পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরাণে দেশ শ্ৰীযোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যামিধি সূচনা । পুরাণ বুঝিতে হইলে শ্রদ্ধার সহিত পড়িতে হইবে ; পৌরাণিকের অস্তরে প্রবেশ করিতে হইবে । যে-কোন বই পড়ি, যে-কোন লোকের সহিত কথা কই, বক্তা ও শ্রোতা, উভয়ের অস্তরে অস্তরে যোগ না ঘটিলে, বইটা কিছু নয়, লোকটাও ভাল নয়। আমরা পুরাণে পালিত হইয়াছি ; আর, বায়ুপুরাণ বলিতেছেন, সে পুরাণ ‘ব্রহ্মোক্ত’, ‘বেদ-সম্মিত । আরও বলিতেছেন, “যিনি চারি বেদ ও উপনিষদসহ ষড়ঙ্গ জানেন, কিন্তু পুরাণ জানেন না, তিনি বিচক্ষণ হইতে পারেন না । ইতিহাস ও পুরাণ দ্বারা বেদজ্ঞান বৃদ্ধি করিবে । না করিলে সে - আল্পবিদ্যকে বেদ ভয় করেন ; মনে করেন প্রহার করিতে আসিতেছে।” কিন্তু পুরাণ যে বুঝিতে পারি না । ইহার কারণ আমরা পুরাণের দেশ, কাল, পাত্র, তিনে পরিবতিত হইয়া গিয়াছি । শব্দের অর্থ চিরকাল এক থাকে না । আমরা এখন স্বর্গ বলিলে আকাশের দিকে তাকাই, পৃথিবী বলিলে ভূগোল বুঝি, পাতাল বলিলে ভূগোলের বিপরীত পৃষ্ঠ মনে করি। আমাদের কাছে, ঋষি তপস্যা কিম্বা যজ্ঞ করিতেছেন, দেব অশরীরী জীব, দানব বিকটাকার প্রাণী, ইত্যাদি। কিন্তু, নূতন মানব ইঞ্জিয়-গ্রাহ পদার্থ চিন্তা করে, অমৃত বস্তু, কল্পনা করিতে পারে না। বহু কাল পরে চিন্তাশীল মানব দ্রব্যের গণ পৃথক ভাবিতে শেখে। প্রথম প্রথম স্বর্গ উচ্চদেশ, পাতাল নিম্নদেশ, দেব স্বন্দর প্রভাবশালী মানুষ। যক্ষ রক্ষঃ গন্ধৰ্ব কিন্নর, সবাই মাকুব । হিমালয়ের কন্যা প্রস্তরের হইতে পারে না ; সকলেই বুঝে, হিমালয়প্রদেশের রাজার কন্যা । ঋক্ষ এক পর্বতের নাম ; ঋক্ষরাজ সে পার্বত্যদেশের রাজা । নাগকন্তা, নাগবংশীয় কন্যা । নাগবংশ এখনও আছে । উৎপত্তি যাহাই হউক, এখনও অগ্নিকুল, গঙ্গ-বংশ, স্বর্যবংশ আছে । সৈন্ধব বলিলে সিন্ধুদেশজাত লবণ ও অশ্ব, দুই-ই বুঝায়। এইর প, গন্ধৰ্ব এক জাতি মানুষ, আর গন্ধৰ্বদেশজাত ঘোটকও ( কাবুলী ঘোড়া ) বুঝায়। একটি অর্থ সকল বাক্যে চলে না। সেইরাপ, দেব শব্দে সর্বদা অমর বুৰিয়াই অনর্থ হইয়াছে। >3 দেশ-সম্বন্ধেও এইরপ ভ্রম হইয়াছে। আর্যজাতি এই সেদিন আকাশ হইতে ভূতলে অবতীর্ণ হন নাই। তাহার কত যুগ ধরিয়া কোথায় কোথায় অবস্থিতি করিয়াছিলেন, কে বলিতে পারিবে। বেদে কোন কোন দেশের কোন কোন ঘটনার উল্লেখ আছে তাহার স্থিরনির্ণয় হয় নাই। এক এক বিদ্বানের এক এক মত। পুরাণ বেদ-সম্মত, স্বীকার করিলে পুরাণ হইতে বরং কিছু কিছু বুঝতে পারি। পরাশর-নন্দন অসামান্ত-প্রতিভাসম্পন্ন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদ বিভাগ করিয়াছিলেন । এই হেতু তাছার উপাধি বেদ-ব্যাস হইয়াছিল । তিনি বেদ-সংহিতা করিয়াছিলেন, ভারত-ইতিহাস ও একখানি পুরাণ-সংহিতা করিয়াছিলেন। তিনি খ্ৰীষ্টপূর্ব জুয়োদশ শতাব্দে ছিলেন। ইহার পূর্বে বেদ, ইতিহাস, পুরাণ অবশু ছিল । নচেৎ সংহিত হইতে পারিত না । এই তিনের মধ্যে পুরাণ প্রথম, ইহা স্বতঃ-সিদ্ধ । কিন্তু বেদের এভ প্রামাণ্য ও পবিত্রতার হেতু কি ? এই যে প্রাচীনের বলিয়াছেন, বের কতকগুলি ঋষির দৃষ্ট ; কেহ বেদ রচনা করে নাই, ইহা অনাদি, শাশ্বত ; এই বিশ্বাসের কারণ অবশ্ব ছিল। ঋষিরা ঘুম-পাড়ানীর . গান করিলেন, সেটাও পবিত্র মন্ত্র হইয়া গেল ; কত কাল গেলে এবং কি কারণে এৰূপ হইতে পারে? আর্ষের বুদ্ধিমান জাতি ছিলেন, জড়বুদ্ধি মূঢ় ছিলেন না। একটা কল্পনা করি। মনে করি, তাহারা দশ পনর হাজার, এশিয়ার মধ্যভাগে বাস করিতেছেন। সে দেশে বৃষ্টি নাই, কৃষকমের স্ববিধা নাই। পর্বত ও নদী আছে, ঘাস আছে, অজ মেষ গো-চারণ দ্বারা তাহারা কায়ক্লেশে দিন-যাপন করিতেছেন। সে দেশে বহু অশ্ব আছে ; তাঙ্গার সে অশ্ব ধরিয়া বাহন করেন, অশ্বের ংসও থান। শীত ও গ্রীষ্ম, গ্রীষ্ম ও শীত, এই দুই ঋতু কখন আসে কখন ধায়, তাহা বলিবার জো নাই। নিদারণ শীত ; ঈশান কোণ, হইতে কনকন্তে বাতাস বহিতে থাকে ; আগ ন ন রাখিলে বাচিবার জো নাই। এমন দেশে অগ্লুচিস্ত সত্য-সত্য চমৎকার। তাছা হইলেও 娜 স্বদেশ ! (গ্ৰীণলণ্ডেও মাচুধের বাস মাছে, তাহারা মনে করে, তেমন দেশ আর নাই।) তাহারা অন্ত্রচিন্ত৷