পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । মিলিয়ে মিলিম্বে জোড়া-তাড়া দিয়ে মন্দিরটার জীণোদ্ধার ক’রছেন । বিরাট কীষ্টমুখ কতকগুলি রয়েছে, এগুলি ক্রমে মন্দিরের উপরে পুনঃ সপ্লিবেশিত হবে । নানা দেবদেবীর আর পার্থিব ঘটনাবলীর চিত্র । কতকগুলি পাথর জুড়ে ব্রাহ্মণ-ভোজনের দৃশ্ন ; মাথায় বুট-বাধা দাড়াওয়াল। রুদ্রাক্ষ-পর। ব্রাহ্মণের দল ব’সে "সেব।’ ক’রছেন, সামনে কলাপাতায় আর পাত্রে খাদ্য দ্রব্য অঙ্কিত ; একটা জিনিস আমার একটু বিস্মিত করলে— সকলেরক্ট পাতায় মৃণ্ডা-শুদ্ধ আস্ত-স্বাস্থ মাছ—মৎস্তা-ভোজন তথনকার দিনে ঘবদ্বীপে ব্রাহ্মণ বা ঋষিদের মধ্যে যে iনষিদ্ধ ছিল না, এটা বেশ বোঝা গেল । প্রাস্বালান-প্রধান মন্দিরে রক্ষিত্ত শিবের মূৰ্ত্তি দ্বীপময় ভারত 히 C: এই রকম তো ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগ লুম— প্রাম্বানান-এর অধিষ্ঠাত্রী দেবতা শিবের চিন্তায় আর তার প্রসাদে মনটা যেন ভরপুর হু’য়ে গেল। দেশে ফিরে এসে একটা শ্লোক পেয়েছি,-শ্লোকটী কোথা থেকে নেওয়া জানি না ; মনে তখন যে ভাব হ’চ্ছিল, সেই এই ভাব যেন শ্লোকটাতে ধ’রে দেওয়া আছে– ' মাতা চ পাৰ্ব্বতী গৌরী, পিতা দেবো মহেশ্বরঃ । ভ্রাত্তরে মানবা: সৰ্ব্বে, স্বদেশে ভুবনত্রয়ম্ ॥ তখন মনে মনে কেবল মহাকবি কালিদাসের কথায় প্ৰণাম-মন্ত্র আওড়াচ্ছিলুম—‘জগতঃ পিতরে বন্দে পাৰ্ব্বতীপরমেশ্বরেী । আর সঙ্গে সঙ্গে কালিদাসের নাটকের আর বিশাথদত্তের মুদ্রারাক্ষসের নান্দীতে উদার ছন্দে পরমেশ্বর মহাদেবের বন্দনা-গীতি, আর আবছা-আবছা ভাবে মনে পড়া নাম স্তোত্র আর বন্দনার ছত্র, তানসেনের শিবভঞ্জন-মুলক ধ্রুপদগানের আর রবীন্দ্রনাথের “মরণ’ প্রমুখ কবিতার ছত্র, আর ইংরিঞ্জি অতুবাদে পড়া তামিল ভক্তদের শিব-ভক্তির পদের স্থত, সব মিলে মনে এসে একটা অপূৰ্ব্ব ভাবাবেশে সমগ্র চিত্তকে যেন সম্মোহিত ক’রে দিচ্ছিল। এই তীর্থ স্থানের অদৃশ্য দেবতার অবস্থান যেন আমাকে ঘিরে রয়েছে—এই রকমএকটা ভাব, আমার হিন্দু-জাতির অপরিসীম ঈশ্বর-নিষ্ঠার আর বিশ্বাত্মবোধের, তার চিস্তার আর চেষ্টার, তার সুষমাবোধের আর.শিল্প-বিজ্ঞানের এই অবিনশ্বর নিদর্শন দেখতে দেখতে আমায় অভিভূত ক’রে ফেলছিল— ভয় হ’চ্ছিল, মনের মধ্যেকার ভাবাবেগ বাইরে পাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে। হুদূর ধবদ্বীপে এই পূঞ্জীভূত পাথরের ভাঙাচোরা গুপের মধ্যে আমি যেন প্রাচীন ভারতের জ্ঞান ভক্তি আর কৰ্ম্মের ত্রিবেণীর ধারায় মানসিক অবগাহন ক’রে স্নিগ্ধ হ'লুম। ইতিমধ্যে কবি এসে গিয়েছেন । তাকে যোগ্যকৰ্ত্তয় আমন্ত্রণ করবার জন্য কতকগুলি স্থানীয় সিন্ধী বণিকও এসেছেন । কবির সঙ্গে আমাদের মালবাহী মোটরখানিও এল ; আমি তখন মন্দিরের আশে পাশে ঘুরছিলুম। পরে শুনলুম, এক মহা বিভ্রাট হয়েছে। একখানি মোটরের পিছনে আমার একটি স্বচু-কেস বাধা ছিল,