পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] পড়ে। পাটের চাষীর শিক্ষার জন্তে, স্বাস্থ্যের জন্তে স্থগভীর অভাবগুলো অনাবৃষ্টির নালা ডোবার মত ই ক’রে রইল, বিদেশগামী মুনফ থেকে তার দিকে কিছুই ফিরল না। যা গেল তা নিঃশেষে গেল। পাটের মুনফল সম্ভবপর করবার জন্তে গ্রামের জলাশয়গুলি দূষিত হ’ল —এই অলহ জলকষ্ট নিবারণের উদ্দেশে বিদেশী মহাজনদের ভরা থলি থেকে এক পয়সা খসল না । যদি জলের ব্যবস্থা করতে হয় তবে তার সমস্ত ট্যাক্সের টান এই নিঃস্ব নিরন্ত্রদের রক্তের উপরই পড়ে। সাধারণকে শিক্ষা দেবার জন্তে রাজকোষে টাকা নেই, কেন নেই ? তার প্রধান কারণ, প্রভূত পরিমাণ টাকা ভারতবর্ষকে সম্পূর্ণই ত্যাগ করে চলে যায়—এ হ’ল লোভের টাক, যাতে ক’রে আপন টাকা ষোলে। আনাই পর হয়ে যায় । অর্থাৎ জল উবে যায় এপারের জলাশয়ে আর মেঘ হয়ে তার বর্ষণ হতে থাকে ওপারের দেশে । সে দেশের হাসপাতালে, বিদ্যালয়ে এই হতভাগ্য অশিক্ষিত অস্বস্থ মুমুৰু ভারতবর্ষ স্থদীর্ঘকাল অপ্রত্যক্ষভাবে রসদ জুগিয়ে আসচে । দেশের লোকের দৈহিক ৪ মানসিক অবস্থার চরম দুখ দৃত অনেককুল স্বচক্ষে দেখে আসচি। দারিদ্র্যে মানুষ কেবল ষে মরে তা নয়, নিজেকে অবজ্ঞার ধোগ্য ক'রে তোলে। তাই স্তর জন সাইমন বললেন যে, “In our view the most formidable of the evils from which India is susfering have their roots in social and economic customs of longstanding which can only be remedied by the action of the Indian people themselves,"— এটা হ’ল অবজ্ঞার কথা । ভারতের প্রয়োজনকে তিনি যে-আদশ থেকে বিচার করচেন সেট। তাদের নিজেদের আদর্শ নয়। প্রচুর ধন-উৎপাদনের জন্যে ধৈ অবারিত শিক্ষা যে স্থযোগ যে স্বাধীনতা তাদের নিজেদের আছে, যে-সমস্ত স্থবিধা থাকাতে তাদের জীবনযাত্রার আদর্শ জানে কৰ্ম্মে ভোগে নানা দিক থেকে প্রভূত পরিমাণে পরিপুষ্ট হ’তে পেরেচে, জীর্ণবস্ত্র শীর্ণতন্থ রোগরাপ্ত শিক্ষাবঞ্চিত ভারতের পক্ষে সে-আদর্শ কল্পনার মধ্যেই জানেন সোভিয়েট নীতি • శ్రీ না,—আমরা কোনো মতে দিনযাপন করব লোকবৃদ্ধি নিবারণ ক’রে এবং খরচপত্র কমিয়ে, আর আজ তারা নিজের জীবিকার যে পরিস্ফীত আদর্শ বহন করচেন তাকে চিরদিন বহুল পরিমাণে সম্ভব ক’রে রাখব আমাদের জীবিকা খৰ্ব্ব ক’রে। .এর বেশী কিছু ভাববার নেই, অতএব রেমেডি-র দায়িত্ব সম্পূর্ণ আমাদেরই হাতে, যারা রেমিডিকে দুঃসাধ্য করে তুলেছে তাদের বিশেষ কিছু করবার নেই । মানুষ এবং বিধাতার বিরুদ্ধে এই সমস্ত নালিশ ক্ষান্ত করে রেখেই অন্তরের দিক থেকে আমাদের নিজ্জীব পল্লীর মধ্যে প্রাণসঞ্চার করবার জন্তে আমার অতি ক্ষুদ্র শক্তিকে কিছুকাল প্রয়োগ করছি । একাজে গবমেন্টের আমুকুল্য আমি উপেক্ষা করিনি, এমন কি ইচ্ছা করেছি। কিন্তু ফল পাইনি, তার কারণ দরদ নেই। দরদ থাকা সম্ভব নয়—আমাদের অক্ষমতা আমাদের সকল প্রকার দুৰ্দ্দশ। আমাদের দাবিকে ক্ষীণ ক’রে দিয়েচে । দেশের কোনো যথার্থ কৃত্যকৰ্ম্মে গবমেন্টের সঙ্গে আমাদের কৰ্ম্মীদের উপযুক্তমত যোগসাধন অসম্ভব ব’লেই অবশেষে স্থির করেচি। অতএব চৌকিদারদের উদির খরচ জুগিয়ে যে-কটা কড়ি বাচে তাই দিয়ে যা সম্ভব তাই করা যাবে এই রইল কথা । রাজকীয় লোভ ও তৎপ্রস্থত ছুর্বিষহ ঔদাসীন্তের চেহারাটা যখন মনের মধ্যে নৈরাপ্তের অন্ধকার ঘনিয়ে বসেচে এমন সময়েই রাশিয়ায় গিয়েছিলুম। যুরোপের জন্তান্ত দেশে ঐশ্বধ্যের আড়ম্বর যথেষ্ট দেখেছি ; সে এতই উত্তঙ্গ যে, দরিদ্র দেশের ঈর্ষাও তার উচ্চ চুড়া পৰ্য্যস্ত পৌছতে পারে না। রাশিয়ায় সেই ভোগের সমারোহ একেবারেই নেই, বোধ করি সেই জন্তেই তা’র ভিতরকার একটা রূপ দেখা সহজ ছিল। ভারতবর্ষ যার থেকে একেবারেই বঞ্চিত তারই আয়োজনকে সৰ্ব্বব্যাপী কুরবার প্রবল প্রয়াল এখানে দেখতে পেলেম । বলা বাহুল্য, আমি আমার বহুদিনের, ক্ষুধিত দেখার ভিতর দিয়ে সমস্তটা দেখেচি । পশ্চিম মহাদেশের অঙ্ক, কোনো স্বাধিকার-সৌভাগ্যশালী দেশৰালীর চক্ষে দৃপ্তটা কি রকমু ঠেকে সে-কথা