পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিল্পী অৰ্দ্ধেন্দুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ষ্ট্রনীহাররঞ্জন রায় “অবনী-অসিত-নন্দলালকে” কেন্দ্র করিয়া বাংলা দেশে যে-শিল্পিগোষ্ঠীটি গড়িয়া উঠিয়াছিল এবং ভারতীয় চিত্রসাধনার যে নবোম্বোধন যুগের স্বত্রপাত হইয়াছিল, ভাহা আজ সমগ্র ভারতবর্ষে পরিব্যাপ্ত হইয়াছে। সেই শিল্পিগোষ্ঠী ও র্তাহীদের নূতন পদ্ধতি বহু বাধা বহু সংগ্রাম অতিক্রম করিয়া ধীরে ধীরে সমগ্র দেশকে জয় করিয়াছে, দেশের শিল্পচর্চা ও শিল্পসাধনার একটি নুতন ধারার, একটি নূতন দৃষ্টিভঙ্গীর প্রবর্তন করিয়াছে। এই শিল্পিগোষ্ঠীর শিক্ষা ও দীক্ষা লইয়া বাংলা দেশের তরুণ শিল্লিদল সিংহলে, অন্ধ দেশে, মাঙ্গাজে, জয়পুরে, বড়োদায়, গুজরাটে, লাহোরে, লক্লেীয়ে র্যাহার বেখানে গিয়াছেন, বাংলার নবোৰোধিত ভারতীয় শিল্প-পদ্ধতি সেইখানেই তাহার জয়পতাকা উড়াইয়াছে। তাঁহারই ফলে আজ দেশের সর্বত্র জাতীয় শিল্পসাধনায় এক নতন রূপ দেখ। ধাইতেছে, নুতন বাণী শুনা যাইতেছে এবং সৰ্ব্বত্র ইহার মধ্যাদার দাবি স্বীকৃত হইতেছে । আমাদের সদ্যপুপিত জাতীয় জীবনের মূলে কি বাংলার এই নবোম্বোধিত শিল্প-পদ্ধতি ও জাহার সাধনা অলক্ষ্যে প্রাণরসের সঞ্চার করে নাই—জাতীয় জীবনকে কি মহত্তর মধ্যাদা দান করে নাই ? পচিশ বৎসর আগে অবনীন্দ্রনাথ যখন প্রথম প্রাচীন ও মধ্য যুগের ভারতীয় শিল্প-পদ্ধতির অনুসরণ করিয়া জাতীয় শিল্পসাধনার ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করিয়া তুলিবার স্বকঠিন ব্ৰত উদ্যাপন করেন, তখন বাংলার একটি প্রতিভার দুৰ্ব্বার শক্তি এমন করিয়া জয়যুক্ত হইবে, কে তাহ ভাবিয়ছিল ? তারপর দেখিতে দেখিতে নন্দলাল, অসিতকুমার, মুকুলচন্দ্র, সমরেন্দ্রনাথ একে একে সকলে আসিয়া সেই প্রতিভার কাছে দীক্ষা লইলেন, ধীরে ধীরে রূপসাধনার এক নূতন পথ খলিয়া গেল ; বহু সাধনা বহু তপস্যার পর গুরুর সঙ্গে সঙ্গে শিষ্যেরাও প্রতিষ্ঠালাভ করিলেন, দেশ ও বিদেশ উাহাদের প্রতিভা স্বীকার করিল। কলিকাতায় অবনীন্দ্রনাথগগনেন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত প্রাচ্যকলাসমিতি, ও শাস্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত কলাভবনকে কেন্দ্র করিয়া এই নবোম্বোধিত শিল্পসাধনা নৃতন প্রাণে নৃতন উৎসাহে খ্ৰীষ্মদ্ধেষ্ণুপ্ৰসাদ বন্দোপাধ্যায় দীপ্তি লাভ করিল। অবনীন্দ্রনাথের যোগ্যতম শিষ্য নন্দলাল শাস্তিনিকেতন কলাভবনের ভার লইলেন, অসিতকুমার গেলেন লক্ষ্মেী সরকারী কলাভবনের অধ্যক্ষ হইয়া, সমরেন্দ্রনাথ গেলেন লাহোরে শিল্পাধ্যক্ষ হইয়া, মুকুলচন্দ্র গেলেন জাপানে চীনে যুরোপে নুতন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিতে ; আজ তিনিও ফিরিয়া আসিয়া কলিকাতা সরকারী শিল্পবিদ্যালয়ের কর্ণধার হইয়া বসিয়াছেন। অবনীন্দ্রনাথের শিষ্যেরা এই ভাবেই বাংলার নবোম্বোধিত।