পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] নিৰ্ম্মল ঘন নীল আকাশের গায়ে বিরাট কঠিন বন্ধুর পাহাড়ের কেল্লার গম্ভীর রূপ জলিয়া উঠিল । দেগিব|মাত্র জয়পুরের সহিত ইহার পার্থক্য বুঝা যায়। জয়পুরের স্থাপত্যে হাল্কা সূক্ষ্ম কাজের ও আধুনিক পালিশের ছাপ বেশী, যোধপুর এখনও প্রকৃতির কোলে। তাহার রক্তাভ স্থবিস্তীর্ণ পর্বতমালার স্বভাবগম্ভীর বিরাট সৌন্দর্ঘ্যের সহিত কেল্লা ও প্রাসাদের রূপ বেশ মিশিয়া গিয়াছে। পাথরের গায়ে ভারী বাটালির ঘা দিয়া কাটিয়া সব বাহির করা । রং মাখানে নাই। জয়পুরের শিল্পীদের সমস্ত উপকরণই প্রায় যোধপুর যোগাইয়াছে। তাই দেখিলেই বোঝা যায় যোধপুরকে প্রকৃতি র্তাহার বিরাট তুলিকা দিয়া সাজাইয়াছেন। জয়পুর মানুষের সূক্ষ্ম তুলিকার স্পর্শে সজ্জিত। সেখানে প্রকৃতিকে সহজে দেখা যায় না। ষ্টেশনে আসিতেই একগাড়ী মানুষ বালিঢালা প্লাটফরমের উপর বড়মৃড় করিয়া নামিয়া পড়িল । গাড়ীর উপর হইতে তাহাদের হাজার রঙের পাগড়ীতে আলো হাসিয়া উঠিল। যেন মরুভূমির উপর অকস্মাৎ যোধপুর তাহার উপর গোলাপী, &y©ፃ আকাশ হইতে সহস্ৰ পারিজাত বৃষ্টি হইয়া গেল। কেল্লার} উপর ইংরেজী অক্ষরে যদি আলো দিয়া ‘শুভ দীপাবলীর; &featwā ( ‘Auspicious Deepavali Greetings"): লেপা না থাকিত, তাহা হইলে কয়েক শত বৎসর আগে যোধাবাঈয়ের বাপের বাড়ি আসিয়াছি বেশ মনে করিতে পারিতাম । যোধপুরে টাঙ্গ ছাড়া আর কোনো গাড়ী পাওয়া যায় ন} | আমরা এখানেও ষ্টেশনে লগেজ-ক্রমে আমাদের জিনিষপত্র রাখিয়া বেড়াইতে বাহির হইলাম। টাঙ্গার ভাড়া; কিন্তু জয়পুরের ফিটনের চেয়ে বেশী। আর কিছু যখন" জুটবে না, তখন তাহাতেই রাজী হইতে হইল। বারোতেরো বছরের ছোট একটি অনাথ মুসলমান বালক হইল আমাদের চালক ও একমাত্র সহায় । ● যোধপুর ষ্টেশন হইতে শহরে যাইবার রাস্তাটি বেশ চওড়া ; মনে করিয়াছিলাম জয়পুরেরই মত। কিন্তু একটু অগ্রসর হইতেই বিরাট নগর-দরওয়াজ দেখা গেল। এটি পার হইয়া তবে শহরে ঢুকিতে হয়। শহরের ভিতরের রাস্ত ক্রমেই সঙ্গীর্ণ হুইয়া আসিয়াছে।