পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

а о о প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড TM AAAAAS S SAATSMMAA C A SAS SSAS হাজির হবে। মাঝে মাঝে সেখান থেকে ধ। সঙ্গীতের ধারা ভেসে আসে, তা আমাদের ক্লাবকে হার মানিয়ে দেয় ।” রাজু বাহির হইয়া গেল। প্রতাপ পিসিমার দেওয়া ধুতিখানি ছাড়িয়া সযত্নে তুলিয়া রাখিল, এখনও কয়েক দিন ইহারই সাহায্যে কাজ চালাইতে হইবে। তাহার ধুতি দুখানিতে ঠেকিয়াছিল, একখানি সে পরিয়া চলিল, আর একখানা ধুতি আর একটা পাঞ্জাবী কাগজে জড়াইয়া লইয়া চলিল, ধোপার বাড়ি দিয়া কাচাইয়া লইতে হইবে। এখনও নূতন কাপড়জামা করাইবার মত অবস্থা হইতে দেরি আছে । ক্ষুদ্র উঠানের এককোণে তুলসীতলা, বৌদিদি সেখানে একটি প্রদীপ রাখিয়া, লালপেড়ে শাড়ীর আঁচলখনি গলায় জড়াইয়া প্রণাম করিতেছেন, শম্বের মঙ্গলধ্বনি একবার সান্ধ্য আকাশকে মুখরিত করিয়া মিলাইয়৷ গেল। প্রতাপ চল্লিয়া যাইতে পারিল না, মিনিট দুই দাড়াইয়া এই দৃশ্বট ভাল করিয়া উপভোগ করিয়া গেল।’ বাঙালী ঘরে এই সামান্য চিত্রটুকু তাহার উপবাসী হৃদয়ে যেন স্বর্ণবর্ণেরঞ্জিত হইয়া ধরা দিল । ফিরিয়া আসিতে রাত হইয় গেল। একটু ভয়ে ভয়েই সে ফিরিতেছিল, হয়ত পিসিম বা বৌদিদি বিরক্তভাবে তাহার অপেক্ষা করিতেছেন, দাদাদের হয়ত খাওয়া হইয়া গিয়াছে। মনটা অনেকদিন পরে একটু ভাল ছিল, তাই ঘুরিতে ঘুরিতে সে দেরি করিয়া ফেলিয়াছিল। আসিয়া দেখিল, রাজু তখনও আসে নাই। বৌদিদির রান্না সবেমাত্র শেষ হইয়াছে, তিনি কান্তকে আসন পাতিয়া খাইতে বগাইতেছেন। পিসিমা প্রতাপকে দেখিয়া বলিলেন, “তোর যদি সকাল সকাল খাওয়া অভোস থাকে ত বসে যা কাহুর সঙ্গে। ওদের এখনও দেরি আছে। রেজে। যে কি নিয়মই করেছে, সাড়ে ন’টার আগে কখনও বাড়ি ফেরে না, ততক্ষণ তার জন্তে হাড়ি আগলে বসে থাক।” প্রতাপের হাসি পাইল। সকাল সকাল খাওয়ারই অভ্যাস তার বটে ! একেবারে সকাল সাড়ে ন’টায়। মুখে বলিল, “আমার কোনই তাড়া নেই। মেজন। সেজদার সঙ্গে খাব এখন ।” ঘরে ঢুকিয়া দেখিল বিছানাটিশুদ্ধ পাত, তাহার জন্ত অপেক্ষা করিতেছে। একটা আরামের নিঃশ্বাস ফেলিয়া সে তাহার উপর বসিয়া পড়িল । মানুষের স্বৰ্গ কত অল্পেই, অথচ তাহা হইতেও কত হতভাগ্য বঞ্চিত । 8 পরদিন হইতে প্রতাপের কাজ পুরাদস্তুর আরম্ভ হইল । সকালে প্রাফ দেখা, দশটা হইতে সাড়ে তিনট। স্কুলে পড়ানো, স্কুল হইতে উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটিয়া গিয়া মিহিরকে পড়াইতে বসা । একেবারে সন্ধ্যা হইয়া যাইবার আগে তাহার আর নিঃশ্বাস ফেলিবারও সময় হইল না। তবু তাহার মন ভালই রহিল। খাটিতে তাহার আপত্তি নাই, কিন্তু খাটুনিটা বাৰ্থ হইতেছে এই ধারণাটাই মানুষকে বড় মুঘড়াইয়া ফেলে। সংগ্রাম করিতেই অধিকাংশ মানুষের জন্ম, আরামে বসিয়া থাকার ভাগ্য লইয়া কম মানুষই আসে, স্বতরাং পরিশ্রমে কাতর হইলে চলিবে কেন ? মাসের শেষে গ্রামে যে কয়েকটি টাকা পাঠাইতে পারিবে, মায়ের শীর্ণ মুখে একটুখানি যে নিশ্চিস্ততার হাসি ফুটিয়া উঠিবে, ইহা মনে করিয়াই তাহার সমস্ত পরিশ্রমের ক্লান্তি যেন অৰ্দ্ধেক হইয়া গেল । সেদিন ছিল শনিবার । সুতরাং মিহিরের পড়ানো নিৰ্ব্বিয়েই সমাপ্ত হইল । কোন নৃত্যপরা অঙ্গরার নুপুরধ্বনি আজ প্রতাপের ধ্যানভঙ্গ করিল না। কিন্তু ইহাতে সে স্বর্থী হইল বলিলে হয়ত ঠিক কথা বলা হয় না। মিহিরকে পড়াইয়া সে যখন বাড়ি ফিরিল, তখন তাঙ্গার আর যেন হাটবার ক্ষমতা ছিল না। জলখাবার থাইয়ার্চ সে ঘরে ঢুকিয় একটা মাছর টানিয়া লইয়া শুইয়া পড়িল। রাজুনিয়মমত ক্লাবে চলিয়া গেল এবং গজু ঘরে ঢুকিয়া বিশ্রাম করিতে লাগিল । পিসিমা এ-বেলার রায়ার ব্যাপারে বড় একটা যোগ দেন না, তবে তরকারি কোট, চাল ডাল বার করা, কাল্পকে আগলান প্রভৃতি করেন বটে, তাহাতেই তার সন্ধ্যা কাটিয়া যায়। শুইয়া পড়িয়া একথা সে-কথা ভাবিতে ভাবিতে প্রতাপের একটু অজার মত আসিয়াছিল, এমন সময়