পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>述)● প্রথম ইংরেজ দুই কোমরে হাত দিয়া পিছনে পিছনে রীতিমত দৌড়াইতে আরম্ভ করিল। টং টং ! টং টং ! তাহার তিনজনে প্রকাণ্ড ভূড়ির তার অবহেলা করিয়া তিনটি ব্যঙ্গচিত্রের মতন মূৰ্ত্তিমান হাস্যরসের অবতারণ করিয়া ছুটিয়া চলিতে লাগিল । ট্রেন ছাড়িয়া দিল । তাহার। তাহাদের কামরায় লাফাইয়। লাফাইয়। উঠিয়া পড়িল । তথন সেই ইংরেজ দুঙ্গন তাহাদের মাথা হইতে টুপি খুলিয়া উচু করিয়া ধরিয়া নাড়িতে নাড়িতে তিন বার চীৎকার করিয়া উঠিল —হিপ হিপ হুরে । হিপ হিপ হুরে । হিপ হিপ হুরে । তারপর তাহার। গম্ভীর ভাবে একে একে দুবুইয়ের ডাহিন হাত ধরিয়৷ নাড়িয়া দিল, এবং আপনাদের জায়গায় গিয়া পাশাপাশি খুব গম্ভীর হইয়া বসিয়া রহিল। চারু বন্দ্যোপ:ধ্যায় । কবরের দেশে দিন পনর প্রথম দিবস-পেটসৈয়দ, কাইরে। মিশরে পদাৰ্পণ করিলাম । খালের প্রায় শেষ সীমায় বন্দরের এক ঘাটে উচ্চ মঞ্চের উপর একটি প্রকাণ্ড মুৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত । সুয়েজ খালনিৰ্ম্মাতা ফরাসী এঞ্জিনীয়র লেসেછાત્ર જાવાર્મિષ્ઠાફાર প্রতিমূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। পোর্টসৈয়দ মিতা গুই নূতন স্থান—খাল কাটা হইবার পূৰ্ব্বে বোধ হয় ইহার অস্তিত্ব ছিল না । এক্ষণে নান৷ জাতির এবং নানা ভাষাভাষীর বাস । গ্রীকদিগের সংখ্যা খুব বেশী। নামিব মাএ রেজিষ্ট্রেশন আফিসে নাম লিখাইতে লইয়া গেল এবং পাশপোর্ট অফিসের লোকেরাও নাম ধাম লিথিয় দিতে বলিল , তার পর শুল্কগুহ, এথানে অনেকক্ষণ কাটাইতে হইল। বাক্স খুলিয়া কৰ্ম্মচারীরা সমস্ত জিনিষ তন্ন তন্ন করিয়। পরীক্ষা করিল। একজন সহযাত্রীর বাকৃসে নানা প্রকার "কিংখাব এবং রেশমী ও সোনালি দ্রব্য ছিল । ইনি ইউরোপে বিক্ৰী করিবার জন্য প্রবাসী—মগ্রহায়ণ ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড তাঙ্গাদের . এগুলি সঙ্গে আনিয়াছেন কিন্তু মিশরে বেচিবেন না । কাজেই মিশরবাসীরা ইহঁার নিকট শুল্ক আদায় করিতে পারে না। কিন্তু পোটসৈয়দ বন্দর হইতে মিশরের ভিতরে এগুলি লইয়া যাইতে অমুমতি পাইলেন না । তিনি যে মিশরের ভিতর এই সমুদয় বস্তু বেচিবেন না তাহার প্রমাণ কি ? সুতরাং শুস্ব-গৃহের কৰ্ম্মচারীর। তাহাকে এই জিনিষগুলি আrলকৃজাtলয়। বন্দরে এখনই স্বনামে পাঠ|ইয়া দিতে বাধ্য করিল। আলেকৃজান্দ্রিয় হইতেই আমরা মিশর ত্যাগ করিব—এইরূপ ইহাদিগকে বলিয়াছিলাম । নূতন দ্রব্য আমদানী করিলেই বন্দরে শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু নিজ ব্যবহারের কোন জিনিষের উপর কর বসাইবার নিয়ম নাই। ব্যবসায়ের সামগ্রীর উপরই শুল্ক আদায় করা হইয় থাকে । পোর্টসৈয়দে নূতন কিছু দেখিবার নাই। সাধারণ পাশ্চাত্য ফ্যাসনের দোকান, হোটেল ইত্যাদি প্রধান। দুইটি মাত্র হিন্দু দোকান আছে । আমরা সহরের ভিতর প্রবেশ করিলাম । দেখিলাম কলিকাতার বড়বাজারের সৌধগুলি এবং বোম্বাই নগরের বড় বড় “চ’ল” (Chawl) সমূহের ন্যায় এখানকার অট্টালিকাসমূহ আকাশে মাথ৷ তুলিয়াছে। অধিকাংশই তিনচারিতলবিশিষ্ট । গৃহগুলি পৃথক পৃথক সন্নিবিষ্ট ও প্রস্তরনিৰ্ম্মিত, প্রায়ই নূতন । রাস্তাগুলি বেশ প্রশস্ত থটখটে ও পরিষ্কার । একটা মসজিদ দেথা গেল। ভারতবর্ষের মসজিদ হইতে ইহার নিম্মাণপ্রণালী কিছু স্বতন্ত্র। একটিও গৰুজ নাই। চতুষ্কোণ গৃহের পূর্বপ্রাচীরের মধ্যস্থলে একটি উচ্চ স্তস্ত রহিয়াছে । আগ্রার তাজমহলের চারিকোণস্থ স্তস্ত অথবা দিল্লীর কুতবমিনার প্রভৃতির ন্তায় এই স্তস্ত দুইতিনতলবিশিষ্ট । উচ্চতায় মসজিদের ত্রিগুণ। মসজিদের পশ্চাতেই একটি বিদ্যালয় । ১২টার সময়ে দেখিলাম মসজিদের ভিতর মুসলমানের পুর্বদিকে মুখ করিয়া নমাজ পড়িতেছে, কারণ মক্কা এখান হইতে পুৰ্ব্ব দিকে। অনতিদূরে ভূমধ্যসাগর। সম্মুখস্থ রাস্ত হইতে সমুদ্রের জল ও তরঙ্গ দেখা যায় । মসজিদ হইতে উত্তর দিকে যাইয়া সমুদ্ৰ দেখিতে পাইলাম । পুরীর সমুদ্র-কুলে বালির রাস্তা যেরূপ