পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা । চ'লে আসে—ধবদ্বীপে ভারতীয় নৃত্যকলা একটী বিশিষ্ট রূপ পেয়ে দাড়ায়, যেন একেবারে পূর্ণতায় এসে পৌছয়। ইন্দোনেসীয় বা মালাই জাতির মধ্যে নৃতাই ভাবের এক চরম অভিব্যক্তি হ’য়ে দাড়ায় । কিন্তু মৃত্যের মুলস্থূত্রগুলি ভারতেরই ; কারণ, হাতের অনেক ভঙ্গীকে এখনও এদেশে ‘মূত্রা’ বলে। প্রাচীন ভাস্কর্ষ্যে — যেমন বর-বুদুরের গায়ে—উৎকীর্ণ খোদিতচিত্রে নাচের অতি সুন্দর কতকগুলি ছবি পাওয়া যায় । ষবদ্বীপীয় কুষ্টির উদ্যানে এক্ট নাচ একটী অনিন্দাসুন্দর পুষ্প—দেবতার অর্চনাতেই মুখ্যতঃ এটা নিবেদিত হ’ত । পরে কালধৰ্ম্মে যবদ্বীপে সব বদলে গেল—মুসলমান ধৰ্ম্ম এল. কাব্য-সঙ্গীত সৌন্দয্য-কলা প্রভৃতির সাহায্যে যে ভাবে আগে দেব-সেবা হ’ত তা একেবারে বন্ধ হ'য়ে গেল । মন্দিরগুলি আর পৃক্তাস্থান রইল না, পরিত্যক্ত হ’ল, দেববিগ্রহ দূরীভূত হ’ল । কিন্তু ষবদ্বীপের রাজার ধর্শ্বাস্থর গ্রহণ ক’ল্পেও নিজেদের জাতীয় রুষ্টির এই জিনিষটা আর ছাড়তে পারলেন না। তারা নিজেদের রাজসভার শোভার নিমিত্ত আর নিজেদের আনন্দের নিমিত্ত এই নাচ বজায় রাখলেন—এর tradition বা ঠাট বা পুরুষাভুক্রমে প্রাপ্ত রীতিকে বর্জন ক’রলেন না । আগেকার মতই রাজাবরোধের রমণীগণ বা রাজকন্যাগণ নাচের চর্চা ক’রতে লাগলেন, আর রাঙ্গার সাম্নে বা কখনও কখনও রাজাদেশে রাজার অভ্যাগতদের সামনে নিজেদের এই অপূৰ্ব্ব শিল্প-কলা দেখাতে থাকলেন । ঘবদ্বীপের পূরকর্ড আর যোগাকৰ্ত্ত এই দুষ্ট নগরেই এখন এই রকমের রাজঘরানা নাচ প্রচলিত আছে । রাজবাটীর দুই রকম শ্রেণীর মেয়ের এই নাচ নাচে। এক রকম নাচ ক’রে থাকে রাজার মেয়েরা। চার জন মাত্র একসঙ্গে এই নাচে নামে । এই নাচের নাম হ’চ্ছে Serimpi ‘গেরিম্পি বা Srimpi শ্রিম্পি । সাত আট বছর থেকে রাজবাড়ীয় মেয়েদের শেখাতে আরম্ভ করে । এই সব নাচ শেখ খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সাধারণতঃ * বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে এরা আর নাচতে পায় না। সতেরো আঠারে। কি কুড়ি বছর বয়সের মধ্যেই এদের ميسيسي 3 দ্বীপময় ভারত vరిN9) বিয়ে হ’য়ে ষায় । দ্বিতীয় রকমের নাচের নাম হচ্ছে Bedaja si Bedojo “coutui 1 wrzet atu-wrs:gara জন্ত স্বন্দরী কঙ্কা গ্রাম থেকে আনা হ’ত—পিতামাতা অনেক সময়ে রাজাকে কস্তা দান করা গৌরবের কথা ব’লে মনে ক’রত, তা সে যত, বড়ো ঘরের বা যত গরীব ঘরেরই বাপ-মা হোক না কেন । এই সব মেয়েদের এনে অতি যত্নে শিক্ষা দেওয়া হ’ত, আর এরা মন্দিরেও মৃত্য ক’রত, রাজার স্ত্রী ব’লে গণ্য হ’ত। এখনও এই রকম প্রথা যরদ্বীপে অল্প-স্বল্প আছে। এই সব রাজস্ত্রী যে নাচ নাচে, তার নাম 'বেডয়ো । এদেরও খুব ছেলেবেলা থেকে শিক্ষা দেওয়া হয়, আর একটু বয়স হ’য়ে গেলেজার নাচে না । অষ্টাদশ শতকে “বেডয়ো’ নাচে তখনকার দিনের একজন রাজা কতকগুলি নোতুন বিষয়ের যোজনা করেন. যেমন নর্ভুকী মেয়েদের সে-কেলে পিস্তল নিয়ে আওয়াজ করা। আর কতকগুলি ডচ রুচিবাগীশের হাতে প’ড়ে বিগত শতকের মাঝামাঝি এদের পোষাকের একটু পরিবর্তন করা হয়—আঙিয়ার বদলে র্কাধ-ঢাকা জামা দেওয়া হয় ; কখনও কখনও এক্ট কঁাধ-ঢাকা জামা প’রেক্ট নাচে । আমরা শুরকভয় বেডয়ো’র নাচ দেখলুম, পরে যোগ্যকৰ্ত্তয় "শ্রিম্পি দেখি। দুইয়ের পার্থক্য আমরা কিছু ধ’রতে পারলুম না—দুই একই শ্রেণীর নাচ । এই নাচ ষবদ্বীপের রাজবাটীর বাইরে কারো দেখবার স্বযোগ সাধারণতঃ হয় না। বছরে নাকি চার দিন এই নাচে বাইরের লোকের নিমন্ত্রণ হ’য়ে থাকে—তাও ডচ রেসিডেন্ট সাহেবের মারফতে হয়, তার হাত দিয়ে নাচের নিমন্ত্রণের কার্ড বিলি হয় । এই চারটি দিন হ’চ্ছে— ( ১ ) হলাগুের মহারাণীর জন্মদিন, ( ২ ) রাজার জন্মদিন, ( ৩ ) ডচ সরকারের সম্মাননার জন্ত এক দিন, আর (৪) মুসলমানদের পয়গম্বর মোহম্মদের জন্মদিন। শুনলুম, রবীন্দ্রনাথ আসছেন ব’লে বিশেষভাবে তাকে দেখাবে ব’লে আর একদিনের জন্য স্বম্বহুনান এই নাচের ব্যবস্থা করেন । নাচ আরম্ভ হ’ল । এর বর্ণনা কি দেবো? আমার মনে তার একটা উজ্জল বর্ণময় ছাপ মাত্র আছে—তার খুঁটিনাটি কিছু মনে আসে না। বিশেষতঃ যখন নৃত্যকলার


--محمد - -- "