পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సీతీ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড আমাদের এই প্রোগ্রামের মধ্যেই ভোজন চুকোতে হ’ল । মগুপের এক পাশে লম্বা টেবিলে অতিথির ব’ল্লেন-নাচ তাদের সামনেই চলতে লাগল। সমস্ত ক্ষণ গামেলানের বাজনা অবিশ্রাপ্ত চ’লছিল । তিনের আর চারের নাচ আমরা খেতে খেতে দেখতে লাগ লুম। যে মেয়েটি গোলেক্‌ নাচ লাচলে, তাকে আগেকার দু দিনেও দেখেছি ; আজকে তার একার নাচ—সে ভাষায় বর্ণনার অতীত একটী স্বন্দর বস্তু হ’য়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে ঐযুক্ত রাজিমান আর প্রযুক্ত সিঙ্গির মতন ইংরিজিব’লিয়ে দুই উচ্চ-শিক্ষিত যবদ্বীপীয় ভদ্রলোক আমার পাশে ছিলেন, এদের সঙ্গে কথা ক’য়ে অনেক বিষয়ে খবর পাচ্ছিলুম। এরা সত্যি-সত্যি নিজেদের জাতির নাচ আর সংস্কৃতির অন্ত সব অঙ্গ প্রাণের সঙ্গে ভালোবাসেন, ভাই যথাসম্ভব এগুলির রক্ষায় যত্নশীল । খাওয়ার ভোজনতালিকা ইংরিজিতে ছাপানে হয়েছিল—ভার উপরে লেখা—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ংবৰ্দ্ধনার জন্য মঞ্চনগরের গৃহে নৈশ আহারের পদতালিকা। কবির যবদ্বীপের প্রতি কবিভাটীর ইংরেজী আর ডচ অনুবাদ বেশ চমৎকার ভাবে পুস্তকাকারে ছাপানো হয়েছিল, সেই বই সমাগত অতিথিদের মধ্যে বিতরিত হ’ল—কবির আর মঞ্জুনগরের হস্তাক্ষর সমেত : খাওয়ার পরে সকলের ফ্লাশ-লাইট ফটো নেওয়া হল । সমস্ত সন্ধ্যাটীতে বিশেষ ক’রে নান| বিষয়ে মঞ্চনগরের হৃদ্যতার, কবির প্রতি আর ভারতের প্রতি তার প্রগাঢ় শ্রদ্ধার, আর তার রস-তন্ময় চিত্তের পরিচয় পেলুম। নাচ, খাওয়া-দাওয়া সব চুকতে প্রায় সাড়ে এগারোটো হ’য়ে গেল –খালি সন্মানিত অতিথিরাই -ধাকৃবে, আর কারু এই জিনিস দেখবার অধিকার নেই, এ রকম বিসদৃশ জাতি-ভেদের মতন ব্যাপার এদেশে এখনও আরম্ভ হয়নি । বিস্তর ছেলে মেয়ে আর বুড়ে বিরাট মণ্ডপের ধারে, নিমন্ত্ৰিত অতিথিরা যে দিক্‌টায় ছিলেন সে দিকূট বাদ দিয়ে বসে বসে স্বারাক্ষণ ধ’রে এই বর্ণোজ্জল মনোহর ‘দেহের-সঙ্গীত’ cग१ हिल । এই সব নাচে এক একটা পাত্র এ রকম একটা dignity, একটী মহিমা আর গাম্ভীর্ব্যের সঙ্গে তাদের পার্ট ক'রছিল, যে তাতে মহাভারত আর রামায়ণের পাত্রদের বিরাট কল্পনা একটুখানিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল না। ভীম ধিনি সেঞ্জেছিলেন, যিনি মোটেই ভীমকায় নন, তবে তার মুখখানি শ্মশ্ৰীমণ্ডিত ক’রে দেওয়ায় একটু গাষ্ঠীধ্য এনে দেওয়া হ’য়েছিল ; কিন্তু ধীর-মস্থর গতিতে চলাফেরার আর একটু ধীরে ধীরে মাথাটি তুলে সিংহাবলোকন করার ভঙ্গীতে কেমন একটী সহজ-স্বন্দর ভাবে তার চরিত্রের বিশালত্ব আর বীরত্ব ফুটে উঠছিল। বাস্তবিক, এই নৃত্যাভিনয় অপূৰ্ব্ব স্বন্দর বস্তু ; আর এর মূল অঙ্গপ্রাণনা আমাদের প্রাচীন ভারত থেকেই এসেছে, একথা ভেবে, এই জিনিসটা দেখে ধেন আমাদেরই জাতির প্রাচীনের সঙ্গে আমাদের আবার নব পরিচয়