পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Уе е প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড একতালার দালানে বারান্দাতে অনেকবার সে বেড়াইতে, ঘোরাফেরা করিতে দেখিয়াছে বটে । স্বজাতা বলিল—এসো, এসো, বসো । কর । মা কোথায় ? —মা তো অনেকদিন মারা গিয়েছেন । —তুমি বিয়ে থাওয়া করেছ তেী—কোথায় ? অপু সংক্ষেপে সব বলিল । স্বজাত বলিল—তা আবার বিয়ে করনি ? না না, বিয়ে করে ফেল, সংসারে থাকতে গেলে ও-সব তো আছেই, বিশেষ যখন তোমার মা-ও নেই । সে বাড়ির আর মেয়ে-টেয়ে নেই ? অপুর মনে হইল লীলা থাকিলে সে “তোমার মা’ এ-কথা না বলিয়া শুধু ‘মা’ বলিত, তাহাই সে বলে ! লীলার মত আর কে এমন দয়াময়ী আছে যে, ভার জীবনে, তার সকল দারিদ্র্যকে, সকল হীনতাকে উপেক্ষা করিয়া পরিপূর্ণ করুণার ও মমতার স্নেহপাণি সহজ বন্ধুত্বের মাধুর্য্যে তাহার দিকে এমন প্রসারিত করিয়া দিয়াছিল ? স্বজাতার কথার উত্তর দিতে দিতেই এ-কথাটা ভাবিয়া সে কেমন অন্যমনস্থ হইয়া গেল । স্বজাত ভিতরে চলিয়া গেলে অপুর মনে হইল শুধু মাতৃত্বের শাস্ত কোমলতা নয়, স্বজাতার মধ্যে গৃহিণীপণার প্রবীণতাও আসিয়া গিয়াছে । বলিল-আসি ভাই বিমল, আমার আবার সাড়ে দশটায় গাড়ী । বিমলেন্দু তাহাকে আগাইয়া দিতে তাহার সঙ্গে সঙ্গে অনেক দূর জাসিল । বলিল—জার বছর ফাগুন মাসে দিদি এসেছিল, দিন-পনেরো ছিল । কাউকে বলবেন না, আপনার পুরোণে আপিসে একবার আমায় পাঠিয়েছিল আপনার খোজে-সবাই বললে তিনি চাকুরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন, কোথায় কেউ জানে না। আপনার কথা আমি লিখব, আপনার ঠিকানাট দিন না ?. দাড়ান, লিখে নি । এখানে কি দিন এই ভাবেই কাটে । হঠাৎ এক গোলমালের अ८ण cन खप्लिज्र इहेख्न प्रक्लिल । ● মাঘীপূর্ণিমার দিনটা ছিল ছুটি । সারাদিন সে আশপাশের গ্রামগুলা পায়ে ইটির ঘুরিয়া বেড়াইয়াছে। সন্ধ্যার অনেক পরে সে বাসায় জালিয়া শুইবামাত্র ঘুমাইয়া পড়িল । কত রাত্রে সে জানে না তক্তপোযের কাছের জালালাটাতে কাহার যুদ্ধ করাঘাতের শব্দে তাহার ঘুম ভাঙিয়া গেল। শীত এখনও বেশী বলিয়া জানাল। বন্ধষ্ট ছিল, বিছানার উপর বসিয়া বসিয়া সে জানালাটা খুলিয়া ফেলিল । কে যেন বাহিরের রোয়াকে জ্যোৎস্নার মধ্যে দাড়াইয়া ! কে ?...উত্তর নাই । সে তাড়াতাড়ি দ্বয়ার খুলিয়া বাহিরের রোয়াকে আসিয়া অবাকৃ হইয়া গেল—কে একটি স্ত্রীলোক এতরাজ্ঞে তাহার জানালার কাছে দেয়াল ঘেষিয়া দাড়াইয়া আছে । অপু আশ্চৰ্য্য হইয়া কাছে গিয়া বলিল—কে ওখানে ? পরে বিস্মরের স্বরে বলিল—পটেশ্বরী ! তুমি এখানে এত রাত্রে ! কোথা থেকে--তুমি তো শ্বশুরবাড়ী ছিলে, এখানে কি করে— পটেশ্বরী নিঃশব্দে কাদিতেছিল, কথা বলিল না—অপু চাহিয়া দেখিল তাহার পায়ের কাছে একটা ছোট পুটুলি পড়িয়া আছে ; বিস্ময়ের স্বরে বলিল— কেঁদো না পটেশ্বরী, কি হয়েচে বল। আর এখানে এ-ভাবেঃদাড়িয়েও তো—শুনি কি হয়েচে ? তুমি এখন আসছ কোথেকে বল তো ? পটেশ্বরী কাদিতে কঁাদিতে বলিল—রিষড়ে থেকে • হেঁটে আসূচি—অনেক রাত্তিরে বেরিয়েচি, আমি আর সেখানে যাব নী— —আচ্ছা, চল চল, তোমায় বাড়ীতে দিয়ে আলি– কি বোকা মেয়ে ! এত রাত্তিরে কি এ-ভাবে বেরুতে আছে ?--ছিঃ-আর এই কনকনে শীতে, গায়ে একখানা কাপড় নেই, কিছু না—এ কি ছেলেমান্থবি ! —আপনার পায়ে পড়ি মাষ্টার মশাই, আপনি বাবাকে বলবেন, আর যেন সেখানে না পাঠায়—সেখানে গেলে আমি মরে যাব—পায়ে পড়ি আপনার—১ - বাড়ির কাছাকাছি গিয়া বলিল—বাড়ীতে যেতে বডড ভয় কচ্ছে, মাষ্টার মশায়—আপনি একটু বলবেন বাবাকে মাকে বুঝিয়ে— সে এক কাও জার ৰুি অত রাত্ৰে ! ভাগ্যে রাত অনেক, পথে কেহ নাই !