পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や8● পাটলিপুত্র নগর রক্ষা কর। আমি এক বৎসরের মধ্যে মথুরা জয় ক’রে তোমাকে ফিরিয়ে আনব— ধ্রুবা। ছিছিপিত, একথা তোমার অযোগ্য ! তুমি । না ক্ষত্রিয় ? তুমি ন রাজা ? তুমিই না সমুদ্রগুপ্তের পুত্র ? ছি, তুমি এক বৎরের মধ্যে মথুরা জয় করবে ? তুমি রাজা নও, তুমি পুরুষ-নামের অযোগ্য, তুমি দাসীপুত্র। রাম। তোর যত বড় মুখ না তত বড় কথা? ভস্ট্রিল একে বাধ । ভত্রিল হাত তুলিবার পূর্বেই দুইজন প্রতীহার ছুটয় আসিয়া বলিল, “মহারাজ, দেবগুপ্ত, রবিগুপ্ত, রুদ্রভূতি, বিশ্বরূপ প্রভৃতি সাগ্রাজ্যের দ্বাদশ প্রধান মহানায়কবর্গ সমুদ্রগৃহুের দুয়ারে দণ্ডায়মান ।” রামগুপ্ত অতি গম্ভীর ভাবে বলিলেন, “বল, যে জামার সঙ্গে এখন দেখা হবে না, আমার আদেশ ভিন্ন কেহ যেন সমুদ্রগৃহ হ’তে মগ্নগৃহে আসতে না পারে।” প্রতীহারেরা সামরিক প্রথায় অভিবাদন করিয়া চলিয়৷ গেল। তখন ভপ্রিল মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল, “মহারাজ, ধ্রুবদেবী রমণী, আমি কেমন ক’রে র্তার অঙ্গে হস্তক্ষেপ করব ?” রামগুপ্ত উত্তর দিবার পূর্বেই প্ৰতীহার দুইজন আবার ছুটিয়া আসিয়া বলিল, “মহারাজ, অসংখ্য নাগরিক ও পৌরসঙ্ঘের সৈন্য নিয়ে পঢ়মহাদেবী দত্তদেবী মন্ত্ৰগৃহে আসছেন, কেউ তাকে নিবারণ করতে পারছে না।” এইবার রামগুপ্তের প্রাণে ভয় আসিল, তিনি হঠাৎ বুঝিতে পারিলেন যে সিংহাসনে বসিয়া মুকুট ধারণ করিলেই সৰ্ব্বত্র যথেচ্ছাচার করা যায় না। মুখের শিকার পাছে দত্তদেবী কাড়িয়া লইয়া যান, সেই ভয়ে রামগুপ্ত আবার ধ্রুবদেবীকে বাধিতে আদেশ করিলেন । ভক্রিল দ্বিতীয়বার অস্বীকার করিল। তখন হতাশ হুইয়া মহারাজ রামগুপ্ত বলিলেন, “তবে আমিই র্বাধি ।” তখন সাহস পাইয়া ধ্রুবদেবী সিংহাসনের সম্মুখে আসিয়া বলিলেন, “আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না মহারাজ। অভাগিনী অবলা নারীর প্রতি মহারাজাধিরাজের যখন এত অসীম দয়া, তখন আমি স্বেচ্ছায় মথুরায় যাব ।” সহসা মন্ত্ৰগৃহের দ্বারে বধ্ননির্ঘোষের স্থায় শব্দ হইল, "কাকে বাধছ রামগুপ্ত ? মহাদেবী ধ্রুবদেবী কোথায় ?” দীর্ঘকালের অভ্যাসবশত: মহারাজাধিরাজ উঠিয়া দাড়াইলেন। ধ্রুবা ঝড়ের বেগে ছুটয়া গিয়া বৃদ্ধ। দত্তদেবীর বুকের উপর পড়িল, আৰ্ত্তকণ্ঠে ডাকিল, “भा, भ !” দত্তদেবী বলিয়া উঠিলেন, "ধ্রুবা, ধ্রুবা, মা আমার ” রামগুপ্ত বুঝিলেন, হয়ত বা এই মুহূৰ্ত্তেই সিংহাসন হইতে গড়াইয়া পড়িতে হইবে। তখন সমুদ্রগুপ্তের জ্যেষ্ঠ পুত্র তীব্র কর্কশ ভাষায় দত্তদেবীকে বলিলেন, “আপনি কার অহুমতিতে মন্ত্ৰগৃহে প্রবেশ করেছেন ?” রামগুপ্তকে পিছলে রাখিয়া, সিংহাসনকে অভিবাদন করিয়া বৃদ্ধ কছিলেন, “মহারাজাধিরাজ কি আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন ? মহারাজাধিরাজ রামগুপ্ত জানেন, দত্তদেবী কে ?” “আপনি আপনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।” “ওরে কুঙ্কুর, ভুলে গিয়েছিল, কে তোকে ঐ সিংহাসনে বসিয়েছিল ? ওরে দাসীপুত্র, কার সিংহাসনে বসে আছিল তা জানিস্ ? জানিস, আমি তোর মাতার মত্ত সমুদ্রগুপ্তের উপপত্নী নই, আমি পট্টমহাদেবা। আধ্যপট থেকে নেমে আয় ।” "কে আছিল, এই বুড়ীকে বাধ।” সিংহীতুল্য বৃদ্ধ মহাদেবীর অঙ্গে হস্তক্ষেপ করিবার ভরসা কাহারও হইল না। তখন দত্তদেবী আদেশ করিলেন, “পাটলিপুত্র মহানগরে পুরুষ কে আছ?” সঙ্গে সঙ্গে শ্রেণিবদ্ধ হইয়া অগণিত সশস্ত্র নাগরিক মন্ত্ৰগৃহে প্রবেশ করিল এবং সভাকুট্রিম ভরিয়া ফেলিল। আবার আদেশ হইল, “এই কুলাঙ্গারকে আধ্যপট থেকে নামিয়ে বন্দী কর।” বৃদ্ধ নগরশ্ৰেষ্ঠী জয়নাগ, ইজছাতি ও জয়কেশীর সহিত ধ্রুবদেবীর সন্মুখে দাড়াইয়াছিল। জয়নাগ এক লম্ফে আৰ্য্যপটে উঠিয়া রামগুপ্তের হাত ধরিয়া কহিল, *নেমে এস রামগুপ্ত * ইজস্থতি রামগুপ্তের আর এক হাত ধরিয়া টানিতে