পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৬ - - ! আমরা এই দুলভ উপগ্রহণটি দেখিবার জন্য পূৰ্ব্ব হইতেই উদ্‌গ্ৰীব হইয়। ছিলাম, এবং ২১ কাৰ্ত্তিক নির্দিষ্ট সময়ের পুৰ্ব্বেই তাড়াতাড়ি আফিসের কাজ সারিয়া বাটা আসিয়া দেখিলাম যে ষ্ট্যাণ্ডার্ড টাইমের ৩ ঘঃ ৩৫ মিঃ হইয়৷ গিয়াছে সুতরাং তখন ভেদরগু হইয়াছে । অবিলম্বে দূরবীক্ষণসংযোগ আত্নস্ত করিয়া দিলাম। আমাদের ৩ ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত দূরবীণে এই বুধাদিত্য ভেদযোগ অতি চমৎকার দেখা গিয়াছে । দুরবাণে দৃষ্ট স্বৰ্য্যমণ্ডলে আমাদের দক্ষিণ পাশ্বের নিয়ে ভেদারস্থ হইয়াছিল । একটি দুয়ানীর ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ বুধগ্রহ কেমন ধীরে ধীরে সূর্য্যের পরিধি হইতে প্রায় ৩ ইঞ্চি ভিতর দিয়া উপরের দিকে গমন করিতে লাগিল, সে দু শু অভিনব ও মনোরম। স্বৰ্য্যাস্ত পর্য্যন্ত আমরা উহা দেখিতে লাগিলাম। বুধ তাহার গম্য রেখার অৰ্দ্ধাংশ পর্যন্ত যাইবার পূৰ্ব্বেই অস্ত হইয় গেল, সুতরাং অন্ত দেখা আমাদের ভাগ্যে অণর ঘটিল না। বঙ্গদেশের অথবা ভারতবর্ষের অন্ত কোন স্থান হইতে আর কেহ এই বুধাদিত্য ভেদযোগ দেখিয়াছেন কি না জানি না, তবে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার কর্তৃপক্ষগণ যে এই ঘটনা দূরবীক্ষণযোগে দেখিয়াছেন এরূপ অকুমান হয় । এই বুধ দিত্য ভেদযোগ দেখিয়া বিশ্বাস হয় যে এই পঞ্জিকার গণনা শ্রেষ্ঠ এবং ইহার আধুনিক পাশ্চাত্য জ্যোতিষের মতেই গণনা করিয়৷ থাকেন। এই বুধা দত্য ভেদযোগ দেখিতে গিয়৷ সূৰ্য্যমণ্ডলের ঠিক নিঃদিকে দুইটি বিশাল সৌর কেতু (Solar spot ) দেখিয়াছি, উহাদিগকে এখনও কিছুদিন দেখ। ধাইবে । শ্রীরাধাগোবিন্দ চন্দ্র। জ্যোতিষদপণ ও আকাশের গণপ ( সমালোচনা ) অধ্যাপক শ্ৰীঅপূৰ্বরচন্দ্র দত্ত মহাশয় প্রথম পুস্তক, এবং শধতীন্দ্রনাথ মজুমদার বি, এল দ্বিতীয় পুস্তক লিখিয়াছেন । জ্যোতিষ দর্পণে ২১২ । ১৬ পৃষ্ঠা, আকাশের গল্পে ১৯৬পৃষ্ঠা আছে। ছুইখানিরই প্রবাসী—অগ্রহায়ণ ১৩২১ ' [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড অীকার প্রকার, বিষয়-আশায় প্রায় এক । জ্যোতিষদপণের বিষয়,— আকাশমণ্ডল, সূৰ্য্য সৌরজগৎ পৃথিবী চন্দ্র বুধ শুক্র মঙ্গল গ্ৰহকঙ্কর বৃহস্পতি শনি ইন্দ্র বরুণ ভচক্র ও রাশিচক্র, গ্রহণ, ধূমকেতু উল্কাপিণ্ড ও উল্কাস্রোত, নক্ষত্রমণ্ডল ও নক্ষত্রঞ্জাতি, ছায়াপথ সৌরজগতের গতি । আকাশের গল্পের লি ষয়,—এহ্মাণ্ড, মাধ্যাকর্ষণ, দূরবীক্ষণ বর্ণীক্ষণ ফটোগ্রাফ, সেীবজগৎ, স্বৰ্য্য চন্দ্র জোয়ার ভাট ভোট ?] গ্রহণ, বুধ শুক্র পৃথিবী মঙ্গল, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রহ, বৃহস্পতি শনি ইউরেনাস নেপচুন ( নেপচুন ], ধূমকেতু উন্ধ, নক্ষত্রের সংখ্যা শ্রেণী দূরত্ব গতি মণ্ডল পুঞ্জ, পরিবর্তনশীল