পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bఆ8 “ši !" “তখন সত্তেঘর আদেশে এই বৃদ্ধ আপনাকে কহিয়াছিল যে আপনি এখন ধন পাইবেন না, উপযুক্ত হইলে পাইবেন ?” “#ị t" “অদ্য কান্যকুজের নিরাশ্রয় রাজকুমারকে অtশ্রয় দিয়া আপনি মণিদত্তের উত্তরাধিকারী হইবার যোগ্য হইয়াছেন । দুৰ্ব্বলের অধিকার প্রবলের গ্রাসমুক্ত করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া আপনি যে মহত্ত্ব প্রদর্শন করিয়াছেন, স্থবিরগণ তাহ হইতে বুঝিতে পারিয়াছেন যে মণিদত্তের উত্তরাধিকার আপনার হস্তে অপব্যয় হইবে না। গৌড়েশ্বর, আর্য্যাবৰ্ত্তে সদ্ধৰ্ম্ম লুপ্তপ্রায়, বঙ্গে ও লাটদেশে শাক্যরাজকুমারের ধর্মের চিহ্নমাত্র আছে, তাহাও ধ্বংসোন্মুখ। দক্ষিণাপথে অনার্য্য হীনযান প্রচলিত, সেস্থানেও মহাযানের আদর নাই। সদ্ধৰ্ম্ম লুপ্তপ্রায়, সদ্ধক্ষ্মীমাত্রেরই বাসন যে জীব জন্মবন্ধনমুক্ত হইয়৷ প্রকৃত নিৰ্ব্বাণ লাভ করে। মহারাজাধিরাজ হর্ষের তমুত্যাগের পর হইতে আর্য্যাবর্তে সদ্ধৰ্ম্ম অবলম্বনহীন । মহাসঙ্গীতি তদবধি আশ্রয় অনুসন্ধান করিতেছেন। আর্য্যাবৰ্ত্তে বৈগুগণ সদ্ধৰ্ম্মাতুরাগী, সদ্ধৰ্ম্মানুসারে পুত্রহীন বৈপ্তের সম্পত্তি সদ্ধৰ্ম্মের সেবায় ব্যয় হয়, সুতরাং মণিদত্তের সম্পত্তি মহাসঙ্গীতির সম্পত্তি। মহাসঙ্গীতি বহু বিবেচনা করিয়া স্থির করিয়াছেন ষে এই সম্পত্তি যদি সদ্ধৰ্ম্মের সেবায় ব্যয় হয়, তাহ হইলে তাহারা তাহ আপনার হস্তে সমপণ করিতে সন্মত ।” “সদ্ধৰ্ম্মের সেবা কি ?” “বেীদ্ধের রক্ষণ ।” “সদ্ধৰ্ম্ম রক্ষা করিতে হইলে অভ্যন্ত ধৰ্ম্মের উৎপীড়ন আবগুক নহে ত ?” “al to “তাহ হইলে আমার কোন আপত্তি নাই।” “গৌড়েশ্বর-সমীপে মহাসঙ্গীতির আর একটি নিবেদন আছে।” “কি ?” 鬼 “গৌড়েশ্বর সদ্ধৰ্ম্মনিরত, পরাক্রান্ত ও ন্যায়পরায়ণ । মহাসঙ্গীতি অনুরোধ করিতেছেন যে গৌড়েশ্বর সমগ্র প্রিবাসী—সমগ্রহায়ণ, ১৩২১ • ভারতবর্ষে অত্যাচারপীড়িত সদ্ধক্ষ্মীর রক্ষার ভার গ্রহণ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড করুন।” “সানন্দে গ্রহণ করিলাম ।’’ “দ্বিতীয়বার বিবেচনা করুন।” “কোন বাধা দেখিতেছি না।’ “তৃতীয়বার বিবেচনা করুন।” “দৃঢ়প্রতিজ্ঞ"হইলাম।” ধৰ্ম্মপালের কথা শেষ হইবামাত্র সমবেত স্থবিরমণ্ডলী ও বুদ্ধভদ্র পুনরায় ধৰ্ম্মপালকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিলেন । তখন বুদ্ধভদ্র পুনরায় কহিলেন, “মহারাজাধিরাজ, সত্য রক্ষার জন্য পুনরায় শপথ করিতে হইবে। বলুন, আমি মহারাজাধিরাজ গোপালদেবের পুত্র, পরমেশ্বর, পরমসৌগত পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ গৌড়েশ্বর ধৰ্ম্মপাল রত্নত্রয়কে স্পর্শ করিয়া প্রতিজ্ঞা করিতেছি যে অদ্য হইতে সদ্ধয়ের রক্ষায় ও সেবায় জীবন উৎসর্গ করিলাম।” ধৰ্ম্মপাল বুদ্ধভদ্রের উক্তি পুনরুচ্চারণ করিলেন। শপথ শেষ হইলামাত্র সঙ্গীতধ্বনি উথিত হইল, সঙ্গে সঙ্গে শ্রেণীবদ্ধ ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীগণ কক্ষে প্রবেশ করিয়া ত্রিরত্ন ও ধৰ্ম্মপালকে বারক্রয় প্রদক্ষিণ করিলেন । সঙ্গীত শেষ হইলে বুদ্ধভদ্র ত্রিশরণ মন্ত্র উচ্চারণ করিলেন, বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, ধৰ্ম্মং শরণং গচ্ছমি, সত্তঘং শরণং গচ্ছামি । সকলে ত্রিশরণমন্ত্র উচ্চারণ করিয়া রত্নত্রয়কে প্রণাম করিলেন। তখন বুদ্ধভদ্র কহিলেন, “মহারাজাধিরাজ, ভাণ্ডারে আসুন।" ধৰ্ম্মপাল অগ্রসর হইয়াছেন এমন সময়ে দুরে নগরতোরণে চতুর্থর্যামের মঙ্গলবাদ্য বাজিয়া উঠিল, দেবালয়ে দেবালয়ে আরত্রিকের শঙ্খ ঘণ্টা ধ্বনিত হইল। ধৰ্ম্মপাল বিশ্বানন্দকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “প্ৰভু, এখন কত রাত্রি ?” সন্ন্যাসী কহিলেন, “রাত্রি শেয হইয়াছে।” বুদ্ধভদ্র, বিশ্বানন্দ ও ধৰ্ম্মপাল ভাণ্ডারে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন ভাণ্ডার শূন্ত । ধৰ্ম্মপাল বিস্মিত হইয় জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহাস্থবির, মণিদত্তের ধন কোথায় ?” বুদ্ধ মহাস্থবির হাসিয়া কহিলেন, “তাহা জগদ্ধাত্রীর ঘাটে নৌকায় প্রেরিত হইয়াছে, নৌকা প্রাসাদে লইয়া যান।” ( ক্রমশঃ ) শ্রীরাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।