পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ግwo বাহির হইয়া যায়। এই বিস্ফোরণের ফলে নূতন স্বতোবিকিরণকারী পদার্থের উৎপত্তি ঘটে । কতকগুলি বিভিন্ন অবস্থায় পদার্থের এরূপ রূপান্তর সংঘটিত হইয় থাকে। এই উপায়ে যত রকমের স্বতোবিকিরণকারী পদার্থের উৎপত্তি হয় তাহারা একই নিয়মে বিভিন্ন গতিতে নিজে নিজেই ভাঙিতে থাকে। কাজেই ইহা হইতে পরমাণুর অভ্যস্তরস্থ বিস্ময়কর এক নূতন জগতের সন্ধান পাওয়া গেল, যেখানে অহরহই তাহাদের ভাঙাগড়া চলিতেছে এবং তাহার ফলে বিপুল শক্তি বিচ্ছুরিত হইতেছে। ইউরেনিয়ম, থোরিয়ম ও তাহা হইতে উদ্ভূত অস্তান্ত পদার্থ ব্যতীত সাধারণ অবস্থায় অন্যান্য মৌলিক পদার্থের রূপান্তর ঘটিবার সম্ভাবনা নাই। অর্থাৎ অধিকাংশ মৌলিক পদার্থই চিরস্থায়ী। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে এই স্থায়ী মৌলিক পদার্থগুলিকেও অন্ত পদার্থে রূপান্তরিত করা যায় কি না ইহাই তখন বৈজ্ঞানিকদের গবেষণার বিষয় হইয়া দাড়াইল । কিন্তু এক পদার্থকে অন্ত পদার্থে রূপান্তরিত করিতে হইলে তাহাদের পরমাণুর গঠনপ্রণালী সম্বন্ধে সম্যক্ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, নচেৎ আন্দাঞ্জে কোন পন্থা অমুসরণ করা সম্ভব নহে। এই বিষয়ে গবেষণার ফলে ১৯১১ খ্ৰীষ্টান্ধে লর্ড রাদারফোর্ড পরমাণুর অভ্যস্তরস্থ এক কেন্দ্রীয় পদার্থের অস্তিত্ব অকুমান করেন । বিভিন্ন পরীক্ষা ও গবেষণায় এই অকুমানই অবশেষে সত্য বলিয়া প্রমাণিত হয়। প্রত্যেক পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে ধন-তড়িৎসম্পন্ন ক্ষুত্র একটু কেন্দ্রীয় পদার্থ বিদ্যমান থাকে। তাহার বস্তু-পরিমাণ সমগ্র পরমাণুটির বস্তু-পরিমাণের প্রায় সমান। পরমাণুর আভ্যস্তরীণ অবস্থার বিষয় এক-একটি অখণ্ড সংখ্যা দ্বারা প্রকাশিত হইয়া থাকে। তাহার কেন্দ্রীয় পদার্থে আকুপাতিক কত ইউনিট ধন-তড়িৎ রহিয়াছে তাহাই ঐ সংখ্যা দ্বারা বুঝিতে পারা যায়। হাইড্রোজেনকে এক ধরিয়া ক্রমশঃ ইউরেনিয়ম পৰ্য্যস্ত ৯২ সংখ্যা এই রূপেই নিৰ্দ্ধারিত হইয়াছে। কাজেই দেখা যাইতেছে কোন একটা পরমাণুকে , রূপান্তরিত করিতে হইলে তাহার তড়িতাবেশ বা বস্তুབ། སེམས་ཞུས།། উভয়কেই অথবা যে-কোন একটিকে পরিবর্তন ●वंदांशैौ ులి8y করিতে হইবে। অথচ কেন্দ্রীয় পদার্থ বিপুল শক্তি দ্বারা পরমাণুর সহিত আবদ্ধ। যদি ইহা অপেক্ষ বিপুলতর শক্তি সংহত করিয়া তাহার উপর প্রয়োগ করা যায় তবেই অভীষ্ট ফল লাভের সম্ভাবনা। এরূপ বিপুল শক্তি সংহত করিয়া প্রয়োগ করিবার কৌশল এত দিন বৈজ্ঞানিকদের অজ্ঞাত ছিল । বিশেষতঃ সুন্নাতিসূক্ষ্ম পরমাণুর অভ্যন্তরে ধাক্কা দিয়া কেন্দ্রীয় পদার্থকে বিপর্য্যস্ত করিতে তদনুরূপ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ঢিলেরও প্রয়োজন। স্বত:বিকিরণকারী পদার্থ হইতে বিক্ষিপ্ত স্বক্ষাতিসূক্ষ্ম বেগবান আলফা-কণিকাই এই উদ্দেশ্বে ব্যবহৃত হইতে পারে বলিয়া স্থির হইল। যদি স্বতোবিকিরণকারী পদার্থ হইতে ংখ্য জাল্ফ-কণিকা প্রচণ্ডবেগে অনবরত ইতস্তত: এক থণ্ড পাতলা ধাতবপত্রের উপর আঘাত করিতে থাকে, তবে কোন একটি কণিকা পরমাণুর অভ্যন্তরস্থ কেন্দ্রীয় পদার্থের গা ঘেষিয়া চলিয়া যাইবার সময় তাহাকে ভীষণ ভাবে আলোড়িত করিয়া বিচ্ছিন্ন করিতে পারে অথবা দুই-একটি কেন্দ্রীয় পদার্থের অভ্যস্তরে প্রবেশ করিতেও পারে। প্রকৃত প্রস্তাবে বৈজ্ঞানিকেরা এই অকুমানের উপর নির্ভর করিয়াই পরীক্ষার ফলে আশ্চৰ্য্য সফলতা অর্জন করিলেন । ১৯১৯ সালে লর্ড রাদারফোর্ড আলফাকণিকার সাহায্যে নাইট্রোজেন গ্যাসকে অন্ত পদার্থে পরিবর্তন করিতে সমর্থ হন। আলফা-কণিকা নাইট্রোজেন পরমাণুর কেন্দ্রীয় পদার্থে প্রবেশ করিয়া তাহার সহিত সংযুক্ত হয় এবং একটি অস্থায়ী কেন্দ্রীন স্বষ্টি করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাহা ভাঙিয়া দ্রুতগামী প্রোটন-কণিকা নির্গত হইতে থাকে এবং গ্যাসকে অক্সিজেনের ১৭ সংখ্যক স্থায়ী আইসোটোপে রূপান্তরিত করে। এই উপায়ে প্রায় ভজনথানেক হাল্কা পদার্থকে রূপান্তরিত করা সম্ভব হইল । এক পদার্থ অপর পদার্থে রূপান্তরিত হইবার সময় কেন্দ্রীয় পদার্থের বিস্ফোরণের ফলে প্রোটন-কণিকা জিঙ্কসালফাইডের পর্দার উপর আঘাত করিলে ক্ষুদ্র আলোকবিন্দুর উৎপত্তি হয়। কতগুলি প্রোটন-কণিকা নির্গত হইল, এই আলোক-বিন্দু গণনা করিয়াই তাহা জানা যাইতে পারে। বর্তমানে অবগু অতি উন্নত ধরণের ংক্রিয় ধন্থসাহায্যে এই সংখ্যা-গণনা নিম্পন্ন হইয়া থাকে।