অস্থায়ী ও সুগল নক্ষত্র, রাজস্থৰ্য্য ], নীহারিক, ছায়াপথ, জগতের পরিণাম । অতএব “গল্পে” জ্যোতিযের মনোহারী বিষয় কিছু অধিক আছে । ইহাতে দৃষ্টি অংশ অধিক, “দপ৭ে” গণিত অধিক । দুইই কিন্তু প্রথম শিক্ষার্থীর ঘোগ্য, ও গল্প অনেক স্তলে বালপাঠ্য। দ্বইতেই আমাদের জ্যোতিষের কিছু কিছু উল্লেখ আছে। মাধ্যাকর্ষণ সম্বন্ধে একটু থাকিলেও গল্পের প্রতি সাধারণ পাঠক অধিক আকৃষ্ট হইবেন । দুইএরই মলাট একরকম, কিন্তু কাগজ ছাপা, বিশেষতঃ চিত্র অধম । দর্পণের কিছু ভtল, কিন্তু বৃহস্পতি শনির যে প্রতিকৃতি দেওয়া হইয়াছে ৩াহ আজিকালি সাজে না। চন্দ্র মঙ্গল প্রভূতির প্রতিকৃতি দেওয়া হয় নাই ; যেমন-তেমন চিত্র দেওয়া অপেক্ষা না দেওয়াই ভাল । কারণ পাঠক শিশু নহে বে সে ক এ করাত দেখিতে পাইলে ক মনে রাখিবে । এখন জ্যোতিষ বলিতে ফল-জ্যোতিষ বুঝাইয়া থাকে। জ্যোতিষ-কল্প ক্রম, জ্যোতিষ-রত্নাকর জ্যোতিষ-সারাবলী প্রভূতি ফলগ্রস্থের সহিত জ্যোতিষ-দপণ নামে বেশ মিশিয়া যাইতে পারে। গ্রন্থকারও বিজ্ঞাপনে লিখিয়াছেন, “কালক্রমে ভারতবর্ষে ফলিত জ্যোতিষই একমাত্র জ্যোতিৰ্ব্বিদ্যা নামে পরিচিত হইতে লাগিল ।” যখন এ আশঙ্ক! অttছ তখন জ্যোতিৰ্ব্বিদ্যা নাম রাখিলে মন্দ হইত না । গ্রন্থকার পরে লিথিয়াছেন, “ভারতবর্ষে এযাবৎ আধুনিক জ্যোতিৰ্ব্বিদ্যা বিষয়ক কোন বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয় নাই । এই অভাব বিদূরণ করাই বর্তমান গ্রন্থের ( জ্যোতিষদর্পণের ] উপেগু।” ভারতবর্ষে হয় নাই বলতে একটু অতিশয়োক্তি ঘটিয়াছে। ভারতবর্ষের কোথায় কি পুস্তক প্রকাশিত হইতেছে, ৩াহার সংবাদ আমার অজ্ঞাত ; কিন্তু দেখিতেছি বঙ্গদেশেই আকাশের গল্প, বোধ হয়, এক বৎসর পূৰ্ব্বে প্রকাশিত হইয়াছে । মনে হইতেছে, বিজ্ঞাপনে দেখিয়াছি, আকাশ-কাহিনী নামের আর একখানা বহি প্রকাশিত হইয়াছে। সেখানা দেখি নাই, তাহার বিষয়-আশয় জানি না । নাম হইতে অনুমান হয়, আকাশের গল্পের তল্য হইবে । আকাশের গল্প—এ নামটাও ভাল লাগিতেছে না । গল্প জল্প ত এক, কাল্পনিক মিথ্যা প্রবন্ধ i আকাশের গল্প কিন্তু গল্প পণ্ডে, গুজব লহে, জ্যোতিষ্কের বিবরণ । আকাশের গল্প— আকাশসম্বন্ধীয় গল্প, ধেমন বাঘের গল্প। ঐযুক্ত রাখালচন বণ্যোপাধ্যায় “পাবণের কথা” লিখিয়াছেন । বহিখানির নাম হইতে মনে হইয়াছিল, পাষণসম্বন্ধীয় কথl (a book on patrology )। কিন্তু দুই এক পৃষ্ঠা পড়িবার পর বুঝিলাম, পাষাণ কথক বলিয়া তাহার কথা এবং যদিও নিজের সম্বন্ধে দুই এক কথা বলিয়াছে, পরের, মানুষের সম্বন্ধেই বেশী বলিয়াছে। সার্থক নামের গুণে পাঠক জোটে । পুস্তকের নামে কুহেলিকার আবরণ যুক্তিযুক্ত নহে । জ্যোতিব-দপণ সম্বন্ধে আরও কিছু লেখা অবিশ্বক মনে করিতেছি । কারণ এই গ্রন্থ বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষৎ নিজ-প্রচারিত