পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী 寮 Yegs যৌবনে দ্বিজেন্দ্রনাথ ছড়ার মতো যে-সব কবিতা লিখে গেছেন সেগুলি বাংল। ভাষায় একটি অপূৰ্ব্ব জিনিষ। নমুনাস্বরূপ ল বর্ণের দুই ছত্র এখানে উদ্ধৃত করা হ’ল— শিল্পীবধু ফুলকুমাৰী আলত পরি পায় কঞ্চ পেড়ে হলদে সাড়া বাগিয়ে পরে গায় যেই শুনিল পান্ধী এল অমনি তাড়াতাড়ি ভেস্কিবাজী দেখতে পেল বেলফুলের বাড়ী । S. ছড়ার আকারের সেই কবিতাগুলি তিনি যে কত বাণু কত রকমে পরিবর্তন করেছেন বলে শেষ করা যায় না | শেষ পর্যন্ত তার এই শখ মেটে নি। তিনি রেখাক্ষর সম্পূর্ণ করে যেতে পারেন নি। ভবিষ্যতে হয়ত সেগুলি কাজে লাগতেও পারে যদি কেউ বাংলায় সাঙ্কেতিক অক্ষরের প্রচলন ও উন্নতি করতে চান । শ্বশুরমহাশয়ের বালকোচিত স্বভাবের বহুল দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। এখানে দু-একটির উল্লেখ করি । হঠাৎ হুলুস্থল হাঙ্গামা, চেচামেচি, গোলমালের শব্দ শোনা গেল। চাকররা ছুটোছুটি করছে, শ্বশুরমহাশয়ের চশমা পাওয়া যাচ্ছে না । তলব এল আমার কাছে, বাবামশায় ডাকছেন শীঘ্র আস্থন, তাড়াতাড়ি গিয়ে দাড়ালুম সামনে । দেখেই বললেন, চাকরদের কাণ্ড দেখ বেীমা, আমার জিনিসপত্তর কিছুই গুছিয়ে রাখবে না, সামলাবে না কোনো কিছু, কেবল উপরের দিকে চোখ তুলে শিবনেত্র হয়ে ঘুম লাগাবে। টেবিলে হাত ঠুকছেন আর বলছেন আমার চশমাটা কোথায় গেল হাতড়ে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না, বল তে এখন আমি কি করি, কি ক’রে লিখি, কি ক’রে পড়ি, চশমা নইলে আমার এক দণ্ড চলবে না । চাকরদের কাগু—দামী চশমাটা আমার হারিয়ে ফেলল, খোজ তো তুমি এক বার যদি পাও। কাগজপত্তর থাত ইত্যাদি উণ্টে পাণ্টে অনেক খোজা গেল, কোথাও চশমা নেই । শেষে বাবামশায়ের মুখের দিকে চেয়ে দেখি, চশমা তার চোখেই লাগানো রয়েছে। সেদিকে কারো নজর পড়ে নি এতক্ষণ, তারও সেটা খেয়াল ছিল না। মাথা ইেট করে বললুম, বাবামশায় চশমা আপনি চোখেই পরে আছেন । তাই নাকি—ব’লে হাত দিয়ে চশমাটা ঠিক জায়গায় রয়েছে দেখে উচ্চৈঃস্বরে হাসি আরম্ভ কবুলেন। হাসির চোটে ঘণ্টাব্যাপী চেচামেচির ঝাজ মুহূৰ্ত্তে কপূরের মতো গেল উবে । খুশির হাস্কা হাওয়ায় ঘর উঠল ভরে। বললেন, আচ্ছ, যা হোক ! তোমাকে ব্যস্ত করে তুললুম, যাও সংসারের কাজকৰ্ম্ম দেখ গে। যাই হোক তুমিই তো শেষ পর্যাপ্ত চশমাটা খুজে বার করলে—ব’লেই আবার হাসি। ভোরে স্নান করা তার চিরদিনের অভ্যাস ।