পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা 1 बनेिश्ननिौ वनं ২৭১ শয়নকক্ষে ঢুকিয়া দেখিলেন স্বামী গম্ভীর মুখে শুইয়া আছেন। একটা কিছু অশুভ আশঙ্কা করিয়া মহালক্ষ্মীর বুক কঁাপিয়া উঠিল। তাড়াতাড়ি কাছে গিয়৷ জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি গো, অমন করে শুয়ে পড়লে ষে ’ আদিনাখ বলিলেন, “শুনলেই ত চেচিয়ে পাড়া মাথায় করবে। কিন্তু আমি বলি লোকের কাছে নিজেদের বোকামী প্রকাশ করে লাভ নেই, চেপে যাওয়াই ভাল।” মহাগী ব্যস্ত হইয়। বলিলেন, “কি হয়েছে তাই, বল না আগে ।” আদিনাথ বলিলেন, “পনের টাকা পাইনি।” মহালক্ষ্মীর আপাদমস্তক যেন জলিয়া গেল। চীৎকার করিয়া বলিলেন, “তবে ও উমুনমুণী বেী নিয়ে এলে কি করতে ? বর উঠিয়ে আনতে পারলে না ?” আদিনাথ বলিলেন, “কই আর পারলাম ? কনের বাপের অস্থখ, হাতে ধরে কাদতে লাগল, তিন মাসের মধ্যে টাকা দেবে প্রতিজ্ঞা করল। না যদি দিতে পারে, মেয়ে নিয়ে যাবে, আমরা ছেলের আবার বিয়ে দিতে পারব, একথা শুদ্ধ নিজের মুখে বললে। কি আর করি, নেহাৎ কশাইয়ের মত ছেলে তুলে আমৃতে পারলাম না। বড় বংশের চাল বজায় রাখতে গেলে অনেক সময় ঠকভেও হয় ৷ গহনা দানসামগ্রী যা দেবে বলেছিল, তা ঠিকই দিয়েছে।” মহালক্ষ্মী চড়া গলায় বলিলেন, “তুমি দানসামগ্ৰী নিয়ে ঘুরে খেও । বেটার বউ এক গা গয়না পরে বেড়াবে, দেখে ত আমার সর্বাঙ্গ জুড়িয়ে যাবে। হাতের শাখা বাদে আর সব বেচে ছেলেকে পড়িয়েছি, ভেবেছিলাম ছে.ো মামুষ হলে সব হবে। কিন্তু এমন বোকা তুমি ! ছিঙ্গি, আমার গলায় দড়ি দিতে ইচ্ছে করছে। ঐ মিথুক, জোচ্চোরের বেটীকে আমি কালই বাট মেরে বিদায় করে দেব।” আদিনাথ একটু যেন বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “এত তাড়া কিলের । তিন মাস পরে টাকা না দেয়, যত পার বাট মের এখন। আমি কথা দিয়ে এসেছি, কথা রাখতে হবে।" MAeeAMAeAA AM S AAA S AAAAA AAMA Aee eAMAe eAAA AAAA AAAA AAAA AMMMAMAAAA মহালক্ষ্মী বলিলেন, “ওর। কখ। রেখেছে যে আমরা রাখব ?” আদিনাথ বলিলেন, “এ অঞ্চলে আমাদের ব্যবহার দেখে অন্ত সকলে চালচলন শিখেছে, আমরা করে দেখে শিখিনি গু যতই তর্জনগর্জন করুন কৰ্ত্তীর অমতে মহালক্ষ্মী বিশেষ কিছু করিয়া উঠিতে পারিলেন না । মনকষাকষির ভিতর একরকম করিয়া বউভাত হইয়া গেল। বউ নিজের অবস্থা বেশ ভাল করিয়াই বুঝিল, কিন্তু অদৃষ্টের উপর নির্ভর কর ভিন্ন তাহার উপায় ছিল না। বীপের বাড়ী অনেক কান্নাকাটি করিয়া চিঠি লিখিল, তাহারা যেন এবার কথা রক্ষা করেন, না হইলে তাহার ললাটে অশেষ দুৰ্গতি আছে। কিন্তু দুৰ্গতি জিনিষটা অধিকাংশ বাঙালীর মেয়ের ভাগ্যেই জন্মক্ষণ হইতে বেশ অপৰ্য্যাপ্ত পরিমাণে জোটে, নববধু ললিতাও বঞ্চিত হইল না। অনন্ত তাহাকে খুব বেশী যন্ত্রণা না দিক অত্যধিক আদরও কিছু করিত না । যাই হোক, ললিতা তাহার অনাদরট গায়ে তত মাখিত মা । কারণ ইহার মাঝে মাঝে বেশ খানিকট আদর মিশান থাকিত। শ্বাশুড়ীর বাক্যবাণগুলিই হইত সব চেয়ে গুরুপাক, কিন্তু চোখের জল ফেলা ছাড়া বালিকার আর কোনো উত্তর ছিল না । শ্বশুরের সঙ্গে তাহ’র কোনে সম্পর্কই ছিল না। বিনাপণে যে বউ ফাকি দিয়া তাহাদের বনিয়াদী বংশে প্রবেশ করিয়াছে তাহাকে তিনি মনে মনে বউ বলিয়া স্বীকারই করিতে পারিতেছিলেন না, কাজেই নীরবে উপেক্ষা প্রদর্শন করা ভিন্ন তিনিও আর কিছু করিয়া উঠিতে পরিলেন না । ব্যাপার কিন্তু এইখানেই থামিল না। তিন মাসের পর টাকার বদলে খবর আসিল যে, ললিভার বাবার যায় যায় অবস্থা। টাকা সামনের বছরে তিনি বাচিয়া থাকিলে যেমন করিয়া পারেন দিবেন, সম্প্রতি ললিতাকে যেন দয়া করিয়া একবার পাঠাইয়া দেওয়া হয়, ছোট মেয়েটিকে দেখিবার জন্ত বাপের প্রাণ অত্যন্তই অস্থির হইয়াছে । বলা বাহুল্য র্তাহার দারুণ পীড়ার সংবাদে এ বাড়ীতে শোকের তুফান উঠিল না।