পাতা:প্রবাসী (ঊনত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান জাৰ্ম্মেণীর চিন্তাধারা শ্ৰীগোপাল হালদার (: ) কঁপিয়েনের অরণ্যাণী মধ্যে মেদিনকার শীতপ্রভাত বৰ্ষণমুখর । মিত্ৰশক্তির সেনাপতি মাশাল ফল্‌ জাৰ্ম্মাণ সন্ধিদূত্দিগকে যুদ্ধক্ষাস্তির সৰ্বগুলি যখন শুনাইলেন, তপন সন্ধিপ্রার্থী শাস্তি প্রত্যাশী জাৰ্ম্মাণ দৃতগণ শিহরিয়া উঠিলেন, উদ্বেগ ও বিষাদে ঠাঙ্গাদের মৃগ অন্ধকারাচ্ছন্ন হুইল । জেনারেল ফন ভিনটেয়ারফেল্ট-এর মূখ পাংশু হুইয়া গেল, তাহার চোখ জলে ভরির উঠিল। শাস্তম্বরে মাশীল ফস্ কহিলেন, “এই সত্ত্বসমূহ আপনার বিবেচনা করিয়া দেখুন—বাহাত্তর ঘণ্টা পরে আমি আপনাদের উত্তর শুনিব।” জাৰ্মাণদূত এয়ার্টুস্বের্গেয়ার কাতরকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, “বিধাতার নামে কহিতেছি, মসিয় লা মারেশাল । আর বাহাত্তর ঘণ্ট। দেরী করিবেন না, আজক্ট যুদ্ধ ক্ষাস্ত করুন । আমাদের সৈন্যগণ উচ্ছ স্থল, বলশেভিক্ৰবাদ আমাদের চুয়ারে আসিয়া পড়িয়াছে—সেই বিভীষিকা বুঝি জাৰ্ম্মেণীর বুকের উপর দিয়া ফ্রান্সে আসিয়া পড়ে ?” শাস্ত, কঠিন কণ্ঠে উত্তর হইল, “আপনাদের সৈন্যগণ কি অবস্থায় আছে তাঙ্গা আমি জানিতে চাহি না ।” আমি জানি আজ আমার সৈন্তবর্গের সম্মুখে কি রহিয়াছে। আমার পক্ষে এই আক্রমণ হইতে এই সময়ে নিরস্ত হওয়া অসম্ভব । আমি বরঞ্চ দ্বিগুণ বলে শত্ৰ-আক্রমণের ও শক্র-অকুসরণের আদেশ দিতেছি।”-—বাহাত্তর ঘণ্ট। পরে এফেল টাওয়ারে জাম্মাণ বেতারবার্তা শোনা গেল--"জাৰ্ম্মাণ সরকার ৮ই নভেম্বরের সর্ভগুলিতে স্বীকৃত হইলেন।” প্রত্যুষ সাড়ে পাচটায় হতাশ জাৰ্ম্মাণ দূতগণ কঁপিয়েনের বনমধ্যে সেই নিদারুণ যুদ্ধবিশ্রামের পত্রে স্বাক্ষর করিয়া স্বদেশে প্রস্থান করিলেন, বেলা এগারটায় কামানের ধ্বনিতে মহাযুদ্ধের অবসান বিঘোষিত হইল। তারপর হৃতবল সৰ্ব্বস্বহার ১৯১৮ পুষ্টাব্দের ৮ই নভেম্বর । জাৰ্ম্মেণী ভেসর্ণ এ’র সন্ধিসভায় ভিক্ষুকের বেশে রুপাগ্রার্থী হইয়। মিত্ৰশক্তির সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল, ১৯১৯ সনের ২৮শে জুলাই জাৰ্ম্মাণ প্রতিনিধিগণ জাৰ্ম্মেণীর মুস্তু দণ্ডে স্বাক্ষর করিয়া ফিরিয়৷ আসিলেন, সমগ্র জগৎ নি:সন্দিগ্ধভাবে জানিল মিত্রশক্তির কঠোর শপথ অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণ হষ্টয়াছে—"ডেলেণ্ড এই কার্থেগো”—পুথিবীর পট হইতে কার্থেজের মতই জাৰ্ম্মেণীর নাম ও মুছিয়া গেল। দশ বৎসর পরে আজ আবার পুথিবী দেখিতেছে ভেসা এ’র চিতাভস্ম হইতে নবকান্থি, নবদেহ লইয়। আর এক জাৰ্ম্মেণী উঠিয় দাড়াইতেছে—“বৰ্ত্তমান কালের এই চরমতম পরাজয়ের শেষে, নিদারুণ দারিদ্র্য ও ঋণভার স্বন্ধে বহন করিয়া, বৎসরের পর বংসরের ক্ষুধাতৃষ্ণ, তিক্ততা ও অসহায়তা সহিয়া মাত্র দশ বৎসরের মধ্যে ছয় কোটি মানবসন্তান একমাত্র নিজেদের শক্তি আশ্রয় করিয়া, নির্বান্ধব জীবনযাত্রায় চতুৰ্দ্দিককার বৈরিতা ও বিরোধিতা মাথা পাতিয়া লইয়া, আজ আবার উঠিয়। খাড়া হইয়া দাড়াইয়াছে । জাতির দেহে স্বাস্থ্যস্থলমা ফিরিয়া আসিতেছে, বিস্মিত জগং ত্তfঙ্গর কীৰ্ত্তকে মালিয়। লইতেছে।”* পরাজয়ের বজ্র মাথ৷ পাতিয়া লইতে পারে পুথিবীতে এইরূপ জাতি বেশী নাই । সেই বজ্রাপ্লিতে দগ্ধ হইয়াণ্ড যে জাতি নবকাস্তি লইয়া আবার জীবন-সংগ্রামে যোগদান করিতে পারে, বুঝিতে হইবে বিধাতার কঠিন পরীক্ষায় সে উত্তীর্ণ হইয় গেল। যাহার মধ্যে অমৃতত্বের মন্ত্র নাই, সত্যকারের স্বপ্ন ও সাধন নাই, সে জাতি চিতাভষ্মের তলেই চাপ পড়িয়া যায় ; কিন্তু যাহার প্রাণ আছে, প্রাণের মন্ত্র ও সাধনা যে ভুলিয়া যায় নাই, সে একদিন রাশি রাশি ভস্ম উড়াইয়৷ মৃত্যুহীন মহিমায় আবার দাড়াইয় উঠে। য়েনার যুদ্ধশেষে এমনি শ্মশান

    • Emil Ludwig