পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ? অজানা به مبهم همبییم. নিয়ে উঠে কিয়দ র চলে গেল। চাচা যেন তাকে মনে করিয়ে দিলেন, শাস্তির সঙ্গে তার অবস্থার কী তফাৎ, কতখানি সে কুপার পাত্ৰ ! জিনিষপত্র হাতে নিয়ে সবাই যখন আবার প্লাটুফরমের ওপর বেরিয়ে এল, রাত তখন শেষ হয়ে আসছে । দূর থেকে শাস্তিকে দেখে বারি অবাকৃ হয়ে গেল। ইতিমধ্যে সে পরিচ্ছদ বদল করেছে। পরণে তার বেগুনী মখমলের ওপর সোনালী জরির বিচিত্র কাজকরা পায়জামী, গায়ে গরদের পাঞ্জাবী, মাথায় এবার নীল রংয়ের ওড়না, পায়ে জরির জুতো । শান্তি একবার চারিদিকে তাকালে । বদরির দিকে তার দৃষ্টি পড়ল না । কেনই বা পড়বে । ব্যবধান ধে তার সঙ্গে অনেকখানি ! বদরি ভাবলো, এই মহীয়সীর সঙ্গে একটু আগে তার অনধিকার ঘনিষ্ঠতার কি কোনো যুক্তি আছে ? অখ্যাত নগণ্য তার জীবনে শাস্তি শুধু ভিক্ষার মত দিয়ে গেল সামান্ত বন্ধুদ্ধের যৎসামান্য গৌরব, যৎকিঞ্চিং সৌভাগ্য ! তুচ্ছতার ক্ষুদ্রতার লজ্জা ওই মেয়েটি যে তার গায়ে লেপে দিল, এ সে লুকোবে কেমন ক’রে ? বদরি কাঙাল, কিন্তু নিজের স্পৰ্দ্ধাকে সে মার্জনা করতে পারল না। রাজকন্যার সঙ্গে বন্ধই রাখাল বালকের " এ যে মিথ্যা, এ যে অসম্ভব, এ গল্প কেউ যে বিশ্বাস করতে চাইবে না । কাঠের সাকোটা পার হয়ে ধীরে ধীরে সে ওদিকে চলে গেল। ছোট লাইনের গাড়ীটা এখুনি ছাড়বে। বদরি ঘুরতেই লাগল, যাত্রীদের কাছে মিনতি জানিয়ে তার খেলনা ও মণিহারী বিক্রি করবার আর রুচি ছিল না । দাড়িয়ে দাড়িয়ে কিয়ৎক্ষণ পরে তার চোখের স্বমুখ দিয়েই গাড়ীখানা ছেড়ে ধীরে ধীরে চলে গেল । এক জায়গায় সে এসে বসল। মুখের ভাষা তার যেন ফুরিয়ে গেছে ! তার কোনো উৎসাহ নেই ; সে ক্লান্ত ! এই কদর্ষ্য ফেরিওয়ালাগিরি বেশীদিন সে হয়ত আর করতে পারবে না। বদরির মনে হ’ল, এইখানে কিছুক্ষণ শুয়ে চোখ বুজতে পারলে সে যেন বঁাচে । ওদিকের লাইনে ততক্ষণে ডাকগাড়ী এসে গেছে । ভিন মিনিট মাত্র দাড়াবে। ওঠো বঙ্গরি, সময় ১২১ নেষ্ট ! তোমার এই অকারণ অবসাদের মূল্য কি ! কে বুঝবে এক পলকে কা’র জীবন কখন ব্যর্থ হয়ে গেল ! তোমার গোয়াল-পিতার নির্দয় শাসনকে স্মরণ করে উঠে দাড়াও ! কে বলেছে তুমি ক্লাপ্ত ? - বঙ্গরি ঝাপি নিয়ে আবার তাড়াতাড়ি ছুঢ়ল । কাঠের সাকো বেয়ে দ্রুতবেগে সে মেমে আসছিল, যাঃ – গেল তার ঝাপি একেবারে কাৎ হয়ে ! ছড়, ছড়, ক'রে তার মণিহারীগুলি সিড়ির উপরেই ছড়িয়ে পড়ল । পিছম থেকে যার আসছিল তার কেউ গেল সেগুলি মাড়িয়ে, প। দিয়ে কেউ দিলে ঠিকরে, কেউ দিল গালি, কেউ বলে গেল, আহ ! একে একে সেগুলি কুড়িয়ে সে সখন সবগুলি একত্র করল তখন ঘণ্ট' প'ড়ে গেছে । কাছিটি গলার সঙ্গে ভাল ক’রে জড়িয়ে সে আবাব নীচে নেমে এল । গাড়ীর কাছে আসতেই একজন তাকে দাড় করিয়ে এক প্যাকেট সিগারেটু কিন্‌ল। তারপর নিল একট। দেশালাষ্ট । —পয়সা দাও জলদি বাঙালী বাৰু ? আরে দাড়া বেটা, একদম লাটসায়েব –ব'লে বাবুটি প্যাকেট, খুলে সযত্নে একটি সিগারেট বা’র করে দেশালাঙ্গ জেলে ধরিয়ে বললেন, কত ? —তেরো পয়সা ! —ভাগ, সবাই দেয় এগারো পয়সা আর তুষ্ট...সবশুদ্ধ তিন আনা দেবো । —বেশ তাই দাও । বাবুটি একটি টাকা বা’র করলেন। বোপ শুধু টাকাটি ভাঙবার উদ্দেশ্যই তার ছিল ৷ বদরিকে আবার বগলি বা’র করে টাকার ভাঙনি গুণে গুণে দিতে হ’ল । একট। শিকি আচল বলে বাবুটি আবার সেটি বদলে চারিটি একজানি নিলেন । ● আবার কয়েক পা এগোতেই আর একট। লোক তাকে বাধা দিয়ে বলল, এনামেলের চামুচে কত করে? শান্তি যে তাকে ও-গাড়ী থেকে হাতছানি দিয়ে ডাক্‌ছে বদরির তা দৃষ্টি এড়ায়নি। সেদিকে একবার ডাকিয়ে নিঃশ্বাস রোধ করে সে বলল, দু-আন, নেবেন ?