পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ঐসুবিমল সরকার, এম-এ, ডি-ফিল ( অক্সন ) “সাহিত্যের" আসল অর্থ—“যা কিছু ‘সাহিত্যে’ অর্থাৎ কোনও সভা, সমিতি, পরিষদ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে, সহযোগী সভ্যগণের মধ্যে, আলোচিত, ব্যাখ্যাত, পঠিত বা গীত হ’তে পারে - ‘সাহিত্য’ পূৰ্ব্বে বলত অ্যাসোসিয়েশুন’ বা পরিষদকে,—তার থেকে পরিষদের উপযুক্ত কাৰ্য্যকলাপেরও ‘সাহিত্য” নাম হ’ল ; যেমন আমরা আজকাল বলি "সোসাইটি করা",— মানে নানাপ্রকার সামাজিক কাজে ( ও অকাজে ) তৎপর হওয়া । বৈদিক যুগে এই রকম বিবিধ সামাজিক কাৰ্য্যকলাপকে ব’লত সভা-সমিতি" করা, প্রথম বৌদ্ধ যুগে ৰ’লত ‘সমাজ করা, মৌধ্যকাল থেকে গুপ্তকাল অবধি বলত ‘গোষ্ঠা কয়। ( যার অবনতির ক্যারিকেচার হ’ল ‘কুষ্ঠা কাটা" ) । “সাহিত্যচর্চা কথাটা বোধ হয় গুপ্তযুগের পর থেকে প্রচলন হয়েছে ; তার পর ক্রমশঃ *সাহিত্য” অর্থাৎ অ্যাসোসিয়েশুনগুলি বহু শতাব্দীর বিজাতীয় আক্রমণ, অম্ভবিপ্লব ইত্যাদির প্রকোপে লুপ্ত হ’লে ( যেমন ভোজের ধারাবতীন্থ সাহিত্য-কলা-ভবন প্রনষ্ট হয়েছিল ), তাদের চর্চাটুকুই ৰিক্ষিপ্ত স্থ-চারজনের মধ্যে রয়ে গেল। আর সেইটুকুর চর্বিতচর্বণই হয়ে পড়ল দেশের ‘সাহিত্য’। প্রথমে “সাহিত্য-দর্শন’গুলি ছিল ‘সাহিত্যের’ বা অ্যাসোসিয়েশুনের সমালোচকদের জন্ত, পরে রয়ে গেল ভাঙা-সভার কবিদের নিজেদের মুখ দেখবার জন্ত। আজকাল এই দেশে আবার আমরা সেই ‘সাহিত্য” ও “চর্চার বিচ্ছেদ-সদ্ধি করেছি, ‘সাহিত্য পরিষদ, সাহিত্য-সভা" ইত্যাদি সংগঠন ক’রে । কিন্তু এই সব নাম-কল্পণে কিছু পুনরুক্তি দোষ ঘটেছে,—‘সাহিত্য’ মানেই সভা বাপরিষদ, এবং তার আলোচ্য বিষয়গুলিও । অতি প্রাচীন বৈদিক যুগ থেকেই সমবেত মণ্ডলীতে সাহিত্যিক প্রচেষ্টা ও চর্চা এদেশে চলে এসেছে । বৈদিক সভা-সমিতিতে দেখি, নানারকম খেলা ও আমোদপ্রমোদের সঙ্গে, তর্কবিচার, গবেষণা, বক্তৃতা, কাৰ্যাবৃত্তি প্রভৃতিও চলত। যেমন অথৰ্ব্ব-সংহিতায় দেখি ষে, ওযধিবিজ্ঞান সম্বন্ধে একটি বিশেষজ্ঞ বক্তৃতা দিচ্ছেন সভাস্থ নারীবৃন্দকে আহবান ক’রে । এইরূপ বৈদিক সংহিতাগুলির বহুস্থলে কথিত আছে যে, কোনও সভ্য সভাতে ভাল একটি বক্তৃতা দিতে বা তর্কবিচারে স্বমত সিদ্ধ করতে বা স্বরচিত গাথা-স্বজ্ঞাদি পাঠ করতে, সাগ্রহে প্রস্তুত হচ্ছেন,—ষাতে অদ্য কোন সভ্যের তুলনায় তার চেষ্টাটি খাটে না নয়। এই বৈদিক কালের সভাগুলি কোন একটি বিশেষ বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকত না ; শ্রুতির উল্লেখ থেকে বেশ বোঝা যায় যে, বাৰ্ত্তা, নীতি, অর্থ,—ছন্দ, গাথা, আখ্যান,—মন্ত্র, ব্রাহ্মণ, উপনিষৎ,—(যাকে আমরা আজকাল ইংরেজীতে বলি philosophical topics)–tē zī£zi șTH BITHfqązņề সভা ও সভা-জাতীয় অন্তান্ত প্রতিষ্ঠানগুলির বলবার কিছু ছিল । সংহিতাগুলির অনেক স্বজ্ঞই সম্ভবতঃ প্রথমে সমসাময়িক “সভা’ বা "সমনে’ মৌলিক রচনা হিসাবে আবৃত্তি করা হয়েছিল । অনেকটা এই ভাবেই,—পাঠে, ব্যাখ্যানে, প্রশ্নোত্তরে, আলোচনায়— অমুবৈদিক সাহিত্য, বিশেষতঃ ঔপনিষদিক সাহিত্য গড়ে উঠেছিল। মহাকাব্য ও পুরাণগুলিতেও দেখি ধে ঐ বৈদিক যুগেই সভাগুলিতে যজ্ঞক্রিয়া, মন্ত্রপাঠ, ধৰ্ম্মালোচনাও হচ্ছে, রাজনৈতিক সমস্যাও মীমাংসিত হচ্ছে, কিংবা ঋষি বা স্থত মহাকবির পুরাণকথার অধৰ৷ সমসাময়িক ইতিহাসের ভিত্তিতে গাধা, কাব্য প্রভৃতি রচনা করে, স্বয়ং বা সশিষ্য আবৃত্তি করছেন,—যার সভান্থ বিদ্বৎজন ও সাধারণ সভ্যকত্বক সমালোচনা, সমাদর ও পুরস্কারও হচ্ছে । এইভাবে আমাদের বেশীর socio-political-historico-literary-religio