পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓሌኃe প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩৮, [ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড নিজের শক্তিতে জয় না করি, ততক্ষণ সে দেশ আপনার নয়। আমরা এই দেশকে আপনি জয় করিনি, দেশকে আপন করিনি। দেশে অনেক জড় পদার্থ আছে, আমরা তাদেরই প্রতিবেশী। দেশ যেমন এই-সব বস্তুপিণ্ডের নয়, দেশ তেমনি আমাদেরও নয়। এই জড়ত্ব— একেই বলে মোহ। ষে মোহাভিভূত সেই তো চিরপ্রবাসী। সে জানে না সে কোথায় আছে। সে জানে না তার সত্যসম্বন্ধ কার সঙ্গে। বাইরের সহায়তার দ্বারা নিজের সত্য বস্তু কখনই পাওয়া যায় না। আমার দেশ আর কেউ আমাকে দিতে পারবে না। নিজের সমস্ত ধন-মন-প্রাণ দিয়ে দেশকে যখনি আপন ব’লে জানতে পারব তখনই দেশ আমার স্বদেশ হবে। পরবাসী স্বদেশে ষে ফিরেচি তার লক্ষণ এই যে, দেশের প্রাণকে নিজের প্রাণ বলেই জানি। পাশেই প্রত্যক্ষ মরচে দেশের লোক রোগে উপবাসে, আর আমি পরের উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে মঞ্চের উপর চড়ে দেশাত্মবোধের বাগবিস্তার করচি, এত বড় অবাস্তব অপদার্থতা আর কিছু হতেই পারে না । রোগপীড়িত এই বৎসরে এই সভায় আজ আমরা বিশেষ ক’রে এই ঘোষণা করচি যে, গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হবে, অবিরোধে একত্ৰত সাধনার দ্বারা । রোগজীর্ণ শরীর কৰ্ত্তব্য পালন করতে পারে না। এই ব্যাধি যেমন দারিদ্রোর বাহন, তেমনি আবার দারিদ্র্যও ব্যাধিকে পালন করে। আজি নিকটবৰ্ত্তী বারোটি গ্রাম একত্র করে রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। এই কাজে গ্রামবাসীর সচেষ্ট মন চাই। তারা যেন সবলে বলতে পারে, আমরা পারি, রোগ দূর আমাদের অসাধ্য নয়। যাদের মনের তেজ আছে তারা দুঃসাধ্য রোগকে নির্মুল করতে পেরেছে, ইতিহাসে তা দেখা গেল । আমাদের মনে রাখতে হবে, যারা নিজেদের রক্ষা করতে পারে না, দেবতা তাদের সহায়তা করেন না । দেবাঃ দুৰ্ব্বলধাতকাঃ । আত্মক্কত, সম্পূর্ণ আকস্মিক নয়। দেবতা এই অপরাধ ক্ষমা করেন না। অনেক মার খেয়েচি, দেবতার কাছে এই শিক্ষার অপেক্ষায় । চৈতন্তের দুটি পন্থা আছে। এক হচ্চে মহাপুরুষদের মহাবাণী। তারা মানবপ্রকৃতির গভীরতলে চৈতন্যকে উদ্বোধিত ক’রে দেন। তথন বহুধা শক্তি সকল দিক থেকেই জেগে ওঠে, তখন সকল কাজই সহজ হয়। আবার দুঃখের দিনও শুভদিন। তখন বাহিরের উপর নির্ভরের মোহ দূর হয়, তখন নিজের মধ্যে নিজের পরিত্রাণ খুঁজতে প্রাণপণে উদ্যত হয়ে উঠি । একান্ত চেষ্টায় নিজের কাছে কি ক’রে আনুকূল্য দাবি করতে হয় অন্ত দেশে তার দৃষ্টান্ত দেখতে পাচ্চি। ইংলণ্ড আজ যখন দৈন্তের দ্বারা আক্রান্ত তখন সে ঘোষণা করেচে, দেশের লোকে যথাসাধ্য নিজের উৎপন্ন দ্রব্যই নিজের ব্যবহার করবে। পথে পথে ঘরে ঘরে এই ঘোষণা যে, দেশজাত পণ্যদ্রব্যই আমাদের মুখ্য অবলম্বন। বহুদিনের বহু অন্নপুষ্ট জাতের মধ্যে যখনই বেকারসমস্ত উপস্থিত হ’ল তখনই দেশের ধন নিরঞ্জদের বাচাতে লেগেছে। এর থেকে দেখা যায় সেখানে দেশের লোকের সকলের চেয়ে বড় সম্পদ দেশব্যাপী আত্মীয়তা তাদের উপরে আনুকূল্য রয়েচে সদাজাগ্রত। তাতে মনের মধ্যে ভরসা হয় । আমরা বেকার হয়ে মরচি অথচ কেউ আমাদের খবর নেবে না, এ কোনমতেই হতে পারে না,—এই তাদের দৃঢ় বিশ্বাস। এই বিশ্বাসে তাদের এত ভরসা। আমাদের ভরসা নেই। মারী, রোগ, দুর্ভিক্ষ, জাতিকে অবসর ক’রে দিয়েচে । কিন্তু প্রেমের সাধনা কই, সেবার উদ্যোগ কোথায়? যে বৃহৎ স্বাখৰুদ্ধিতে বড় রকম করে আত্মরক্ষা করতে হয় সে আমাদের কোথায় ? চোখ বুজে অনেক তুচ্ছ বিষয়ে আমরা বিদেশীর অনেক নকল করেচি, আজ দেশের প্রাণাস্তিক দৈন্তের দিনে একটা বড় বিষয়ে ওদের অল্পবৰ্ত্তন করতে হবে,—কোমর বেঁধে বলতে চাই কিছু স্থবিধার ক্ষতি, কিছু আরামের ব্যাঘাত হ’লেও নিজের গ্রব্য নিজে ব্যবহার করব। আমাদের অতি ক্ষুদ্র সম্বল যথাসাধ্য -- جیسبس۔ • Fম্প । এদে গত্রিমাণ