পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] তাহা মনে নাই। তাই বলিয়া কি বলিতে হইবে যে মদ্যপান করিয়াছি এই ব্যাপারটিই স্মৃতিতে নাই ? মদ্যপানের জন্য শারীরিক ব্যাধি ভোগ করিতে হইতেছে, আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থা শোচনীয় হইয়াছে। কখন কোন ব্যাধি হইয়াছে, কোন কোন দিন বিশেয আর্থিক কষ্ট হইয়াছে, কোন কোন দিন পরিবারের লোকদিগের প্রতি অত্যাচার করিয়াছি, তাহ স্মৃতিতে নাই বলিয়া কি বলিতে হইবে যে আমার যে দুৰ্গতি হইয়াছে তাহ আমি জানি না বা বুঝি না ? খাল্যকাল হইতে পাঠ আরস্ত করিয়া অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হুইয়াছি । বিস্তু কখন কোন পুস্তক পড়িয়াছি, কখন কোন অঙ্ক কষিয়াছি, কখন কোন শিক্ষক ও কোম্ সহাধ্যায়ী আমাকে সাহায্য করিয়াছে, কোন সালে কোন পরীক্ষা দিয়াছি ও তাহার কি প্রকার ফল লাভ কুরিয়াছি, তাহ মনে- নাই কিন্তু তাই বলিয়া কি বলিতে হইবে যে বহু খর্ব-পুরিশ্রম করিয়া লেখা পড়া শিখিয়াছি ইহাও ভুলিয়া গিয়াছি ? উপাসনাদি দ্বারা জীবনকে নিয়মিত করিয়া বৰ্ত্তমান অবস্থায় উপনীত ইয়াছি। কিন্তু কখন কোথায় নির্জনে উপাসনা করিয়াছি, কখন কোথায় কাহার সঙ্গে সজন উপাসনা করিয়াছি, কখন উপাসনার ফল কি প্রকার হইয়াছে, কোন দিন উপাসনা সরস হইয়াছে, কোন দিন নীরস হইয়াছে ; তৃত আলোচনাদি দ্বারা কখন কি প্রকার উপকার Yাভ করিয়াছি, কোন রিপুর সহিত সংগ্রাম করিয়া কথন sয়লাভ করিয়াছি, কখন বা পরাস্ত হইয়াছি ইত্যাদি বশেষ বিশেষ ঘটনা মনে নাই ; তাই বলিয়া কি বলিতে ইবে যে উপাসনাদি দ্বারা জীবন যে বৰ্ত্তমান অবস্থা প্রাপ্ত হইয়াছে, ইহা ও জানি না ? জীবনের প্রত্যেক টন স্মৃতিতে নাই বটে, কিন্তু ইহা জানি যে সাধনভজনের ষ্ট বা দুষ্ট প্রবৃত্তি পরিচালনার জন্ত বৰ্ত্তমানকালে জীবন এই প্রকার হইয়াছে ; ইহা জানি অতীত কালে যেমন * করিয়াছি, বৰ্ত্তমান সময়ে সেই, প্রকার ফল ভোগ রিতে হইতেছে। অতীত কালের সমুদয় ঘটনাই যে মনে থাকা আবশুক হিী নহে । বাল্যকালের আমি এবং অদ্যকণর আমি— জন্মান্তৰ্ববাদ >\లిపి , -鬱 • *. এই দুই আমি যে একই আমি তাহ অপরোক্ষ ভাবে স্মৃতিতে না থাকিতে পারে ; “কল্যকার আমি” এবং ‘আদ্যকার আমি একই আমি ইহা, স্মৃতি দ্বারা বুঝিলেই যথেষ্ট হইল। আর কাল পর্যন্ত যাইবারই বা আবশুক * কি ? ঠিক এই পূৰ্ব্বনিমিষের আমি এবং এই-নিমিষের আমি একই আমি এইটুকু জ্ঞানই যথেষ্ট। বাল্যকাল হইতে আরম্ভু করিয়া বর্তমান সময় পৰ্য্যন্ত এই ভাবেই আত্মা বৰ্দ্ধিত হইয়া এবং আত্মীর একত্ব অনুভব করিয়া আসিতেছে। প্রতি নিমিষেই আত্মা বুঝিয়া আসিতেছে “এই পূৰ্ব্বনিমিবে আমি এই প্রকার ছিলাম এবং এইনিমিযে সেই আমিই’ ‘এই অামি হইয়াছি।” স্মৃতি যদি এক-নিমিষের জীবনের সহিত পর-নিমিষের জীবনের সংযোগ স্থাপন না করিত তাহা হইলে জীবনের একত্বই থাকিত না । যদি স্মৃতি এই দুই নিমিষের আত্মার একত্ব অনুভব করিতে না পারে, তবে বলিতে হইবে এই দুই নিমিষের আত্মা দুইই ; প্রথম আত্মার মৃত্যু হইয়াছে এবং নুতন এক আত্মার জন্ম হইয়াছে। স্বতি প্রতিমুহূৰ্ত্তের আত্মার সমুদয় উন্নতি বহন করিয়া আনে বলিয়াই আমরা বুঝিতে পারি যে ভিন্ন ভিন্ন “ মুহূৰ্ত্তের আত্মা ভিন্ন ভিন্ন নহে। একই আয় ভিন্ন ভিন্ন মুহূৰ্ত্ত ভেদ করিয়৷ অগ্রসর হইতেছে ! আমরা এথানে ভিন্ন ভিন্ন মুহূৰ্ত্তে প্রকাশিত আয়াকে প্রথমে ভিন্ন ভিন্ন আত্মা বলিয়া কল্পনা করিয়া লইয়াছি, তাহার পর বলিতেছি এই সমুদয় ভিন্ন ভিন্ন আত্মা ভিন্ন ভিন্ন নহে ; ইহার একই। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আত্মা অবিভাজ্য । কেবল বুঝিবার সুবিধার জন্যই আত্মাকে এইভাবে কল্পনা করিয়া লওয়া হইয়াছে। এইরূপ কল্পনার সাহায্যে আরও কিছুদূর অগ্রসর হওয়া যাইতে পারে। জীবনের নির্দিষ্ট কোন অংশকে ১০০ ভাগে বিভক্ত করা যাউক । ইহার প্রথম অংশকে প্রথম আত্মা, দ্বিতীয় অংশকে দ্বিতীয় আত্মা, তৃত্বীয় অংশকে তৃতীয় আত্ম। এবং এইভাবে অগ্রসর হইয়। শততম অংশকে শততম আত্মা বলিব। প্রথম আত্মা ও দ্বিতীয় আত্মা যে একই আত্ম, স্মৃতি তাহ বলিয়া দিবে ; এই প্রকারে স্থতির সাহায্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় আত্মার একত্ব, তৃতীয় ও চতুর্থ