পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పెఱ অদ্য স্বগীয় মহারাজাধিরাজ গোপালদেবের শ্রাদ্ধ । গঙ্গাতীরে একজন পরিচারক নুতন বস্ত্র লইয়া দাড়াইয়া আছে, সোপানশ্রেণীর উপরে প্রতীহারগণ পথ হইতে ভিক্ষুগণকে সরাইয়া দিতেছে। মহারাজাধিরাজ স্বানান্তে দান করিবেন, ইহা শুনির দুই তিন দিন হইতে গৌড় নগরে বহু দীন, অনাথ, দরিদ্র ভিক্ষুকের সমাগম হইয়াছে। ঘাটের সোপানের উপরে মহাধৰ্ম্মাধ্যক্ষ ও ভাণ্ডাগারাধিকৃত দাড়াইরা আছেন ৷ ঘাটের এক পাশ্বে বহু বস্ত্ৰাধারে রাশি রাশি ক্ষুদ্র রজতখণ্ড সজ্জিত রহিয়াছে। অপর পাখে একজন থৰ্ব্বাকৃতি গৌড়ীর ব্রাহ্মণ দাড়াইয়। আছেন। ইনি অদ্য জাহ্নবীতীরে মহারাজাধিরাজ গৌড়েশ্বরের নিকট হইতে একখানি গ্রাম দানস্বরূপ গ্রহণ করিবেন। তাহার পাশ্বে কিঞ্চিৎ দুরে জনৈক বৃদ্ধ মহাব্ৰাহ্মণ দাড়াইয়া আছেন, তখনও উচ্চশ্রেণীর ব্রাহ্মণগণ সকল সময়ে দর্শনস্বরূপ সুবর্ণ গ্রহণ করিতেন না, মহাব্ৰাহ্মণগণ শ্রাদ্ধাদির দান গ্রহণ করিতেন বলিয়া তাহাদিগের মহাব্ৰাহ্মণ অাখ্যা হইয়াছিল। মহারাজাধিরাজ গৌড়েশ্বর এই মহাব্ৰাহ্মণকে সুবর্ণ দান না করিলে অদ্য কোন ব্রাহ্মণ র্তাহার দান গ্রহণ করিবেন না। একজন দীর্ঘকায় গৈরিকধারী সন্ন্যাসী ধীরে ধীরে জনতা ভেদ করিয়া ঘাটের দিকে অগ্রসর হইতেছিলেন, র্তাহার উন্নত দীর্ঘ দেহ ও তেজোব্যঞ্জক মুখমণ্ডল দেখিয়া ভিক্ষুকগণ সড়য়ে পথ ছাড়িয়া দিতেছিল। সন্ন্যাসী ধীরে ধীরে ঘাটের নিকটে আসিলেন, তাহাকে দেখিয়া প্রতীহায়গণ অভিবাদন করিয়া পথ ছাড়িয়া দিল । তিনি ঘাটে আসিলে মহাধৰ্ম্মাধ্যক্ষ চন্দ্রনাথ শৰ্ম্মী ও ভাণ্ডাগরাধিকৃত রবিদত্ত ভূম্যবলুষ্ঠিত হইয়া তাহাকে প্রণাম করিলেন । পরমেশ্বর পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ সৰ্ব্বগৌড়েশ্বর শ্রীমান ধৰ্ম্মপাল দেব স্নান শেষ করির ঘাটের সোপানে দাড়াইয়। বস্ত্র পরিবর্তন করিলেন। রবিদত্ত স্বর্ণমুদ্র-পরিপূর্ণ বস্ত্রাধার তাহার হস্তে প্রদান করিলে মহারাজ পরিচারকের হস্ত হইতে গঙ্গাজল-পরিপূর্ণ সুবৰ্ণভূঙ্গর গ্রহণ করিয়া ভূমিতে জলধারা নিক্ষেপ করিয়া মহাব্ৰাহ্মণকে সুবর্ণ দান করিলেন। তাহ দেখিয়া R–1,ు [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড সমবেত তিক্ষুকগণ জয়ধ্বনি করিয়া উঠিল। তদন চন্দ্রনাথ শৰ্ম্ম ভূৰ্জপত্রে লিখিত শাসন লইয়া অগ্র হইগেন। এই সময়ে রজত মুদ্রার বস্ত্রাধার সমূ অন্তরাল হইতে নির্গত সন্ন্যাসী ধৰ্ম্মপাল দেবের সম্মু হইলেন। তাহাকে দেখিয়া গৌড়েশ্বর দণ্ডবৎ ভূত্ব পড়িয় তাহাকে প্রণাম করিলেন। সন্ন্যাসী গৌড়েশ্বরের হস্ত ধারণ করিয়া উঠা কহিলেন, “মহারাজাধিরাজ, অদ্য পুণ্যাহে সন্ন্য বিশ্বানন্দ ভিক্ষার্থ গৌড়েশ্বরের সমীপে উপস্থিত।” ধৰ্ম্মপ দেব ঈষৎ হাস্ত করিয়া কছিলেন, “প্রভু, এই গৌড়রাে এমন কি আছে যাহা আপনার অধিকারভুক্ত না আপনাকে অদেয় আমার কি আছে ?” “ধৰ্ম্ম, যাহা চাহিতে আসিয়াছি তাহ সহজসা নহে, অথচ তোমার সাধ্যায়ত্ত ।” “প্ৰভু, আপনি চাহিদার পূৰ্ব্বে তাহা আপন হইয়াছে।” “ধৰ্ম্ম, আমি তোমার নিকট একজন আশ্রয়হীনে জন্য আশ্রর ভিক্ষা করিতে আসিয়াছি, প্রবলের উৎপীড় হইতে দুৰ্ব্বলকে রক্ষা করিবার নিমিত্ত অনুরোধ করিে আসিয়াছি। তুমি কি আমার অনুরোধ রক্ষা করিবে ?" “প্ৰভু, আমি আপনার কথা বুঝিতে পারিলাম না তবে আtশ্রয়হীনকে অবশু আশ্রয় দিব, প্রবলের উৎপীড় হইতে যথাসাধ্য দূৰ্ব্বলকে রক্ষা করিবার চেষ্টা করিব কিন্তু আপনি কাহার কথা বলিতেছেন ?” “গৌড়েশ্বর, কান্যকুজরাজ স্বৰ্গীয় বজায়ুধের পু চক্রায়ুধ খুল্লতাতের চক্রান্তে সিংহাসনচু্যত এবং অত্যাচার ভয়ে পলারনতৎপর। চক্রায়ুধ আজ আশ্রয়ভিখার হইয়৷ গৌড়নগরে উপস্থিত, তুমি কি তাহাকে আশ্র দিয়া রক্ষা করিবে ?” “প্ৰভু, যুবরাজ চক্রায়ুধ লোকবিশ্রাত ভণ্ডীর বংশধর তিনি গৌড়নগরে আসিয়াছেন, তাহা ত আমি জারিতা ন । তিনি কোথায় ?” “নিকটেই আছেন, কিন্তু মহারাজাধিরাজ, তুমি অtশ্রয়দানে স্বীকৃত না হইলে তাহাকে এই স্থানে লইয় আসিব না ।” -