পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Պ8Ն প্ৰৰাণী $No80, পার্থী নাই! তুমি আমাকে এখানে ফেলে যেয়ো ন!— ওগো ডালবাসার লোক !” সারী এখন বিমলবাবুর বাংলোয় কাজ করে, এইখানেই সে বাসও করিতেছে। কয়টা মাসের মধ্যে ঘটিয়া গিয়াছে অনেক । বিমলবাবু এখানে আসার কিছু দিনের মধ্যেই সারী অনুভব করিল—অজগরের অদূরস্থ শিকারের যেমন সৰ্ব্বাঙ্গ অবশ হইয়া যায়, সেও যেন তেমনি অবশ হইয়া যাইতেছে ! চীৎকার করিয়া আপন জনকে ডাকিয়৷ সাহায্য চাহিবার শক্তি পৰ্য্যস্ত তাহার হইল না । সম্পদ, গাম্ভীৰ্য্য, কৰ্ম্মক্ষমতা, প্রভূত্ববিস্তারের শক্তি, তৎপরতা প্রভৃতি বিচিত্র ছাপে চিত্রিত মুদীর্ঘকায় অজগরের মতই ভয়াল বিমলবাবু! অজগরের মুখের মধ্যে সারী অচেতন পশুর মত ধরা পড়িল । তাহার কঠিন দৃষ্টির সম্মুখে কাহারও প্রতিবাদ করিবার সাহসও হইল না। আরও একটা বিচিত্র ব্যাপার ঘটিয়া গেল—সাওতাল-পল্লীর সকলেই এক দিক হইয়া সর্দার কমল মাঝি ও সারীর স্বামীকে একঘর্যে করিল ; অথচ তাহারাই রহিল বিমলবাবুর একাস্ত অনুগত। কিছুদিনের মধ্যেই সারীই নিজে পঞ্চ জনের কাজে সাকমচারী’র -অর্থাং বিবাহচ্ছেদের প্রার্থনা করিল। সামাজিক আইনমত তাহারই জরিমানা দিবার নিয়ম ; চাহিবার পূৰ্ব্বেই সে এক শত টাকা পঞ্চে’র সম্মুখে নামাইয়া দিল । কয়েক দিনের মধ্যেই এক দিন সকালে দেখা গেল— বুড়া কমল মাঝি, তাহার বৃদ্ধ স্ত্রী এবং সারীর স্বামী রান্ত্রির অন্ধকারের মধ্যে কোথায় চলিয়া গিয়াছে। সাঁওতাল-পাড়ার সর্দার এখন চূড়া মাঝি-সেই কাঠের পুতুলের ওস্তাদ। সর্দার মাঝির জমি শ্ৰীবাস পাল দখল করিতেছে, তাহার নাকি বন্ধকী দলিল আছে । সারী এখন বিমলবাবুর বাংলোয় কাজ করে, বাংলোর সীমানার মধ্যেই আউট-হাউসে থাকে। বেশভূষার প্রাচুর্য্য ভুেখিয়া সারীর সর্থীরা বিস্মিত হইয়া যায়। এক-এক দিন দেখা যায় গভীর রাত্রে সারা ভয়ত্রস্তা হরিণীর মত ছুটিয়া পলাইতেছে, তাহার পিছনে পিছনে ! ছুটিয়াছেন বিমলবাবু, হাতে একটা হান্টার! গান গাহিতে গাহিতে সারী কাজ করিতেছিল ; ঘরের দেওয়ালের গায়ে টাঙানো প্রকাগু আয়নাটার কাছে আসিয়া সে কাজ বন্ধ করিয়া দাড়াইল। চুলটা এক ধার ঠিক করিয়া লইল, এক বার হাসিল—তার পর সহসা দেহখানি দোলাইয়া হিপ্পোল তুলিয়া সে নাচিতে আরম্ভ করিল --"জঙ্গলের ভিতর কি আঁধার আর কি ঘন গাছ ”— 锋 锋 籌 বাংলোর সম্মুখ দিয়া পথটা সোজা চলিয়া গিয়াছে ; স্বগঠিত পথ ইটের কুচি ও লাল কাকর দিয়া গড়িয়া তোলা হইয়াছে। সরল রেখার মত সোজা, তেমনি প্রশস্ত—অস্তত: তিনখানা গাড়ী পাশাপাশি চলিতে পারে। কুয়াশায় অল্প ভিজিয়া রাঙা পথখানির রক্তাভ যেন গাঢ় হইয়৷ উঠিয়াছে। বাংলো হইতে খানিকট আসিয়াই পথের দু-পাশে আরম্ভ হইল সারি সারি খড়ের তৈয়ারী কুঁড়ে ঘর। অনেক বিদেশী কুলী আনিতে হইয়াছে ; বাক্স-ফৰ্ম্মায় ইট পাড়া, ইটের ভাট দেওয়া, কলের লোহ+লকড়ের কাজ এদেশের অনভিজ্ঞ অপটু মজুর দিয়া হয় না। ঐ কুলীদের সাময়িক আশ্রয় হিসাবে ঘরগুলি তৈয়ারী হইয়াছে । ওপাশে ইহার মধ্যেই কুলীদের স্থায়ী বাসস্থান আর প্রায় তৈয়ারী হইয়া উঠিল, পাকা ইটের লম্ব একটা ব্যারাক—ছোট ছোট খুপরী ঘর- সামনে এক-এক টুকর বারান্দা । কুলীদের কুটারগুলি এখন জনবিরল, বয়লারের ভে। বাজিবার সঙ্গে সঙ্গেই সকলেই প্রায় কাজে চলিয়া গিয়াছে ; থাকিবার মধ্যে কয়েকটি প্রায়-অক্ষম বুদ্ধবৃদ্ধ আর উলঙ্গ অৰ্দ্ধ-উলঙ্গ ছেলের পাল। বৃদ্ধ মাত্র কয়েক জন—তাহারা উপু হইয়া ঘোলাটে চোখের অলস অর্থহীন দৃষ্টি সম্মুখে মেলিয়া বসিয়া আছে। বৃদ্ধ কয়েক জন জটলা পাকাইয়া রৌদ্রের আশায় বসিয়া পরস্পরের অপরিচ্ছন্ন মাথা হইতে উকুন বাছিয়া নখের উপর রাখিয়া নখ দিয়া টিপিয়া মারিতেছে, আর মুখে করিতেছে—ছ। ঐ ছ না করিলে নাকি উকুনের স্বৰ্গলাভ হইবে না। মধ্যে মধ্যে দুৰ্দ্দাস্ত চীৎকার করিয়া ছেলের দলকে গাল দিয়া ধমকাইতেছে, —অীরে বদমাসে-হারামজাদে, তেরি কুছ না করে शोंम