পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wogo যোধপুরে । প্ৰকতি ও মানুষের মিলন বড় নিকট মনে হয় । মান্তষ যেন শ্রাস্ত প্রকৃতিরই হাতের অসমাপ্ত কাজ শেষ করিয়া আপনি ৪ সেষ্টপানে বিশ্রাম করিতেছে । পথে দুইবার বর্তমান মহারাজ। ফতেসিংকে দূর হইতে ছোট মোটরে দেখিলাম। সাদাসিধা পোষাক, দীর্ঘ বলিষ্ঠ দেহ । ফিরিবার পথে ব্যাঙ্কে টাকা ভাঙানো হইল । টাঙ্গায় বড় রোদ লাগিতেছে দেখিয়া বন্দুকওয়ালা প্রহরী চালককে বলিল গাছতলায় গাড়ীট দাড় কর । আমাদের দেশের পুলিস কি ব্যাঙ্কের প্রহরীকে কেছ এরূপ ভদ্রত করিতে দেখিয়াছে মনে হয় না । হঠাৎ আকাশে দুইটি উড়ো জাহাজ দেখা দিল । আমাদের চালক ক্ষেপিয়া চীংকার জুড়িয়া দিল, “বাবু, বাবু, উড়ন জাগজ দেপিয়ে ।” বালুর একান্ত অল্পৎসাহ দেখিয় বিস্ময়ে বালকের বাকাস্ফষ্টি বন্ধ হইয়া গেল । এগানকার মিউজিয়মের নাম সদার মিউজিয়ম। সুন্দর ঘ্নিতল বাড়িট লাল পাথরে গড়া। বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণে ফুলগাছ ও অন্যান্য গাছ । উটের পিঠে করিয়া আনিয়। বাগানে জল দিতেছে দেখিলাম।-এই মিউজিয়মের রাজপুত চিত্রশালাই উল্লেখযোগ্য । যোধপুরের প্রাচীন রাজার শিল্পের অনুরাগী ছিলেন । কিন্তু এখন এ সব ছবির তেমন যত্ন নাই । পুরাতন প্রাসাদে এই-সব ছবি গুদামে রাশীরুত পড়িয়াছিল। বৰ্ত্তমান অধ্যক্ষ সেখান হইতে যথাসাধ্য উদ্ধার করিয়| আনিয়া মিউজিয়মে রাখিয়াছেন। জয়পুরচিত্রশিল্পের সঙ্গে বাহিরের অনেকট পরিচয় হইয়াছে, অনেক ছবিরক্ট বহুল প্রচার হইয়াছে বলিয়া । কিন্তু যোধপুর-চিত্রকলা এখনও যোধপুরের অস্তঃপুরেক্ট অবগুষ্ঠিত পড়িয়া আছে । অসংখ্য সুন্দর ছবি এপানে গুণীদের দৃষ্টির আড়ালে লুকাইরা আছে। রাজা বগতসিংহ বোপ হয় খুব চিত্রান্তরাগী ছিলেন । র্তাহার রাম পূজা, শিকার গেল, গান শোনা, একক ও সন্ত্রীক কত যে ছবি তাহার সংখ্যা নাই । রাজকুমারীদের পোলো খেল, শিকার করা ইত্যাদির ছবি আছে। যোধপুরের ছবিতে ভূদৃগু ভারি মুন্দর। আমি ছবির পটভূমিতে এত বড় বড় ঘন বাগান, এত রকমের গাছ ও পাতার নকৃলা আর কোনো রাজপুত কি মোগল ছবিতে প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৮ تا پا پدی» وا» i اص دادن l দেগি নাই। হাওয়ার মত স্বল্প ওড়না ও জামা পরা মেয়েদের ছবিতে তুলির কাজ আশ্চর্যা নিপুণ । হাঙ্গোদ্দীপক ছবি অনেক আছে । আপিংখোরের ইদুর শিকার ছবিটি উল্লেখযোগ্য । মেম সাহেবদের সখের দিশী সাজ পরা ছবি মন্দ নয়। বাদশাহ, যোধপুরের রাজবুন্দ, সর্দারগণ, রাণ্ডবংশ, রাজকুমারগণ ইত্যাদির এক এক সারি ছবি সাজানো আছে । নানা যুগের রাজা সর্দার প্রভৃতির বেশভূষা মূগভাব নানা রকমের দেপিতে কৌতুহল হয়। প্রতিরুতি অঙ্কনে যে তখনকার শিল্পীরা দক্ষ ছিল তাহা দুর্গাদাসের শাস্ত উদার মুপ, বীরবলের বাকা ঠোঁটের কোণের মৃদু হাসি, মানসিংহের ধৰ্ব দৃষ্টি এবং জাহাঙ্গীরের বাহপাশে মূরজাহানের সম্মিত মূপ দেখিলে স্পষ্ট বুঝা যায়। রাজকুমারীদের প্রেম-উপাখ্যানের অনেক চিত্র বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সাজাইয়া রাখিবার স্থান নাই বলিয়া অনেক ছবি ভিন হাত লম্ব ও সওয়া হাত উচ্চ এলবামে বন্ধ করিয়া রাপা আছে । ভাঙ্গার দুই তিনটি ছবি উপর হইতে দেখা যায়। রামায়ণ, পঞ্চতন্ত্র, কৃষ্ণলীলা, শিবরহস্য, নাথকথ, পাৰ্ব্বতীর কথা, মহাভারত ইত্যাদির এক একটি স্বতন্ত্র এলবাম । কোষ্ঠীর মত করিয়া পাকানো সচিত্ৰ ভাগবতে খুব ছোট ছোট বিন্দুর মত লেগ এবং তাহারই মাঝে মাঝে রঙীন অতি ক্ষুদ্র ছবি । জাপানী ছবির মত খুলিয়া দেখিলে লেপ ও ছবি সবগুলিতেই শিল্পীর নিপুণ হাতের পরিচয় পাওয়া যায়। মিউজিয়মে এদেশের শেলাই, গালার কাজ, হাতীর দাতের কাজ ইত্যাদি আছে। যোধপুর কাপড় রং করা ও ছাপানোর জন্য বিখ্যাত। তাহারও অনেক নমুনা দেখিলাম। উটের চামড়ার উপর গালার কাজ করিয়া বহু গন্ধ- ও পুষ্পপাত্ৰ তৈয়ারী হয়। সেগুলিও দেখিবার মত। রূপার কাজ সুন্দর । যুদ্ধের সময় ঘি সঞ্চয় করিবার জন্য উটের চামড়ার একটি বিরাট পাত্র দেপিলাম। তাহাতে তিন-চারটি মল্পিষ লুকাইয় রাখা যায়। এদেশে ঘিটাই তখন ছিল আসল খাদ্য । আধুনিক রাজাদের বিলাতী পোষাক পরা বড় বড় তৈলচিত্র দেপিতে ভাল লাগিল না। তাহাদের তুলনায় তাহাদে পূৰ্ব্বপুরুষদের ছবি মীনার কাজের মত জল জল করে। মিউজিয়ম দেখিয়া ষ্টেশনে ফিরিয়াই সাক্ষাৎ হইল