্ব্বাঙ্গে ঝরছে ঘfম, ফুলের সাজি আর নৈবেদ্য নিয়ে চলেছে কত তরুণী, প্রৌঢ়া, যুবতী, বিধবা— কত পাণ্ডা, পুরোহিত, মাড়োয়ারী, হিন্দুস্থানী ! আলোছায়া-মেশ শরৎ-মধ্যাহ্নের এই প্রবাহটি নিলাম মনে । কত মানুষ আর কত মুখ ! কত পায়ে পায়ে কত মনে মনে বেজে চলেছে এই চলবার সুর ।