পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] সে ঠোঙাট আবার তোলা থাকিত তাদের বনের ধারের দিকের ঘরটায় উচু কুলুঙ্গীটাতে । তার পর দিদি মারা গেল, খেলাধূলায় অপুব উৎসাহ গেল কমিয়, তারপরই গ্রাম ছাড়িয়া উঠিয়া আসিবার কথা হুইতে লাগিল । অপু আর একদিনও ঠোঙার কড়িগুলা লইয়া খেলা করিল না, এমন কি দেশ ছাড়িয়া চলিয়া আসিবার সময়েও গোলমালে, ব্যস্ততায় প্রথম দূর বিদেশে রওন। হুইবার উত্তেজনার মুহূৰ্ত্তে সেটার কথা মনেও উঠে নাই । অত সাধের কড়ি ভরা ঠোঙাটা সেই কড়িকাঠের নীচেকার বড় কুলুঙ্গীটাতেই রহিয়া গিয়াছিল । তারপর অনেক কাল পরে সে কথা অপুর মনে হয় আবার । তথন অপর্ণা মারা গিয়াছে । একদিন অন্যমনঃ ভাবে ইডেন গার্ডেনের কেয়াঝোপে বসিয়া ছিল, গঙ্গার শু-পারের দিকে ক্ষয্যাস্ত দেখিতে দেপিতে কথাটা হঠাৎ মনে পড়ে । অাজ ও মনে হইল । কড়ির কেীটাটা ! সে মনে মনে হাসিল । উত্তর রিকের দে গুয়ালের টনের ঠোঙাটা দূরে সেটা যেন শূন্যে এখনও ঝুলিতেছে ভাঙ্গার শৈশব জীবনের চিহ্নস্বরূপ । অস্পষ্ট, অবাস্তব, স্বপ্নময় ঠোঙাটা সে স্পষ্ট দেখিতে পাইতেছে, পয়সায় চারগ গু করিয়া মাকড়সার ডিমের মত সেই যে ছোট ছোট বিস্কুট, তারই ঠোঙাট । উপরে একটা বিবর্ণপ্রায় হা-করা রক্ষিসের মুখের ছবি দরের কোন কুলুঙ্গীটাতে বসানে আছে, তার পিছনে বাশবন, শিমুলবন, তাদের পিছনে সোনাডাঙার মাঠ, ঘুঘুর ডাক, তার পেছনে তেইশ বছর আগেকার অপূৰ্ব্ব মায়ামাধানে। চৈত্র দুপুরের রোদে ভর নীলাকাশ. কড়ির কোটাটা । একবার ছেলেবেলাকার ঘরের কুলুঙ্গীতে বসানো সেই হাওড়া ষ্টেশন হইতে বাসে যাওয়ার দেীর সহিল না । অপু ষ্টেশনে নামিয়াই ট্যাঞ্চসি ভাড়া করিয়া বাসার দিকে ছুটিল । খোকা না জানি কেম্ন আছে ? কতক্ষণে দেখিব তাহাকে একস্থানে একট। সার্কাস কোম্পানী বড় বড় হরফে বিজ্ঞাপন দিয়াছে, অদ্য শেয রজনী ! brあー>\b অপরাজিত \ుసె4 অদ্য শেষ রজনী ! অদ্য নিতান্তই শেষ রজনী !! অপুর বুকটা ধড়াস্ করিয়া উঠিল । নিজেদের গলিতে গাড়ী ঢুকাইতে সাহস হইল না। বড় রাস্তা হইতে ভাড়া চুকাইয়া দিয়া গাড়ীটা বিদায় করিয়৷ দিল । মোড়ের পানের দোকানী তাহাকে চেনে, কাজলকেও চেনে । সে বিবর্ণমুখে দোকানের সম্মুখে দাড়াইয়। বলিল, এই যে পরমানন্দ, কাণী থেকে এলুম, পান দাও ত ! সঙ্গে সঙ্গে সে উংস্থক ও উদ্বিগ্ন দৃষ্টিতে পরমানদের মুখের ভাব লক্ষ্য করিতে লাগিল, পরমানন্দ কিছু ঢাকিতেছে না কি ? না, এমন তেমন কিছু হইলে কি আর পরমানন্দ জানিত না ? পরমানন্দ কিছু ঢাকে নাই ত ? ঠিক আগেকার মত কেন হাসিল না পরমানন্দ ? অপু কিছু বুঝিতে পারিল না। বাড়য্যেদের দরজায় আসিয়া কড়া নাড়িল । নিধে বেয়ারা ?... অপুর মুখ শুকাইয়া ধূলা হইয়। গিয়াছে, কাজলের কথাটা জিজ্ঞাসা করিতে সাহসে কুলাইল না । নিধে বেয়ার বাহিরের ঘরে স্বইচ জালাইয়া দিয়া বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়াছে, বাহিরে আর কেহ নাই, এক মিনিট দু মিনিট কতকাল, কতযুগ ।... হঠাৎ সিড়ির ঘরের পাশের রাস্ত দিয়া ছেলেমাতুষী মিষ্টি গলায় আকাশ পাতাল ফাটাইতে ফাটাইতে কাজল হাসিমুখে ছুটিয়া আসিল, বাবা এসেচে, বাবা বাব। — . অপু তাহাকে জড়াইয়। ধরিল। —তুমি আস না কেন বাব ! তিনদিন বললেন, সাতদিন হয়ে গেল, তোমার সঙ্গে আড়ি-হু— আমি রেজি ভাবি । —ভাবনা কিসের ? তোর যদি এতটুকু বুদ্ধি থাকে ? চল, আমাদের নিজেদের বাসায় । চাবিটা নিয়ে चबांध ॥ مه নিধে বেহার। আসিয়া বলিল–বাৰু, মাসীমা বঃ,লেন, থোকা ও আপনি রাত্তিরে আজ এখানেই ধাবেন । ভয়ে ভয়ে কে •• ক্রমশঃ