পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭ બરફn | (5) লোকে যাহাকে শাস্তি বলে, সেই শাস্তির উদ্দেশ্য কি ? প্রথমতঃ শাস্তি দেওয়া হয় প্রতিহিংসা প্রবৃত্তি চরিতার্থ করিবার জন্ত । তুমি আমার দাত ভাঙ্গিয়াছ । অ{চ্ছ। আমিও তোমার র্দা ত ভাঙ্গিয় দিব । কিন্তু রাহু’ তোমার, দাত ভাঙ্গিয়াছে বলিয়া কি তুমি কেতুর দাত ভাঙ্গিবে ? যতই বলন কেন, রাহু রাহুই এবং কেতু কেতুই । ‘রাহুই মরিয়া কেতু হইয়াছে’–এই বিশ্বাসে যদি রাহুর জন্য কেতুকে শাস্তি দাও তবে তাহা ন্যায়সঙ্গত হইবে না। আমার কুকুর তোমার কুকুরকে কামড়াইয়াছে — এজন্য তুমি আমার দাত ভাঙ্গিয় দিলে—ইহাও বরং সমর্থন করা যায়—ব্রাহুর জষ্ঠ কেতুকে যে দণ্ড দিলে তাহা সমর্থন করা যায় না । কারণ উভয়ের একত্ব কাল্পনিক। পুনর্জন্মবাদীদিগের মীমাংসায় মনে হয় তোমার যখন দাত ভাঙ্গিয়াছে, তখন একট। দাত ভাঙ্গিয় দিতেই হইবে, সে দাত কেতুরই হউক ব! স্বর্য্যেরই হউক । ( एं ) শাস্তি দেওয়ার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য পাপীকে পাপপথ হইতে নিবৃত্ত করা। কোন অপরাধের জন্য একজনকে শাস্তি দেওয়া হইতেছে তাহা তাহাকে জানান দরকার । নতুবা সে ব্যক্তি সেই অপরাধ হইতে নিবৃত্ত হইবে কিরূপে ? মনে কর আমি অন্ধ হইয়। জন্মগ্রহণ করিলাম । এখন জিজ্ঞাস্য পূৰ্ব্বজন্মে কোন পাপ করিয়াছিলাম যেজন্য আমাকে চক্ষুহীন হইতে হইল ? যদি জানি এই পাপ করিয়াছিলাম, তবেই এজন্মে অমি সাবধান হষ্টতে পারি। অজ্ঞানতাপ্রস্থত অপরাধের জন্তও অনেক সময়ে শাস্তি দেওয়া হয়। এসমুদয়স্থলে কোন অপরাধের জন্য এই শাস্তি দেওয়া হইল তাহা না জানাইলে উপায়ই নাই। মনে কর পূৰ্ব্বজন্মে একজন লোক আমার পিতার চক্ষু নষ্ট করিয়াছিল এবং এইজন্য আমি সেই ব্যক্তির চক্ষু নষ্ট করিয়া দিয়াছিলাম। আর একব্যক্তি আমার মাতার চক্ষু নষ্ট করিয়া দিয়াছিল, কিন্তু আমি তাহাকে ক্ষমা করিয়াছিলাম। এজন্মে আমাকে চক্ষুহীন হইয়৷ জন্মগ্রহণ করিতে হইয়াছে। আরও মনে কর চক্ষুবিনাশসংক্রান্ত জন্মান্তর-বাদ e ৩২৩ অপুরাধের শাস্তি চক্ষুবিনাশ । এখানে, “আমার চক্ষুর বিনাশ কেন হইল ? পিতার শক্রকে চক্ষহীন করিয়াছিলাম বলিয়া, মা মাতার শক্রকে ক্ষমা করিয়াছিলাম বলিয়া ? কোন কোন সমাজে প্রতিহিংসা কর। ধৰ্ম্ম, কোন কোন •সমাজে ক্ষমাই ধৰ্ম্ম । যদি তুমি প্রতিহিংসাকে ধৰ্ম্ম মনে কর, তবে বলিবে ক্ষমার জন্যই আমি অন্ধ হইয়াছি ; আর যদি ক্ষমাকেই ধৰ্ম্ম মনে কর, তবে বণিতে হইবে প্রতিহিংসার জন্য আমি অন্ধ হইয়াছি। শিক্ষার জন্য যদি শাস্তি হয়, তবে আমাকে বলিয়। দিতে হইবে কেন শাস্তি হইতেছে । পুনৰ্জ্জন্মবাদের দেধি এই যে ইহা শাস্তির অবশ্যকতা স্বীকার করে, কিন্তু শাস্তির কারণ জানে না, সুতরাং শাস্তির কারণ বলার অবিশু কুত। স্বীকার করে না । ( i ) শাস্তি দিবার তৃতীয় উদ্দেশ্য জনসমাজকে পাপ হইতে নিবৃত্ত করা । দ্বিতীয় উদ্দেশুবিষয়ে যাহা বলা হইয়াছে এখানেও তাহাঁই বক্তব্য । কোন এক ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হইল ; জগৎবাসী দেখিল,• এই প্রকার কার্য্য করিলে এই প্রকার শাস্তি হয়, তখন লোকে সেই পাপ হইতে নিবৃত্ত হইতে পারে। অনির্দিষ্ট কোন ঘটনার জন্য যে-সে একটা শাস্তি দেওয়া হইলে লোকে নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট কোন পাপ হইতে বিরত হয় না। শাস্তি সম্বন্ধে যেরূপ, পুরস্কার সম্বন্ধেও তেমনি । পুরস্কারের কোন মূল্যই থাকে না, ইহা দ্বারা জীবনগঠনের কোন সাহায্যই হয় না, যদি না জানা যায় কেন এই পুরস্কার দেওয়া হইল । সুতরাং দেথা যাইতেছে জন্মাত্তরবাদ দ্বারা শাস্তি ও পুরস্কারের রহস্য উদঘাটিত হইতেছে না, কিন্তু বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলে এবং ‘কেহ কাহারও পর নয় ইহা স্বীকার করিলে সমুদয়ই মীমাংসিত হইয়া যায় । এখন জন্মাগুরবাদীদিগের কয়েকট। যুক্তির বিষয় আলোচনা কর। যাউক । অধিকাংশ যুক্তিই চিন্তাশীল ও খ্যাতনামী লেখকগণের গ্রন্থ হইতে গৃহীত হইয়াছে।