পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:ன —ই-হারামজাদী বুঢ় টী,—তেরি দাত তোড় দেঙ্গে কাম । বলিয়া ছেলের দল দাত বাহির করিয়া ভাঙচাষ্টয়া দিতেছে। একটা বুড়ী একটি ক্রননমানা শিশুকন্যাকে আদর করিতেছিল— “এ হামার বেটা রাণী, সাতপরানী, বেটা লাঙাড়, পুতা কানি”—বেট হামার ভাগ মানী –এ—এ—এ ! অর্থাং ও আমার রাণী মেয়ে, তার সংসারে সাতটি প্রাণী, তাহার মধ্যে পুত্রটি খোড়া, পৌত্রটি কানা ; আহ!— আমার বেটী বড় ভাগ্যবতী । বিমলবাবু তাহার আদরের ছড়া শুনিয়া হাসিলেন। বুদ্ধা মেয়েটিকে বলিল-আরে, আরে, চুপ গে যা ৪ বেটিয়া, মালিক যাতা হ্যায়—মালিক ! আরে— বা-প-রে । বয়স্ক ছেলেগুলি বিমলবাবুকে দেখিয়া শাস্ত হষ্টয়া দাড়াইল, ছোট ছোট হাত তুলিয়া সেলাম করিয়া বলিল— সেলাম মালেক ! বিমলবাবু ছোট্ট একটি টুকরা হাসি হাসিয়া কেবল দাড় নাড়িলেন । কয়টা অল্পবয়স্ক শিশু পরম আনন্দভরে এ উহার মাথায় পথের ধুলা ঢালিয়াই চলিয়াছে । একটা অপেক্ষাকৃত বয়স্ক শিশু বিচিত্র খেয়ালে পথের ধুলার উপরে শুইয়া ধুপ ধপ করিয়া ধুলার উপর পিঠ আছড়াইয়া ধুলার রাশি উড়াইয়া আপন মনেই হাসিতেছিল। ধুলার জন্য বিরক্ত হইয়া হাতের ছড়িটা দিয়া বিমলবাবু তাতাকে একটা খোচা দিয়া বলিলেন—এই ! ছেলেটা তড়াক করিয়া উঠিয়া দাড়াইয়া সেলাম করিয়া বলিল-সেলাম মালিক ! হাসিয়া বিমলবাবু অগ্রসর হইয়া গেলেন । বিমলবাবু পিছন ফিরিতেই ছেলেট জিভ কাটিয়া দাত বাহির করিয়া/ কদৰ্য্য ভঙ্গিতে র্তাহাকে ভাঙচাইয়া দিল, তার পর আবার লাফ দিয়া পথের ধূলায় পড়িয়া ধুলার উপর পিঠ }কিতে ঠকিতে বলিল—আলবৎ করেঙ্গে—আলবৎ করেঙ্গে, ই-ই-ই—বলিয়া আবার এক বার ভাঙচাইয়া न्जेिन्न । কুলী-বস্তি পার হইয়াই কারখানার পত্তন আরম্ভ হইয়াছে। कांजिणी Պ8Պ এ দিকের চরটাকে আর সে চর বলিয়া চেনাই যায় না। সে বেনাঘাসের জঙ্গল আর নাই, চরের এদিকটা এক বারে খুঁড়িয়া ফেলিয়। আবার সমান করিয়া ফেলা হইয়াছে ; লালচে পলিমাটি এদিকটায় তুক তক করিতেছে, মধ্যে মধ্যে এখানে ওখানে দূৰ্ব্বা ও মুখো ঘাসের পাতলা আস্তরণ টুকরা টুকরা সবুজ ছোপের মত ফুটিয়া উঠিয়াছে। তাহারই মধ্যে বড় বড় চতুভুজ আঁকিয়া লাল কাকরের অনেকগুলি রাস্ত এদিক ওদিকে চলিয়া গিয়াছে। বড় রাস্তাটা এখানে আসিয়া সুদীর্ঘশালগাছের মত যেন চারি দিকে সোজা সোজা শাখাপ্রশাখা মেলিয়াছে। এমনি একটা চতুষ্কোণ ক্ষেত্রের উপর প্রকাও একটা টিনের শেড় তৈয়ারী হইতেছে। মোট মোটা লোহার কড়ি ও বর্গায় ছাদিয়া বাধিয়া কঙ্কালটা আর শেষ হইয়া আসিয়াছে । শেড়ের চালের উপর কুলীর কাজ করিতেছে, লোহার উপর প্রকাগু হাতুড়ির ঘা দিতেছে সেই উপরে দাড়াইয়া অবলীলাক্রমে। লোহার উপরে হাতুড়ির আঘাতের প্রচণ্ড শব্দ চারি দিকে ছড়াইয়া পড়িয়া দুই তিন দিক হইতে প্রতিধ্বনিতে আবার ফিরিয়া আসিতেছে । একটা লরী হইতে লোহার কড়ি-বর্গা নামানো হইতেছিল। স্টেশন হইতে লোহালক্কড় এই লরীতেই আসিতেছে। লোহার একটা স্তুপ হইয়া উঠিয়াছে। যন্ত্রপাতিও অনেক আসিয়া গিয়াছে, নানা আকারের যন্ত্রাংশ পৃথক পৃথক করিয়া সাজাইয়া রাখিয়াছে। এক পাশে পড়িয়া আছে দুইটা বিপুলকায় ল্যাঙ্কাশায়ার বয়লার --নিদ্রিত কুম্ভকর্ণের মত। এই সব লোহালক্কড় ও যন্ত্রপাতিগুলিকে মুক্ত রোদ-বাতাসের হাত হইতে বাচাইবার জন্যই ঐ টিনের শেডট তৈয়ারী হইতেছে। একেবারে মধ্যস্থলে একটি বৃহৎ চতুষ্কোণ জমির উপর কলের বনিয়াদ খোড়া হইয়াছে। ঠিক তাহারই মধ্যস্থলে চিমনীট তৈয়ার হইতেছে। একেবারে ওপাশে লাল ইটের লঘু কুলী-ব্যারাক । ব্যারাকটার ছাদ পিটিতে পিটিতে এ-দেশেরই কামিনেরা পিটনী কোপার আঘাতে তাদ~ রাখিয়া এক সঙ্গে গান গাহিতেছে। “್ಲಿ;