পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান বর্ষে বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ শ্ৰীগোপালচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য R রসায়ন কৃত্রিম উপায়ে যৌন-হরমোন উৎপাদন এবং তাহদের রাসায়নিক সংগঠন সম্বন্ধে অপূৰ্ব্ব আবিষ্কারের জন্য অধ্যাপক বৃটেন্যান্ট এবং জুরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈবরসায়নের অধ্যাপক রুজিকা সম্মিলিত ভাবে রসায়নশাস্ত্রে ১৯৩৯ সালের নোবেল পুরস্কার লাভ করিয়াছেন। অধ্যাপক বুটেন্যাণ্টের আবিষ্কার-বিষয়ে পূৰ্ব্বেই আলোচনা করা হইয়াছে। অধ্যাপক রুজিকার আবিষ্কারের বিষয় এস্থলে সংক্ষেপে বর্ণনা করিতেছি। ১৯৩১ সালে অধ্যাপক বুটেন্যান্ট কর্তৃক পুং-যৌন-হরমোন য়্যাণ্ডোষ্টেরন ( রাসায়নিক উপাদান-কাৰ্ব্বন ১৯ হাইড্রোজেন ৩০ অক্সিজেন ২ ) এবং তদনুরূপ অন্যান্য যৌগিক পদার্থ উৎপাদনের পর অধ্যাপক রুজিক অক্লাস্ত পরিশ্রম করিয়৷ ৫০, • • • লিটার মূত্র হইতে মাত্র ২৫ মিলিগ্রাম হরমোন বাহির করিতে সমর্থ হন। তৎপরে তিনি তাহার পরীক্ষাগারে এপি-ডিহাইড্রোকোলেষ্টেরল হইতে কৃত্রিম উপায়ে এই পদার্থ উৎপাদন করিয়া বৈজ্ঞানিক জগতের বিস্ময় উদ্রেক করেন। তিনি কেবল এই পদার্থ উৎপাদন করিয়াই ক্ষাস্ত হন নাই ; ১৯৩১ সালে অধ্যাপক বুটেন্যান্ট য়্যাণ্ডোষ্টেরনের যে রাসায়নিক সংগঠন নিরূপণ করিয়াছিলেন, তিনি এই কৃত্রিম যৌন-হরমোনের রাসায়নিক সংগঠন নিৰ্দ্ধারণ করিয়া বুটেন্যান্টের পরীক্ষালব্ধ ফলের নিভূলত প্রমাণিত করেন। ১৯৩৫ সালে তিনি কোলেষ্টেরল হইতে হাইড্রোআইলো-স্যাণ্ডোষ্টেরন (রাসায়নিক উপাদান-কাৰ্ব্বন ১৯ হাইড্রোজেন ২৮ অক্সিজেন ২) নামে এক প্রকার পুংৰীেন-হরমোন উৎপাদন করেন এবং ইহাকে টেষ্টোষ্টেরনে পরিবর্তিত করিতে সমর্থ হন। এতদ্ব্যতীত তিনি য়্যাণ্ডোষ্টেরন ও টেষ্টোষ্টেরন হইতে আরও এমন কতগুলি শক্তিশালী পদার্থ আবিষ্কার করেন যাহা পুরুষজাতীয় প্রাণীর বৈশিষ্ট্যব্যঞ্জক ফুটি বা তজ্জাতীয় পদার্থ উৎপাদন করিতে স্বাভাবিক পদার্থ অপেক্ষা অধিকতর কার্যকরী বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে । কৃত্রিম উপায়ে যৌন-হরমোন উৎপাদন ব্যতীত পলিটারপিন ও পলিটারপিনয়েড এবং রাসায়ণিক সংগঠন সম্পর্কিত তাহার গবেষণাসমূহ বৈজ্ঞানিক জগতে বিস্ময়ের সঞ্চার করিয়াছে। ভেষজবিজ্ঞান বেলজিয়মের ঘেণ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেষজতত্ত্বের অধ্যাপক কারনেইলি হেম্যান্সকে শারীরতত্ত্ব-বিষয়ক অপূৰ্ব্ব পরীক্ষাকৌশল এবং ভেষজতত্ত্ব-সম্বন্ধীয় অতি মূল্যবান গবেষণার জন্য ১৯৩৮ সালের নোবেল পুরস্কার প্রদান করিয়া সম্মানিত করা হইয়াছে। শরীরের রক্তসঞ্চালন-প্রক্রিয়া কি ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং কি ভাবে জীবনীশক্তি অক্ষুণ্ণ রাখে—বহুকাল হইতেই শারীরতত্ত্ববিদগণের নিকট ইহা একটি মহা সমস্তার বিষয় ছিল। দেহাভ্যস্তরস্থ রক্তবহা-নাড়ীর সহিত যোগাযোগ রক্ষা করিয়া অপূৰ্ব্ব কৌশলে তাই বাহির হইতে নিয়ন্ত্রণ করিয়া তিনি রক্তসঞ্চালন-প্রক্রিয়ার অনেক অজ্ঞাত তথ্য নিৰ্দ্ধারণে সমর্থ হইয়াছেন। শরীরের ভিতরে স্বল্প স্বক্ষ জটিল যন্ত্রসমূহ কি উপায়ে বাহিরের পরিবর্তনের সঙ্গে বাহিক, মানসিক ও আভ্যস্তরীণ সামঞ্জস্য বিধান করে, বহুকাল হইতে বৈজ্ঞানিকের এ বিষয়ে অমুসন্ধান করিয়া আসিতেছেন। তাহাদের অক্লান্ত চেষ্টায় মস্তিষ্কের সৰ্ব্বাধিক বিস্তৃত স্বায়ু ভ্যাগাস এবং কেন্দ্রীয় ভালেমোটরের কার্য্যাবলী সম্বন্ধে পূৰ্ব্বেই জানা গিয়াছিল ;