পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>巴& এ ঘটনা কেৰিয়াও পুনর্জন্মবাদী বলতে পারে না যে স্মৃতিভ্রংশ হইলেও জীবনের একত্ব থাকে । আমর। ত বুঝিতেছি যে একত্ব ত থাকেই না, বরং স্মৃতির অভাবে এক আত্ম৷ বহুভাগে বিভক্ত হইয়া থাকে। সুতরাং এ দৃষ্টান্ত দ্বারাও পুনর্জন্ম প্রমাণের সুবিধা হইল না। স্মৃতিভ্রংশমূলক বু্যাধি রহস্যময় ; ব্যাপারটা কি এবং ইহার কারণ কি, তাহ"এখনও নিঃসন্দেহরূপে নির্ণয় করা যায় নাই—বিষয়টি এখনও অজ্ঞাত ; পূৰ্ব্বজন্মও অজ্ঞাত বিষয়। এক অজ্ঞাত বিষয়কে অপর এক অজ্ঞাত বিযয় দ্বার। প্রমাপ করিবার যে প্রয়াস তাহ বিফল প্রয়াস । একত্ব জ্ঞান না থাকিলেও চলে । কেহ কেহ বলেন—“শনির পুনর্জন্ম হইল—ইহার অর্থ ইহা নহে যে রবি দ্বিতীয় শনি হইবে বা শনির আত্মজ্ঞান রবিতে প্রাদুভূত হইবে । মৃত্যুর সময় শনির আত্মজ্ঞানই বিনষ্ট হইয়া যায় কিন্তু জীবনের আর সবই থাকিয়া যায় এবং এই-সমস্ত দিয়াই রবির জীবন গঠিত হয়। মৃত্যুর সময়ে শনির সমুদয় কৰ্ম্ম ও কৰ্ম্মফল, সমুদয় গুণগ্রাম আধ্যাত্মিক শক্তি ও অবস্থা থাকিয়া যায় এবং তাহাই রবির জীবনে কাৰ্য্য করিতে থাকে। ইহাই জন্মান্তরের অর্থ।” - ( ক ) শনির গুণকৰ্ম্মাদি দ্বারা রবির জীবন গঠিত হয়,— আত্মা যেন ঘটী বাটি। ঘট ভাঙ্গিয়া গেল—সেই ভাঙ্গ৷ ঘটী দিয়া কিংবা তাহার সহিত নূতন মাল মসল্ল৷ মিশাইয়া একটা নুতন ঘটী প্রস্তুত হইল। জড়বস্তুবিষয়ে এপ্রকার ঘটনা ঘটিতে পারে কিন্তু অধ্যাত্মবিষয়ে ইহার বিপরীত কথাই সত্য। একটি ঘটী বিনষ্ট হইবে ন। অথচ সেই ঘটী দ্বারা অপর ঘটী গঠন করা হইবে ইহা অধস্তব ব্যাপার। কিন্তু একজনের জ্ঞান প্রেম পবিত্রভাদি বিনষ্ট ন হইলেই এই সমুদয় দ্বারা অপরের জীবন গঠন করা সস্তব। তোমার জ্ঞান প্রেমাদি যতটুকু ব্যক্ত, ততটুকুই আমার জীবনে কাৰ্য্য করে। এই সমুদয় যতটুকু প্রকাশিত হয়, ততটুকুই আমরা গ্রহণ করিতে পারি। যাহা অব্যক্ত তাহা থাকিয়াও নাই। একজন જાજ-બલિદાસ’, ૭૨ • [ >8* ऊi१, २ १४ আমাদের শিক্ষক হইয়া অসিলেন, এক সময়ে তাহা .জ্ঞান ছিল, কিন্তু এখন তাহ লুপ্ত হইয়াছে ; ইহা দ্বারা f আমাদের কোন উপকার হইবে ? প্রত্যেক আধ্যাত্মিৰ বস্তু বিষয়েই ইহা সত্য । তুমি জগতে জ্ঞান বিলা। প্রেম বিলাও—তোমার জ্ঞান প্রেম বাড়িবে বই কমিে ন, অথচ জগৎ তোমার জ্ঞান ও প্রেম পাইয়া লাভবা হইবে । o তাহার পর যখন লোকের মৃত্যু হয় তখন তাই গুণকৰ্ম্মাদি প্রাকত উপায়েই এই সংসারে থাকিয়া যায় হোমার, সেক্ষপিয়ার, কালিদাস, সক্রেটিস, প্লেটে এরিষ্টটলু, ক্যান্ট, হেগেল, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ প্রভৃংি মহাত্মাগণের মৃত্যু হইয়াছে। কিন্তু ইহঁর জগতে যাহ দিয়া গিয়াছেন, তাহ অমর হইয়। রহিয়াছে নাদির সা ভারত আক্রমণ করিল, রক্তস্রোতে দেশ ভাসিয়া গেল ; কেহ অনাথ, কেহ অনাথ হইল দেশের দুর্গতির সীমা রঙ্গিল না। এখন নাদির জীবিতই থাকুক, বা মৃতই হউক, জগতে তাহার কৰ্ম্ম রহিয় গিয়াছে। নাদির ইহলোক হইতে অপস্থত হইয়াছে কিন্তু তাহার গুণকৰ্ম্ম রহিয়া গেল । নাদিয়ের মৃত্যুর পর কেবল পৃথিবীতেই তাহার গুণকৰ্ম্ম থাকিয়া যায় এবং ইহ। ভিন্ন আর কিছু থাকে না, ইহ। . আমরা বলিতেছি না। পরে আমরা দেখাইব যে পুনৰ্ব্বার মানবরূপে জন্ম লাত না করিয়াও নাদির আত্মচৈতন্য সহ গুণগ্ৰাম লইয়া বৰ্ত্তমান থাকিতে পারে । এখানে আমাদিগের বক্তব্য এই যে মানবের জীবি তাবস্থাতেই তাহার গুণকৰ্ম্ম সংসারে থাকিয়া যায় এবং মৃত্যুর পরও প্রাকৃতভাবেই ইহ সমাজের নরনারীর উপর কার্য্য করে ; এবং ইহা ও বলিতে পারি মানব আত্মচৈতন্ত ও গুণকৰ্ম্ম লইয়। পরলোকে বাস করিতে থাকে। সুতরাং কৰ্ম্মফল ভোগের জন্য জন্মান্তর কল্পনা অনাবশুক । মৃত্যুর সময়ে মানবের গুণকৰ্ম্মাদি আত্মচৈতন্য হইতে পৃথক হইয়া অতি-প্রাকৃত ভাবে বাজাকার প্রাপ্ত হয়, থমার সেই বীজ ব্যক্তিবিশেষের অন্তরে প্রবেশ করিয়া তাহার জীবনকে নিয়মিত করে, এপ্রকার কল্পনা করিয়া কোন লাভ নাই।