পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbو8V আছে। আমার স্বভাব দেশের প্রচলিত ধারার সঙ্গে ছন্দ মেলাতে পারেনি। যাদের আমি বন্ধুভাবে গণ্য করেচি, হঠাৎ দেখি আমার সম্বন্ধে তাদের প্রতিকুলত নিদারুণ ভাবে তীব্র হয়ে উঠেচে । বুঝতে পারি আমি যেখানকার লোক সেখানকার সঙ্গে আমি বেখাপ। এক জায়গায় এরা আমার কাছাকাছি এসে হু চট খেয়ে পড়ে—সেট। আমার স্ব ভাবের দোষে, না তাদের চলনের ক্রটিতে সে তর্ক ক'রে কোনো লাভ নেই—এবং তর্কে জিভঙ্গেও কোনো সাত্বনা নেই। বাল্যকাল থেকে তুমি যে-সব বাংলা বই পড়েচ তোমার চিত্ত এবং রুচি ষে সাহিত্যরসে সাড়া দিতে অভ্যস্ত তোমার চিঠিতে তারও বিবরণ দেখলুম। তুমি নিশ্চয় এট দেখেচ আমাদের সাহিত্যে দীঘকাল ধরে নানাপ্রকার সমালোচনার আমি লক্ষ্য কিন্তু আমি পারতপক্ষে সমালোচনার আসরে কলম হাতে নিয়ে নামিনে । নিজেকে একঘরে ক'রে নিয়ে থাকাই আমার পক্ষে আরামের ও নিরাপদ । নিশ্চয়ই দেখবে সাহিত্যক্ষেত্রেও তোমার সঙ্গে আমার স্বরের মিল হবে না। নিশ্চয় জেন, সাহিত্যের দিক থেকে তোমার লেখায় বারে-বারে আমাকে প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৮ [ ex* छां★, २ग्न १७ বিস্মিত ও আনন্দিত করেচে। কিন্তু সাহিত্য বিচারবুদ্ধিতে তুমি যে প্রশস্ত আদর্শ পেয়েচ ত৷ আমি মনে করিনে। না পাবার প্রধান কারণ, বাংলা সাহিত্যকে তুমি বাংলা সাহিত্যের বাহির থেকে দেখতে পাওনি। যুরোপীয় সাহিত্যের মধ্যে বিশ্বসাহিত্যের ধে প্রকাশ আছে ঘটনাক্রমে তার পরিচয় তোমার কাছে নেই। অথচ আধুনিক বাংলা সাহিত্য ষে-ভিতের উপর বাসা ফাদচে সে ভিখট যুরোপীয়। তার গল্প, তার কাব্য, তার নাটক, প্রাচীন রীতির আশ্রয়ে তৈরি হয়নি—সেই কারণেই যুরোপীয় সাহিত্যবিচারের আদশে তাকে বিচার করা ছাড়া অল্প পন্থা নেই। সংস্কৃত অলঙ্কারশাস্ত্রের নির্দেশ এখানে খাটবে না। এত বড় চিঠি লেখা আমার পক্ষে অত্যন্ত দুঃসাধ্য। কিন্তু ষে আমাকে সত্যই বুঝতে চায় সে আমাকে পাছে ভুল বুঝে অস্থানে অধ্য আহরণ করে এটাতে আমার একান্তু অনভিরুচি ব’লেই এতটা লিখতে হ’ল। হয়ত কিছু অহঙ্কারের মত শোনাচ্ছে কিন্তু নিজের সম্বন্ধে আমার ধারণা যদি অহঙ্কত ধারণাই হয় সেটাও প্রকাশ ইতি ৩০ বৈশাখ ১৩৩৮ | শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হওয়াই ভাল ।