পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] * কেশব – প্রভু, নূতন মহারাজ কি এতদিন কোন সংবাদই লয়েন নাই ? উদ্ধব – কেশব, নূতন মহারাজের গোকর্ণের সংবাদ লওয়া একটা রোগের মধ্যে দাড়াইয়া গিয়াছে। গৌড় হইতে প্রায়ই সংবাদ লইবার জন্য দুত আসে। মহাদেবীও মধ্যে মধ্যে দুর্গস্বামিনীর নিকঠ দাসী পাঠাইয়া থাকেন— বলবে।— ইহারা কি বিবাহের সংবাদ লইয়। আসে ? উদ্ধব।— ন বলদেব, তুমি বুঝিলে না, আমি ইহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিয়া দেখিয়াছি, ইহারা মহারাজের বিবাহের কোন সংবাদই রাখে না । কেশব – প্রভু, তবে ইহারা কি করিতে আসে ? উদ্ধব – কেশব, তুমি যখন এখনও বুঝিতে পারিলে না, তখন তুমি কিছুতেই বুঝিতে পরিবে না। ইহাব পূৰ্ব্বে যুবরাজের নিকট হইতে আসিত, এখন নুতন মহারাজের নিকট হইতে আসে। কখনও বা কিছু উপহার লইয়। আসে, কখন বা মহাদেবীর নিকট হইতে পত্র আনে, আর কখনও কখনও তীর্থযাত্রার ছলে গোকর্ণ দেখিয়া যায় । বলদেব। — কাহার জন্ত পত্র লইয়া আসে ? উদ্ধব। — মহাদেবীর নিকট হইতে দুর্গস্বামিনীর নামে পত্র আসে । বলদেব। — ওঃ ! উদ্ধব – তবে শুনিয়াছি, যাঙ্গার রাঢ়ে তীর্থভ্রমণ করিতে আসে তাহারা নাকি দুই একবার যুবরাজের নিকট হইতে পত্র লইয়া আসিয়াছিল । কেশব – যুবরাজ কি দুর্গস্বামিনীকে পত্র লিথিয়াছিলেন ? উদ্ধব।— কেশব, বয়সদোষে তোমার বুদ্ধিশুদ্ধি লোপ হইয়া গিয়াছে, যুবরাজের পত্র চন্দন-কুসুম-মুবাসিত চীনাংশুকের আবরণের মধ্যে আসিয়াছিল। বলদেব।-- বটে ? কেশব – প্রভু, আমি ত কিছুই বুঝিলাম না, রাজামহারাজার পত্র ত চিরকালই বহুমূল্য আবরণে আসিয়৷ থাকে, রাজধানী হইতে আর কবে তালপত্রের আবরণে পত্র আসিয়াছে ? מאמ ধৰ্ম্মপাল - 98w) উদ্ধব।— কেশব, তোমার এ-সকল কণা বুঝিয়া কাজ নাই। P এই সময়ে খৰ্ব্বাকার কৃষকায় একজন বর্শাধারী সেনা আসিয়া উদ্ধবঘোষকে অভিবাদন করিল ও কহিল, “প্রভূ, এইমাত্র গৌড় হইতে একখানি নৌকা আসিয়াছে, সেই নৌকায় একজন স্থূলকায় ব্রাহ্মণ আসিয়াছেন, তিনি কোন মতে নৌকা হইতে তীরে নামিতে পারিতেছেন ন৷ ” উদ্ধবঘোষ বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন "কেন কেদার ?” কেদার – প্রভু, বর্ষার পরে নদীর জল কমিয়া গিয়া কাদা বাহির হইয়া পড়িয়াছে, তিনি কাদায় নামিতে ভরসা পাইতেছেন না । প্রভু, ঠাকুরটির দেহখানি নিতান্ত স্তন্ম নয়, তিনি কাদায় নামিলে বোধ হয় হাতীর মত তাহাতে বসিয়া যাইবেন । উদ্ধব।— লোকটি কে কেদার ? কেদার – পরিচয় ত জিজ্ঞাসা করি নাই প্ৰভু ! তবে আকার দেখিয়া বোধ হয় যে তিনি একজন বড়লোক । উদ্ধব – কি রকম ? কেদার – প্রতু, একপানি গরুরগাড়ী-বোঝাই । উদ্ধব।-— চল কেশব, রাজধানী হইতে কে লোকটা আসিল দেখিয়া আসি । মহাদেবী বোধ হয় মহারাজের বিবাহের দিনস্থির করিয়া ব্রাহ্মণ পাঠাইয়াছেন । সকলে বৃক্ষচ্ছায়া ত্যাগ করিয়া নদীর দিকে অগ্রসর হইলেন এবং নদীতীরে পৌঁছিয়া দেখিতে পাইলেন যে পুরুষোত্তম শৰ্ম্ম কাতরনেত্রে চতুর্দিকে কৰ্দমাক্তভূমি নিরীক্ষণ করিতেছেন। উদ্ধবঘোষ তাঁধে দাড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “আপনি কে ?” “পুরুষোত্তম ।’’ “মহাশয়ের নিবাস ?” "গৌড় নগরে ।” “কি উপলক্ষে হইয়াছে ?” “উদ্দেশ্য অতি বিস্তৃত, ব্যক্ত করিতে অধিক সময়ের আবখ্যক । তীরে নামিয়া সুকল কথা নিবেদন করিব । সম্প্রতি তীরে নামিবার পথনির্দেশ করিতে পারেন কি ? রাঢ়দেশে. মহাশয়ের আগমন