পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] “সত্য সত্যই বহু মানব অদ্য এখানে সম্মিলিত হইয়াছে, অবিলম্বেই তাহাদিগকে দেথিতে পাইবে।” উভয়ে পুনরায় অগ্রসর হইতে অগ্রস্ত করিলেন, কিয়দুর অগ্রসর হইয়া একটি অন্ধকারময় কক্ষে প্রবেশ করিলেন, কিন্তু প্রবেশ করিয়াই পূৰ্ব্বদিনের মত দ্বার হারাইয়া গ্নেল, মনে হইল গৃহের চারিদিকে ইষ্টকময় প্রাচীর, তাহাতে প্রবেশের কোন উপায় নাই। এই সময়ে দুরে নগরতোরণে রজনীর দ্বিতীয় যামের মঙ্গলবাদ্য বাজিয়া উঠিল, দেবমন্দিরসমূহে মধ্যরাত্রির আরত্রিকের শঙ্খ ঘণ্টার ক্ষীণধ্বনি আসিয় তাহাদিগের কর্ণে প্রবেশ করিল। তোরণের বাদ্য শেষ হইবামাত্র অন্ধকার হইতে কে জিজ্ঞাসা করিল, “তোমরা কে ?” সন্ন্যাসী উত্তর করিলেন, “আমি চক্ররাজ বিশ্বানন্দ ।” “আর কে ?” "গৌড়েশ্বর মহারাজাধিরাজ ধৰ্ম্মপালদেব।" “স্বাগত ।” ● নীরব নিস্তব্ধ অন্ধকার ভেদ করিয়া করুণ কোমল কণ্ঠে ক্ষীণ সঙ্গীতধ্বনি উঠিয়া গৃহ পূর্ণ করিয়া ফেলিল, ধৰ্ম্মপালের মনে হইল বহুদূরে বাম কণ্ঠে সঙ্গীত ধ্বনিত হইতেছে। সঙ্গীত শেষ হইল, অন্ধকার হইতে পুনরায় জিজ্ঞাসা হইল, “চক্ররাজ বিশ্বানন্দ ও গৌড়েশ্বর ধৰ্ম্মপাল, তোমরা কি চাহ ?” “বণিক মণিদত্তের সম্পত্তি ।” সহসা তীব্র শীল আলোকে কক্ষ উদ্ভাসিত হইয়৷ উঠিল । ধৰ্ম্মপালদেব দেখিলেন পূৰ্ব্বে র্তাহারা যে কক্ষে আসিয়াছিলেন, আজিও সে কক্ষে দাড়াইয়া আছেন । গৃহের এক পাশ্বে দেবপ্রতিম, তাহার পশ্চাৎ হইতে নীল আলোক আসিতেছে এবং প্রতিমার সম্মুখে তাহদিগের পূর্বপরিচিত কুঞ্জপৃষ্ঠ শীর্ণকায় খৰ্ব্বাকৃতি বৃদ্ধ দাড়াইয়া আছে। কক্ষ আলোকিত হইলে বৃদ্ধ পুনরায় কহিল, “স্বাগত ” তাহার পর নতজাকু হইয়া ধৰ্ম্মপালদেবকে প্রণাম করিল, বিশ্বানন্দের দিকে চাহিয়াও দেথিল না। বৃদ্ধ উঠিয়া দাড়াইয়া কহিল, “মহারাজাধিরাজ, দীনের অপরাধ মার্জন করুন, মহাসঙ্গীতির আদেশে আপনাকে অন্ধকারে রাখিতে বাধ্য হইয়াছিলাম। অদ্য আর্য্যাবর্ত ও দাক্ষিণাত্যের ভট্টারক আর্য্যমহাসঙ্গীতি ধৰ্ম্মপাল .Nురి

  • * ^_* ヘ。

ভট্টারকের সহিত সাক্ষাৎ করিবার জন্য অপেক্ষা করিতেছেন। আপনি এই পথে আসুন।” ধৰ্ম্মপাল ও বিশ্বানন্দ অগ্রসর হইলেন, কিন্তু তাহদিগকে অধিকদূর অগ্রসর হইতে হইল না, তাহাদিগের সম্মুখে চিত্রপটের ন্যায় কক্ষের একদিকের প্রাচীর সরিয়া গেল। ধৰ্ম্মপাল বিক্ষিত হইয়। দেখিলেম সম্মুখে আলোকমালায়সজ্জিত বিস্তৃত কক্ষ, তাহাতে অৰ্দ্ধবৃত্তাকারে দণ্ডায়মান শতাধিক মুণ্ডিতশীর্ষ ভিক্ষু, কক্ষমধ্যে গৃহতলে সুবর্ণনিৰ্ম্মিত বেদী এবং তাহার উপরে একটি ক্ষুদ্র চৈত্য, একখানি পুস্তক ও একটি বুদ্ধমূৰ্ত্তি। ধৰ্ম্মপাল ও বিশ্বানন্দ সাষ্টাঙ্গে রত্নত্রয়কে প্রণাম করিলেন । তখন ভিক্ষু কমণ্ডলীর মধ্যস্থল হইতে একজন ভিক্ষু অগ্রসর হইয়া কহিলেন, “গৌড়েশ্বর, স্বাগত, ভারতবর্যের ভট্টারক আর্য্যমহাসঙ্গীতি আপনার দর্শনলাভের জন্য অদ্য এইখানে সমাগত ।” ● ধৰ্ম্মপালদেব ভূমিতে মস্তক স্পর্শ করিয়া ভিক্ষুগণকে প্রণাম কfরলেন, সঙ্গে সঙ্গে সমবেত বধীয়ান মহাস্থবিরগণ ভূমিষ্ঠ হইয়। গৌড়েশ্বরকে প্রণাম করিলেন । ধৰ্ম্মপাল তাহা দেখিয়। অত্যন্ত বিস্মিত হইলেন। পুৰ্ব্বেক্ত ভিক্ষু অগ্রসর হইয়া ধৰ্ম্মপালের হস্তধারণ করিলেন ও র্তাহাকে লইয়া বেদীর নিকটে আসিলেন এবং কহিলেন, “গৌড়েশ্বর, ত্রিরত্ন স্পর্শ করিয়া শপথ করুন অদ্য যাহা দেখিবেন বা শুনিবেন তাহা কখনও জনসমাজে প্রকাশ করবেন না।" ধৰ্ম্মপাল ত্রিরত্ন স্পর্শ করিয়া শপথ করিলেন। তখন বৃদ্ধ ভিক্ষু দূরে সরিয়া দাড়াইয়৷ কহিলেন, “গৌড়েশ্বর আমি মহাসঙ্গীতির স্থবির বুদ্ধভদ্র, আপনার সম্মুখে যাহারা দণ্ডায়মান আছেন, ইহারাই আর্য্যাবর্তে ও দক্ষিণাত্যে বৌদ্ধসত্তেঘর নেতা। অদ্য একটি বিশেষ উদ্দেশু সাধনের জন্য আমরা এইস্থানে সম্মিলিত হইয়াছি। কিছুদিন পূৰ্ব্বে গৌড়বাসী বণিক মণিদত্ত রাঢ়ে গঙ্গাতীরে আপনাকে তাহার অতুল সম্পত্তি দান করিয়াছিল, কেমন ?” --

    • ई ।” “আপনি ও চক্ররাজ বিশ্বানন্দ কিছুদিন পূৰ্ব্বে মণিদত্তের ধন গ্রহণ করিতে আসিয়াছিলেন ?”