পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, a е আমার আশা পূর্ণ হ’ল না ? হবে, একবার-al একবার হবেই। বছর ঘুরিয়৷ গেল, গল্প লেখার টাকা ও বার কয়েক আসিল, কিন্তু জামাকাপড়ও হইল না, পোলাগু মাংসও খাওয়া হক্টল না । লোকে বলে টানাটানি–কিন্তু টানে ত সংসারই, ভারত আর সাবিত্রী টানিতে অবসর পায় কষ্ট ? শচীনের হইল টাইফয়েড । এখনকার মত ত ডাক্তার ওষুধপথ্য সবই যোগাইতে হইবে, পরে না হয় দাদা য। হয় দিবেন । অভাব আর বোগে এতদিনে ওদের সংসারটার বেশ রং ধরিয়াছে । এমনি একদিনে প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড ভারত রাত্রে থাইতে বসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কি করে চলবে ? সাবিত্রী হাসিয়া বলিল, তুমি গল্প লিখবে আর আমি সেলাই করব । আমাদের খরচের হিসাব আগে, জমার হিসাব পরে । ভারতও হাসিয়া বলিল, এমনি ক’রে কতদিন চলবে ? সাবিত্রী উত্তর করিল, চলুক না যতদিন চলে । হয়ত ভাল দিন এসে যাবে। আমার আশা মরে নি । ভারত অবিশ্বাসের সুরে বলিল,—হু । বন্যার ধংসলীলা শ্ৰীরেবতীমোহন লাহিড়ী, এম-এ, ( হিন্দুসভার প্রতিনিধির বর্ণন ) মোহনপুর হইতে দিলপসার পর্যন্ত নৌকা ভাসাইয়া দিয়া যে বর্ষাকালে উত্তর বঙ্গের শোভা সন্দর্শন করে নাই, সে স্বজলা স্বফল৷ শহুখোমল। বঙ্গদেশের শো ভ। দেখে নাই বলিলেই হয় । গজ দুই বৎসর হইল এদেশের কৃষকমণ্ডলী অর্থাভাবে তিল তিল করিয়া মরণের পথে অগ্রসর হইতেছিল–গত আষাঢ়ে আফুরপ্ত ধানভর ক্ষেত দেখিয় তাহাদের মন উৎফুল্প হইয়া উঠিল—সে কেবল ক্ষণেকের জন্ত । তারপর নটরাজের তাণ্ডবনৃত্য আরম্ভ হইল—মহাপ্লাবনে তাহাদের ঘরবাড়ি শস্ত সমুদয় বিনষ্ট হইয়া গেল । বস্তার তাড়নে এদেশের গৃহস্থের যে কি দুৰ্দ্দশা হইয়াছে তাহা স্বচক্ষে না দেখিলে বিশ্বাস কর কঠিন হষ্টয়া পড়ে—এই দুঃখের ছবি অতিরঞ্জিত বলিয়া মনে হয় । আগে যেখানে নয়নভুলানো স্যামশোভা ছিল, এখন সেখানে দুর্ভিক্ষের করাল ছায়৷ ধীরে ধীরে আত্মপ্রকাশ করিতেছে, সুবিস্তীর্ণ প্রাস্তর ব্যাপিয়া শস্যরাশির চিহ্নমাত্র বিলুপ্ত করিয়া ধূসর জলরাশি থৈ থৈ করিতেছে—কি ভয়ঙ্কর সে দৃশ্ব ! আজ পনর দিন হইল বঙ্গীয় হিন্দুসভার তরফ হইতে মোহনপুর কেন্দ্রের গ্রামগুলি পরিদর্শন করিয়া প্রকৃতির যে ধ্বংসলীল দেখিতে পাইতেছি, তাহার আংশিক আভাস মাত্র সহৃদয় দেশবাসীর সম্মুখে উপস্থিত করিতেছি । আর্ভের কাতর নিবেদন, অন্নহীন বস্ত্রহীনের করুণ ক্ৰন্দন কি তাহাদের প্রাণে পোছিবে ন-ভগবান যেখানে বিরূপ হুইয়া তাহার মঙ্গলময় হস্ত অপসারণ করিয়াছেন ? এখন বাড়ির উপর হইতে বন্যার জল নামিয়। গিয়াছে। যাহার অন্যত্র আশ্রয় লইয়াছিল তাহারা ধীরে ধীরে এখন বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করিতেছে । ধ্বংসাবশিষ্ট পরিত্যক্ত বাড়িঘরের অবস্থা এখন শ্মশানের আকার ধারণ করিয়াছে । ভগ্ন হাড়ি, জীর্ণবংশদগু, কাথা, মৃন্ময় তৈজসপত্র ইত্যাদি ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত পড়িয়া আছে । ঘরের মেঝের মাটি ধুইয়া গিয়াছে। পর্ণকুটার বন্যার স্রোতে কতক ভাসিয়া গিয়াছে, যে দু-এক খানি অবশিষ্ট আছে তাহাও কোনরূপে দাড়াইয়া ধ্বংসলীলার সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। অনেক বাড়িতে দেখিলাম গৃহস্থ