পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২. প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩e৮ [ ৩১শ ভাগ, ১ম খণ্ড ক’রে আয়ত্ত করতে হবে, কিন্তু ব্যক্তিকে বৈতরণী পার ক’রে দিয়ে সমাজরক্ষণ করবে কে ? অসম্ভব নয় যে, বৰ্ত্তমান রুগ্ন যুগে বলশেভিক নীতিই চিকিৎসা, কিন্তু চিকিৎসা তো নিত্যকালের হতে পারে না, বন্ধত ডাক্তারের শাসন যেদিন ঘুচৰে সেইদিনই রোগীর শুভদিন। আমাদের দেশে আমাদের পল্লীতে পল্লীতে ধনউৎপাদন ও পরিচালনার কাজে সমবায় নীতির জয় হোক এই আমি কামনা করি । কারণ, এই নীতিতে যে সহযোগিতা আছে, তাতে সহযোগীদের ইচ্ছাকে চিন্তাকে তিরষ্কৃত করা হয় না ব’লে মানবপ্রকৃতিকে স্বীকার করা হয় । সেই প্রকৃতিকে বিরুদ্ধ ক’রে দিয়ে জোর খাটাতে গেলে সে জোর খাটবে না । এইসঙ্গে একটা কথা বিশেষ ক’রে বলা দরকার । আমি যখন ইচ্ছা করি যে, আমাদের দেশে গ্রামগুলি বেঁচে উঠক, তখন কখনও ইচ্ছে করিনে যে গ্রাম্যতা ফিরে আfম্বক। গ্রাম্যতা হচ্চে সেইরকম সংস্কার, বিদ্যা, বুদ্ধি, বিশ্বাস ও কৰ্ম্ম যা গ্রামসীমার বাইরের সঙ্গে বিযুক্ত। বৰ্ত্তমান যুগের যে প্রকৃতি তার সঙ্গে যা কেবলমাত্র পৃথক নয়, ষা বিরুদ্ধ। বর্তমান যুগের বিদ্যা ও বুদ্ধির ভূমিকা বিশ্বব্যাপী— যদিও তার হৃদয়ের অস্থবেদনা সম্পূর্ণ সে পরিমাণে ব্যাপক হয়নি। গ্রামের মধ্যে সেই প্রাণ জানতে হবে যে-প্রাণের উপাদান তুচ্ছ ও সঙ্কীর্ণ নয়, যার দ্বারা মানবপ্রকৃতিকে কোনোদিকে খৰ্ব্ব ও তিমিরাবৃত না রাখা হয়। ইংলওে একদা কোনো এক গ্রামে একজন কৃষকের বাড়িতে ছিলুম। দেখলুম লগুনে যাবার জন্তে ঘরের মেয়েগুলির ‘মন চঞ্চল । শহরের সর্ববিধ ঐশ্বর্ষ্যের তুলনায় গ্রামের সম্বলের এত मौनरल ८ष यां८यब्र छिंखटक चखांदरङहे जर्स्नां *झटब्रब्र भिटक টানচে । দেশের মাঝখানে থেকেও গ্রামগুলির যেন নিৰ্ব্বাসন । রাশিয়ায় দেখেছি, গ্রামের সঙ্গে শহরের বৈপরীত্য খুঁচিয়ে দেবার চেষ্টা। এই চেষ্টা যদি ভাল ক'রে সিদ্ধ হয় তাহলে শহরের অস্বাভাবিক অতিবৃদ্ধি নিবারণ হৰে । দেশের প্রাণশক্তি, চিন্তাশক্তি দেশের সর্বত্র ব্যাপ্ত হয়ে জাপন কাজ করতে পারবে । আমাদের দেশের গ্রামগুলিও শহরের উচ্ছিষ্ট ও উত্তভোজী না হয়ে মন্থয়ত্বের পূর্ণ সন্মান ও সম্পদ ভোগ করুক এই আমি কামনা করি । একমাত্র সমবায় প্রণালীর দ্বারা গ্রাম আপন সৰ্ব্বাঙ্গীন শক্তিকে নিমজনদশা থেকে উদ্ধার করতে পারবে এই জামার বিশ্বাস। আক্ষেপের বিষয় এই যে, আজ পৰ্য্যস্ত বাংলা দেশে সমবায় প্রণালী কেবল টাকা ধার দেওয়ার মধ্যেই স্নান হয়ে আছে, মহাজনী গ্রামাতাকেই কিঞ্চিৎ শোধিত জাকারে বহন করচে, সম্মিলিত চেষ্টায় জীবিকা উৎপাদন ও ভোগের কাজে সে লাগল না। তার প্রধান কারণ যে-শাসনতন্ত্রকে আশ্রয় ক’রে জামলা-বাহিনী সমবায়-নীতি আমাদের দেশে আবিভূতি হ’ল সে যন্ত্র অন্ধ বধির উদাসীন। তা ছাড়া হয়ত একথা লজ্জার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে যে, চরিত্রে যে গুণ থাকলে সমবেত হওয়া সহজ হয় আমাদের সে গুণ নেই । যারা দুৰ্ব্বল, পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস তাদের দুৰ্ব্বল । নিজের পরে অগ্রদ্ধাই অপরের প্রতি অশ্রদ্ধার ভিত্তি । যারা দীর্ঘকাল পরাধীন, আত্মসম্মান হারিয়ে তাদের এই দুৰ্গতি। প্রভুশ্রেণীর শাসন তারা নতশিরে স্বীকার করতে পারে, কিন্তু স্বশ্রেণীর চালনা তারা সম্ভ করে না, স্বশ্রেণীকে বঞ্চনা করা এবং তার প্রণ্ডি নিষ্ঠুর ব্যবহার করা তাদের পক্ষে সহজ। রুশীয় গল্পের বই পড়ে জানা যায় সেখানকার বহুকাল নির্বাতনপীড়িত কৃষকদেরও এই দশা। যতই দুঃসাধ্য হোক আর কোনো রাস্তা নেই, পরম্পরের শক্তিকে মনকে সম্মিলিত করবার উপলক্ষ্য স্বষ্টি ক’রে প্রকৃতিকে শোধন ক’রে নিতে হবে । সমবায় প্রণালীতে ঋণ দিয়ে নয়, একত্ৰ কৰ্ম্ম করিয়ে পল্লীবাসীর চিত্তকে ঐক্যপ্রবণ করে তুলে তৰে জামরা পল্পীকে ধাচাতে পারব ৷ ( প্রাক্ত রামানল চট্টোপাধ্যায়কে লিখিত )