পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8X8 প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৮ SAASAASAASAASAASAASAASAAAS রাস্তার মোড়ের কাছে গাড়ী আসিবামাত্র গিদে। জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কি সোজা তোমার বাড়ি চলে যেতে চাও?” এমা বলিলেন, "না, আমায় একবার তোমার ওখানে গিয়ে জিনিষপত্রগুলো গুছিয়ে নিতে হবে ত ? ঝি-ট একলা পারবে না। গোছান হলেই আমি চলে যাব।” গিদে বলিলেন, “তা বেশ ।” বাড়ি পৌছিবামাত্র এমা তাড়াতাড়ি তাহার ছোট বসিবার ঘরটিতে গিয়া প্রবেশ করিলেন । গিদে। বসিবার ঘরে গিয়া একখানা খবরের কাগজ টানিয়া লইয়া পড়িতে বসিয়া গেলেন । পড়িবার ভাণ তিনি করিতেছিলেন বটে, কিন্তু আসলে তাহার কান ছিল পাশের ঘরে । এমার পদধ্বনি শুনিতেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন । এমা মধ্যে মধ্যে দরজার সামনে দিয়া আসা-যাওয়া করিতেছিলেন, গিদে। তাহাই দেখিতেছিলেন । একবার তিনি ডাকিয়া বলিলেন, “তোমার কি ক্লাস্তি বোধ হচ্ছে না ?” এম। বলিলেন, “না, আমার কাজ প্রায় শেষ হয়ে এল ৷” অল্পক্ষণ পরেই এমা আসিয়া বসিবার ঘরে প্রবেশ করিলেন। একখানা চেয়ার টানিয়া বসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখনও বৃষ্টি হচ্ছে নাকি ?” তাহাকে অত্যন্ত অবসন্ন দেখাইতেছিল। গিদে কাগজখানা “হ্যা, এখনও হচ্ছে বটে।” এম জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমার গাড়ীটা কি এখনও আসেনি ?” গিদে বলিলেন, "জানি না ত, দেখে আসছি।” এমা বলিলেন, “থাক, অত কষ্ট করতে হবে না । এখনি আসবে এখন " গিদে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে আসব ?” “তার দরকার নেই ।” নামাইয়া রাখিয়া বলিলেন, আচ্ছা গিয়ে সময় যেন কাটিতে চাহিতেছিল না । তৃত্যু আসিয়া যখন খবর দিল ষে গাড়ী জাসিয়াছে, এম তখন তাড়াতাড়ি উঠিয়৷ টুপী পরিতে লাগিলেন । টুপীতে পিন্‌ গুজিতে র্তাহার আঙুলগুলি ক্রমাগত কঁাপিতেছিল । টুপী পরা শেষ হইলে তিনি দস্তানা পরিয়া প্রস্তুত হইলেন । আয়নার সামনে দাড়াইয়া পোষাক-পরিচ্ছদ একটু আধটু ঠিকঠাক করিয়া লইলেন । তাছার পর বিদায় গ্রহণ করিবার জঙ্ক গিদোর দিকে ফিরিয়া দাড়াইলেন । গিদ্যেও অত্যস্থ বিবর্ণমুখে উঠিয়া দাড়াইলেন । এমা মুছস্বরে বলিলেন—“বিদায় ।” গিদে উত্তর দিলেন না। এম; বাহির হইয়া চলিলেন। র্তাহার পদক্ষেপ দৃঢ়তাব্যঞ্জক, তিনি যে একটুও কাতর হন নাই, তাহাই ধেন জোর করিয়া বুঝাইতে চাহিতেছিলেন । তিনি পিছন ফিরিয়া একবারও তাকাইলেন না, কিন্তু গিদে যে তাহার পশ্চাতে আসিতেছেন, তাহা তিনি ভাল করিয়াই বুঝিতে পারিতেছিলেন । দরজার সামনে একটি ভারি মখমলের পরদ। ঝুলিতেছে। সেটিকে তুলিয়া ধরিবার জন্য এম হাত বাড়াইতেই গিদে। ক্ষিপ্ৰহস্তে পরদাটি টানিয়া ধরিলেন । তাহার হাত এমার হাতে ঠেকিয়া গেল । গিদে বলিলেন, “এম, তুমি যে আমাকে ক্ষম করেছ, তা বলতে ভুলে গিয়েছ।” তাহার কণ্ঠস্বর গভীর এবং বেদনাপুর্ণ। এমা চকিতে র্তাহার দিকে তাকাইয় তাহার বক্ষে ঝ পাইয়া পড়িলেন। পুরাতন প্রেমের স্রোত আবার নূতন হইয় তাহাকে ভাসাইয়া লইয়া গেল । গিদো পত্নীকে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে বাধিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি আর কখনও জামাকে ছেড়ে, যাবে না ত - এমা তাহার স্বন্ধে মুখ লুকাইয়া বলিলেন, “ন গিদে । আমার মায়ের ছবিখান এইখানেই নিয়ে আসৰ।।”