পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনিয়াদী ঘর ঐসীতা দেবী অনন্ত গুহু যখন জন্মগ্রহণ করে, তখন গুহ-বংশের অচলা লক্ষ্মী রীতিমত চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছেন। এককালে দেশে তাঁহাদের বংশের খ্যাতি এবং ধনের থ্যাতি সমানই ছিল, কিন্তু অনন্তের পিতামহ নান৷ প্রকার লাভজনক ব্যবসায়ের ফন্দি করিয়া বিস্তর টাকাকড়ি লোকসান করিয়া বসেন। র্তাহার পুত্ৰ আদিনাথ আবার হইলেন অতি হিসাবী । যেখানে এক পয়সা খরচের প্রয়োজন তিনি সেখানে আধ পয়সা খরচ করিতেন। কিন্তু এত করিয়াও ভাঙ্গন-ধর কুল রক্ষা পাইল না। অনন্ত বড় হইয়া দেখিল তাহার পারিবারিক সম্পত্তির মধ্যে ভাঙা বসতবাড়ী, সামান্য কিছু জমিজায়গা, এবং বিপুল বংশমর্ধ্যাদা । অনস্তের মা এই ভাগ্যবিপৰ্য্যয়ে একেবারে ভাণ্ডিয়া পড়িবার মত হুইলেন । যে ঘর চিরদিন দাসদাসীর কলরবে মুখরিত, আজ তাহা নীরব । র্তাহাকে নিজের কাজ নিজে করিতে হয়, সারা দিন ছেলে ট্যাকে করিয়া ঘুরিতে হয়, ইহাতে র্তাহার অশাস্তির শেষ ছিল না। এই অশাস্তির ভাগ স্বামীকেও দিতে তিনি ক্রটা করিতেন না । কিন্তু আদিনাথ সহজে বিচলিত হইবার পাত্র ছিলেন না। তিনি কেবল হাসিয়া বলিতেন, “গিল্পী, যে ছেলে বইতে এত কাতর হচ্ছ, সেই ছেলেই আবার লক্ষ্মীকে বয়ে আনবে। ওর কুষ্ঠা দেখলে না ? ওকে ভাল করে মাজুব করতে পারলে আর ভাবনা নেই।” অনন্তকে মাহুৰ করিতে চেষ্টা যথেষ্টই করা হইল। তাহার মায়ের দু’চারখানা গহনা যাহা ছিল, তাহ বিক্রয় করিয়া বাড়ী বাধা দিয়া তাহার কলিকাতায় পড়িবার খরচ জোগান হইল। ভবিষ্যতে এই ভাঙা बाँध्नौब दशरण नूठन बाक्लौ ७वर भांcब्रब झठांब्रथांना গহনার বদলে এক গা গহনা ষে তাহাকে নিজের কতিত্বে গড়িয়া তুলিতে হইবে, সে-বিষয়ে অনম্ভের সন্দেহ ছিল না। পড়াশুনা খাওয়া এবং ঘুমানোর অবকাশে টাকা রোজগারের কত ফন্দিই যে তাহার মাথায় ঘুরিত তাহার ঠিকানা নাই। ছুটিতে বাড়ী আসিলেও, মায়েপোয়ে কেবল এই আলোচনাই হইত। মা বলিতেন, “এই তুই বি এ, ট। পাশ করে নেন। তথন দেখিস, কেমন ঘর থেকে বউ জানি । সমস্ত বাড়ী সাজিয়ে আসবাব, মেয়ের গা সাজিয়ে গহনা, আর থলি ভরা টাকা ষে বাপে দিতে না পারবে, সে যেন আমার ছেলের দিকে না তাকায় ।” ছেলে বিনয় কুরিবার চেষ্টা করিয়া বলিত, “স্থা, তোমার ছেলের জন্তে কে এত দিতে যাবে ? ভারি ত বি-এ পাশ । আজকাল কলকাতার এক গলিতে দশবারোটা করে বি-এ পাশ বসে থাকে।” মা বলিতেন, “তা না হয় আছে, কিন্তু সকলের বংশ কি তোদের মত ? এ বংশে একটা ছেলে জন্মানোও যা, ব্যাঙ্কে দশ হাজার টাকা থাকাও তা। এর কম নিয়ে এ বাড়ীতে কোনো বউ আসেনি জানিস্ ? তোর দাদামশায়ের ব্যবসা ফেল পড়ল কিসে ? অামার বিয়ে দিতে গিয়ে না ? কিন্তু এর জন্তে একটা হায় হতাশ মুখ দিয়ে কখনো কেউ শোনে নি তার। কাজের মত কাজ করে গেছেন।” অনন্ত মায়ের কথা বিশ্বাস করিত। কাজেই নিজেকে বহুমূল্য সম্পত্তি জ্ঞান করা তাহার অভ্যাস হুইয়া গেল। বি-এ পাশ যথাসময়েই সে করিল। তখন মাত৷ মহালক্ষ্মী চারিদিকে ঘটক-ঘটকী লাগাইয়া দিলেন। মেয়ের বাপের টাকার থলি যেন তাহার। আগে দেখে, পরে অন্ত সব কিছুর খোজ। বাংলা দেশে কনের দুর্ভিক্ষ কোনদিনই নাই, যেমন ফরমাস কর, কোথাও-না কোথাও পাওয়া যাইবে। কাজেই ধনবান কস্তার পিতার সন্ধান অনেকই মিলিতে লাগিল ।