পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓዓ8 প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩৬ [ ২৯শ ভাগ, ২য় খণ্ড জন্ত যার বুকে তুমি ভালবাসা জাগিয়েছ, তার সে ভালবাসার দীপ নিভিয়ে দাও। জীবন নিয়ে সে ষে শোচনীয় খেলা মুরু করেছে, ভুল ভাঙিয়ে তার সে খেলা ভেঙে দাও । তোমার শ্রেষ্ঠ দান যাকে দিলে তাকে স্বর্থী কর । s মাসখানেক পরের কথা। সবে সন্ধ্যা হুইয়াছে । জানালার কাছে দাড়াইয়া শিবপদ বাহিরের কুয়াশার দিকে চাহিয়াছিল। কুয়াশার বেশীর ভাগ ধোয়, তাছাও চিমনির এবং গৃহস্থের উকুন ধরাইবার কয়লার । মাধবী বলিল, “আজ পড়াতে যাবে না ঠাকুরপো ?” “न, श्रांछ वङ् ।” "ও হুঁ, তোমাদের নাইট স্কুলে আরার শুক্রবারে রবিবার হয়। রান্নাঘরে বসবে চল না, গল্প করা যাবে ।” রান্নাঘরের মেঝেতে মাধবী আসন পাতিয়া দিল, শিবপদ বসিল। ভাতের ইড়ি চাপাইয়া দিয়া মাটিতে বসিয়া মাধবী বলিল, “তুমি আমায় ভয়ানক ভালবাস, না ঠাকুরপো ?” শিবপদ হাসিয়া বলিল, “না:।’ “বল কি ? ভালবাস না ?” “ভাল হয়ত বাসি, কিন্তু সেটাকে ভয়ানক বলে মানতে আমি রাজী নই। সে যাক, ভূমিকা কিসের ?” মাধবী বলিল, “ভারি বুদ্ধি তো তোমার ঠাকুরপো, ভূমিকা বলে ঠিক ধরেছ! আমার একটা জিনিষ চাই ।” “কি জিনিষ, পুতুল ।" মাধবী হাসিয়া বলিল, “ই্যা, কিন্তু বেশ বড়সড় আর জ্যাস্ত ।” শিবপদও হাসিল। বলিল, “বুঝলাম।” মাধবী বলিল, “বুঝেছ ? বাঁচলাম। বলতে এমন ভয় করছিল আমার । অৰ্জ্জুনকে গাওঁীব ত্যাগ করতে বলাতে দাদাকেই খুন করতে চেয়েছিল, তোমার আইবুড়োহ ত্যাগ করতে বল্পে বৌদিকে কি করবে ভেবে পাচ্ছিলাম না।” শিবপদ বলিল, “অৰ্জ্জুনের মত আমি গোয়ার নই বৌদি, তোমাকে সন্দেশ খাওয়াবো। আর এক শিশি কবিরাজী তেল কিনে দেব।” “তেল কি করব ?” “তোমার মাথা খারাপ হয়েছে, মাখবে।” “আচ্ছা এনে দিও, মাখবো । কিন্তু তোমার বিয়ের নেমন্তল্পের সন্দেশ না হলে খাব না। অলকা দু-দিন বাদে পরের বাড়ী চলে যাবে, একটি জা না হলে আমার সত্যি চলবে না ভাই।” শিবপদ - বলিল, “সতীন হলে যদি চলে তো এনে দিতে পারি ” মাধবী হাসিয়া বলিল, “বাপ রে, অত বড় সৌভাগ্য । আমার সইবে না, হবেও না। তোমার দাদার অত দয়া নেই। একটি ছোট্ট জ৷ এনে দাও তাতেই চলবে,” বলিয়া হাসি বন্ধ করিয়া মাধবী বলিল, “ঠাট্ট নয় ভাই, ' খুব ভাল একটি সম্বন্ধ এসেছে। উনি দেখে এসেছেন, খাসা মেয়ে, দেবে-থোবেও বেশ । ওঁর ভারি ইচ্ছে এ কাজটা হয়। ঠাকুরপো দাদাটি, আর আমত কোরো না ।” শিবপদ সশব্দে হাসিয়া উঠিল। মাধবী চটিয়া বলিল, “হাসলে যে ” “একটা কথা ভাবছি।” মাধবী জিজ্ঞাস্থ দৃষ্টিতে চাহিল। শিবপদ বলিল, “ঠাকুরপো দাদাটি বলে আদর করার পরেও আমি যখন বলব মত নেই, কোনো দিন মত হবেও না, তখন তোমার মুখখানা কি রকম হয়ে যাবে ভেবে হাসি পাচ্ছে বৌদি। যদিও কান্না পাওয়াই উচিত।” ভাত ফুটিয়া উঠিয়াছিল। গভীরমুখে উঠিয়া গিয়া মাধবী ইড়ির মুখের সরাট সরাইয়া দিল এবং অনাবশ্বক মনোযোগের সহিত সদ্যফোট চাল তুলিয়া টিপিয়া দেখিতে লাগিল সিদ্ধ হুইয়াছে কি না। “রাগ হ’ল বৌদি ” “রাগ নয় ভাই, উনি কথা দিয়েছেন।” শিবপদ আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, “কথা দিয়েছেন । আমায় জিজ্ঞাসা না করেই ?” মুখ ফিরাইয়া মাধবী বলিল, “তুমি যে এখনও এমন