পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२@ 8 l তাহারা ব্যবসাতে নিপুণ । তথাপি, রাষ্ট্রীয় কাৰ্য্য নিরাহ, সাহিতা, বিজ্ঞান, দর্শন, অন্তবর্ণণিজ্য, বহিব ণিজ্য, শিল্প, কুষি, প্রভৃতি বিযয়ে আফগানরা পাশ্চাত্য বা প্রাচ্য শক্তিশালী কোন জাতির সমকক্ষ ত নহেষ্ট, কাছাকাছি ও যায় না । দেশের সমুদয় লোককে জ্ঞান দিতে হইবে । তাহার উপায়স্বরূপ সকলকে লিখিতে পড়িতে শিখাইতে হইলে । লেখাপড়া শিখিবার উপায়। এখন পৃথিবীর প্রায় সমুদয় সভ্য দেশে প্রত্যেক বালক ও বালিকাকে লেখা পড়া শিখিতে বাধ্য করা ভারতবর্মের কোন কোন দেশীয় রাজার রাজ্যে এইরূপ নিয়ম প্রবর্তিত হইয়াছে। বৃটিশশাসিত ভাবতে এখনও এরূপ নিয়ম প্রবর্তিত হয় নাই। তাহা হইলে দেশের সকল লোককে লেখাপড় শিখাইবার উপায় চিন্ত৷ আমাদিগকে করিতে হইত না । লেখাপড়া শিখাইবার সূৰ্ব্বপ্রধান উপায় স্কুল পাঠশালা স্থাপন। বালকবালিকাদের শিক্ষার জন্য দিব:কালীন বিদ্যালয়ই যথেষ্ট ও প্রশস্ত । কিন্তু কুমক ও অপর শ্রমজীবী-শ্রেণীর সন্তানের যেখানে যেখানে বাপমাকে উপার্জনে সাহায্য করে, বা স্বাধীনভাবে রোজগারের কাজ করে, তথায় তাহীদের জন্ঠ নৈশ বিদ্যালয় অবশ্যক। তদ্ভিন্ন প্রাপ্তবয়স্ক রোজগারী লোকদের জন্য সৰ্ব্বত্র নৈশ বিদ্যালয় প্রয়োজন । দিবাকালীন বিদ্যালয় গবর্ণমেণ্ট নিজে স্থাপন করিতে পারেন, অপর কর্তৃক স্থাপিত এরূপ বিদ্যালয়ে সাহায্য দিতে পারেন, কিম্বা এরূপ বিদ্যালয গবর্ণমেণ্টের সাহায্যব্যতিরেকে স্থাপিত ও পরিচালিত হইতে পারে । বিদ্যালয় স্থাপনের চেষ্টা যথাসাধ্য করা কর্তব্য । কিন্তু আজকাল বিদ্যালয়ের ঘরবাড়ী এবং বাহ আসবাব ও সরঞ্জামের আদর্শ বড় উচু করা হইয়াছে। যেরূপ বন্দোবস্ত করিলে ও নিয়ম পালন করিলে বিদ্যালয় হইতে ছাত্রগণকে সরকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়, তাহাও পূৰ্ব্বাপেক্ষা খুব দুঃসাধ্য করা হইয়াছে । এই কারণে বিদ্যালয় স্থাপন যথেষ্ট শীঘ্র যথেষ্ট সংখ্যায় হইবার আশা কম। হয় । লেখাপড়া শিখান যাইতে পারে, তাহ। প্রত্যেক দেশহিতৈষীর চিন্তনীয় ও অবলম্বনীয়। প্রত্যেক লিখনপঠনক্ষম ব্যক্তি অস্থতঃ একটি নিরক্ষর বালক, বালিকা বা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে লিখিতে পড়িতে শিখাইবার ব্রত গ্রহণ করুন। উপায়ের ভার তাহার উপর । তিনি যদি শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে পাঠাইয় তাহার বেতন পুস্তকাদি দিয়া তাহাকে শিখাইতে পারেন, ভাল ; নতুবা অন্ত উপায় তাহাকেই করিতে হইবে । ব্রতটি দেখিতে সামান্য ; কিন্তু ইহা প্রত্যেক শিক্ষিত ব্যক্তি গ্রহণ করিলে দেশে সুবিস্তৃত গভীর শুভপরিবর্তন উপস্থিত হইবে । কোথাও কোথাও পৰ্য্যটক শিক্ষকের ব্যবস্থা আছে। যে-সকল গ্রামে বিদ্যালয় নাই, শিক্ষক তথায় কয়েক মাস থাকিয়া পড়িবার বয়সের বালক বালিকাদিগকে লিখিতে ও পড়িতে শিখাইয়া অার এক স্কুলবিহীন গ্রামে চলিয়া যাইবেন। এইরূপ অনেক শিক্ষক থাকিলে খুব কাজ হয়। ইহঁাদের দারিদ্র্যব্রতধারী হওয়া আবশ্যক । লোকশিক্ষার জন্য কয়েকখানি উৎকৃষ্ট সুলভ পুস্তকের প্রয়োজন । তাহ কেবল কাগজ, ছাপাই ও সেলাইয়ের ব্যয় লইয়। বিক্রী করা আবশুক ; স্থলবিশেষে বিনামূল্যেও দেওয়া দরকার । বিষয়টি এরূপ একান্ত প্রয়োজনীয় যে লোকহিতব্ৰত চিন্তাশীল ব্যক্তিমাত্রেরই চিন্তার সাহায্য প্রার্থনীয় । সহজে অবলম্বনীয় সদুপায়ের কথা কেহ খুব সংক্ষেপে লিখিয়া পাঠাইলে আমরা তাহ ছাপিতে চেষ্টা করিব। তুরস্ক-সাম্রাজ্যে শিক্ষার ব্যবস্থ৷ ভারতবর্ষে শিক্ষিত লোকদের মনে এইরূপ একটি ধারণ আছে যে ইউরোপের সকল দেশের মধ্যে তুরস্কের অবস্থা নিকুণ্ঠতম, এবং তথায় শিক্ষার ব্যবস্থাও নিকৃষ্টতম । ইহা সত্য কি না জানি না। তুলনায় তুরস্কে শিক্ষার অবস্থ যাহাই হউক, প্রকৃত অবস্থাটি কি তাহা এনসাইক্লোপীডিয়া ব্রিটানিক নামক মুপ্রিসিদ্ধ বিশ্বকোষ এবং ষ্টেটস্ম্যান্স ইয়ার-বুক হইতে আমরা সঙ্কলন করিয়া দিতেছি ।