পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

aసిe প্রবাসী –চৈত্র, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড -- তখন দেবগুপ্ত, হরিগুপ্ত ও রবিগুপ্ত চন্দ্রগুপ্তকে জড়াইয়া ধরিয়া বলিলেন, “কোথা যাবে মহারাজ ?” সজোরে রূঢ়ভাবে বুদ্ধত্রয়ের বন্ধন মোচন করিয়া জগদ্ধর বলিয়া উঠিলেন, “না—না—যথেষ্ট শুনিয়েছেন—আমি আর শুনতে পারছি না—চল কুমার—চল ধ্রুবা।” রবি। পাগলের মত কি বলছ জগদ্ধর ? জগ। সত্যি বলছি, ভট্টারক, হৃদয় ব্যাকুল হয়ে মুগ থেকে সার কথা বার করে দিচ্ছে। বিশ্ব । ক্ষস্তি হও, জগদ্ধর । শোন চন্দ্রগুপ্ত, শাস্ত্রধৰ্ম্ম, দেশাচার রসাতলে যাকৃ—তোমার মন তোমাকে যে সার সত্য দেখিয়ে দিচ্ছে সেই পথে চল । ধ্রুবাকে গ্রহণ ক’রে আর্য্যপটে উপবেশন কর । চন্দ্র । ক্ষমা করুন, আচার্ধ্য। আজ মগধের বিপদ, তাই পাটলিপুত্রের নাগরিক আমার অন্তরোধ রক্ষা করতে প্রস্তুত। কাল বিপদমুক্ত হ’লে সেই নাগরিকের বলবে, গে, সমুদ্রগুপ্তের পুত্র অপরুষ্ট নারীকে সিংহাসনে স্থান দিয়েছে। ভারতের ইতিহাসে রাজধানীর নাগরিক বহুবার এই কাজ করেছে। অযোধ্যার নগরবাসীর অন্তরোধে সীতাদেবী কেবল বনবাসে যান নি, শেষটা পাতালে প্রবেশ করলেন । আচার্যা, রামচন্দ্র দেবত কিন্তু আমি মানুষ । হঠাৎ জয়নাগ চন্দ্রগুপ্তের পদদ্বয় জড়াইয়া ধরিয়া বলিয়া উঠিল, “মহারাজ, দাসের শেষ অঙ্গুরোধ, ইন্দ্রছাতি যতক্ষণ ফিরে না আসে, ততক্ষণ নগর পরিত্যাগ করবেন ন৷ ” “তাই হোক," বলিয়া চন্দ্রগুপ্ত ধ্রুবদেবীকে হাত ধরিয়া আৰ্ষাপট হইতে দূরে উপবেশন করিলেন। দেবগুপ্ত বলিয়া উঠিলেন, "শূন্ত আর্বাপট আর দেখতে পারছি না।” রবিগুপ্ত কহিলেন, “তবে চল আমরাও যাই।” উত্তরে চন্দ্রগুপ্ত হাসিয়f বলিলেন, “কিন্তু তাত, কেউ ত বলতে *ांध्रछ না যে! ধ্রুবাকে পরিত্যাগ করা অধৰ্ম্ম, ধ্রুবাকে অপক্লষ্ট জ্ঞান করা মহাপাপ—অতি ধীর শাস্তভাবে পাটলিপুত্রের নাগরিকের অবিচার শুনে যাচ্ছ। রবি । চন্দ্রগুপ্ত, অবিচার ক’রো না—আমি বলেছি, মহাদেবী শতধার বলেছেন—ষত আপত্তি এই শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণদলের\ । বিশ্ব । মহাপাতক করেছি চন্দ্রগুপ্ত—রুদ্রধরের মত মহাপাতক করেছি—তুষানল আমার প্রায়শ্চিত্ত। তুমি যদি পাটলিপুত্র পরিত্যাগ ক’রে যাও তাহ’লে বিশ্বরূপের অন্ত গতি নাই । এই সময়ে সভামণ্ডপের অলিন্দে অলিন্দে রব উঠিল, “পথ ছাড়—শ্রেষ্ঠা,সার্থবাহুকুলিকনিগম উপস্থিত—নাগরিকগণ— কুলপুত্ৰগণ অবিলম্বে পথ ছাড়।” সকলে বাস্ত হইয়া পথ ছাড়িয়া দিল। আগন্থকেরা মস্তকের উষ্ণীয় খুলিয়া ফেলিয়া চন্দ্রগুপ্তকে বেষ্টন করিয়| জান্স পাতিয়া বসিল । তাহাদের পশ্চাৎ হইতে জয়নাগ বলিয়া উঠিল, “মহারাজ, পৌরসঙ্ঘের অর্ঘ্য এনেছি। পিতা, তুমি মগধের পিতা ; মাতা, তুমি মগধের জননী, সস্তানের অপরাধে ক্ষমা কর । , “পৌরসঙ্ঘ, ফিরে ধাও—আজ মগধের দুয়ারে শত্ৰু, তাই ক্ষমা ভিক্ষণ করতে এসেছ—কাল শত্রু নিবারণ হ’লে বলে বেড়াবে ধে সমুদ্রগুপ্তের পুত্র অপকৃষ্ট নারীকে আধ্যপট্রে বসিয়েছে।” তখন পৌরসঙ্ঘের সকল প্রধান যুবরাজ চন্দ্রগুপ্তের পদতলে মাথ৷ পাতিয়া বলিয়া উঠিল, “আৰ্যা, মহানগর পাটলিপুত্র মুক্ত মস্তকে ক্ষম ভিক্ষা করছে—বুদ্ধের বাচালতা ও নারীর প্রগলভতা পৌরসঙ্ঘের বাক্য বলে গ্রহণ ক'রো'না।” তখন ধ্রুবদেবী দুই হাত পাতিয়া পৌরসঙ্ঘের অর্ঘ্য গ্রহণ করিলেন ; উচ্চ জয়ধ্বনিতে পাষাণনিৰ্ম্মিত সভামণ্ডপ যেন বিদীর্ণ হইল । যে-নাগরিক রামগুপ্তকে হত্যা করিয়াছিল, সে কন্যার হাত ধরিয়া রুচিপতির সহিত অলিন্দে দাড়াইয়াছিল ; জয়নাগ তাহাদের আনিয়া আৰ্য্যপটের সম্মুখে দাড় করাইলেন, চন্দ্রগুপ্ত বলিলেন, “এই তিনজনের বিচার আবগুক দ্বাদশ প্রধান ।” বিশ্বরূপ। যেখানে মহারাজাধিরাজ উপস্থিত সেখানে স্বাদশ-প্রধানের বিচার অনাবশুক । রবি। সামান্ত নরঘাতক হ’লে রাজা বিচার করতে পারেন, কিন্তু এ যে রাজঘাতী। বিশ্ব । কন্যা, কি করেছে ? দেব । আচাৰ্য্য, স্বাদশ প্রধানের আদেশ ভিন্ন বর্ণাশ্রম ধর্মের বিধিনির্দেশ হ’তে পারে না ! বিশ্ব । মহামাত্য রুচিপতি ?