পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] কঁiথীর নীহার', পাবনার ‘সুরাজ’, চট্টগ্রামের ‘জ্যোতিঃ সকলেরই ঐ একমুর । ‘সুরাজ' বলেন— -পাবনা জেলার শস্যের অবস্থ। অতীব শোচনীয়। উপর জমীর সমুদয় ধান্য বৃষ্টি-অভাবে পূৰ্ব্বেই নষ্ট হইয়াছে। নীচু জমিতে যেসৰ ধtষ্ঠ আছে ত্বtহাদের গোড়ীর অতি সামান্ত জল আছে ; ঐ জল রৌদ্র-তাগে উত্তপ্ত হইয়া শস্যগুলিকে নষ্ট করিতেছে।” মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমও তুল্যাবস্থ। ‘মুর্শিদাবাদ হিতৈষী’তে প্রকাশ-- “অধিকাংশ স্থানের ধান্ত শুকাইয়া যাইতেছে ।" ‘বীরভূমবাৰ্ত্ত।’ বলেন-- “বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকগণের একমাত্র ভরসাস্থল ধান্তের অবস্থা যেরূপ শোচনীয় হইয়াছে এরূপ অনেক দিল দেখা যায় নাই ।” "বাকুড়াদপণে’ও ঐ কথা— “জলাভাবে বিস্তর ধান্ত মল্লিয়াছে।” আসানসোলের ‘রত্নাকর" উহারই প্রতিধ্বনি করিয়৷ বলিতেছেন— “গত আশ্বিন মাস হইতে এই মহকুমায় একেবারেই বৃষ্টিপাত হয় নাই । ধান্যের অবস্থা অত্যস্ত শোচনীয় হইয়াছে। কোথাও কোথাও জল-অভাবে একেবারেই শুকাইয়া গিয়াছে।" এই অনাবৃষ্টির হস্ত হইতে পরিত্রাণের উপায় কি ?— একমাত্র উপায়—কৃত্রিম জলপ্রবাহ দ্বার। ক্ষেত্রগুলিকে সিক্ত কর। কিন্তু তাহতেও অনেকস্থলে নান। বাধাবিঘ্ন আছে। প্রমাণস্বরূপ ‘রত্নাকরে’র মন্তব্য নিয়ে প্রদত্ত হইল । “জলসেচনের উপযোগী পুষ্করিণী আদিও নাই যে, তাহা হইতে জল লইয়া প্রজার ধাস্থ্যাদি শস্য বfচাইবে । আবার যেখানে জলসেচনের উপযোগী পুষ্করিণী আছে সেখানে জমিদার অথবা পুষ্করিণীর মালিকের জলসেচন করিতে দিতেছে না । এমন কি, অতিরিক্ত জলকর লইয়াও জলসেচন করিতে না দেওয়ায় কৃষকগণকে মাথায় হাত দিয়া কঁাদিতে হইতেছে ;" এই দারুণ দুর্দিনে কৃষককুলকে বাচাইবার সামান্ত শক্তি ও র্যাহাদের আছে তাহারাও যদি এইভাবে বাকিয়া বসেন, তাহা হইলে আর গতি কি আছে ? জমিদার ও প্রজা দেশের অভিন্ন অঙ্গ, একথা যতদিন আমাদের মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে উপলব্ধি ন হইবে, ততদিন আয়ু থাকিলেও, কৃপণের দরিদ্র প্রতিবেশীর মত বা বৈদ্যহীন গ্রামের মত আমাদের বাচিবার পন্থ। থাকিবে না। জমিদার প্রজী, ধনী নিধনী একপ্রাণ হইলে কঠিন কাৰ্য্যও সমবেত চেষ্টায় সহজ হইতে পারে । নদীর বাধ, ইন্দারা, দীঘি, দেশের কথা 叠 ৩৬৯ ঝিল প্রভূতির সাহায্যে জলনিকাশের,যে বন্দোবস্ত হইতে পারে আমাদের আভিজাত্য বা 'রক্ষণশীলতা যদি তাহাকে আমল দিতে না চায় তাহা হইলে কাজেই কৃষকগণকে দেবতার দিকে চাহিয়া অনেক সময়ে ব্যর্থ.প্রতীক্ষায়ই প্রাণত্যাগ করিতে হইবে। কিন্তু তাহাতে কাহারই কল্যাণের আশা নাই ; কারণ, কৃষকের অবস্থার সঙ্গে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের অবস্থা একস্থত্রে গ্রথিত এবং এই দুই শ্রেণীকে ছাড়িয়া ধনী সম্প্রদায়ের পৃথক সত্তাও বেশি fদন তিষ্ঠিয় থাকিতে পারে না। কিন্তু এ সহজ কথাটা কে আর না বুঝে ? এ-সকল শুধু বোঝাবুঝির ব্যাপার হইলে, এতদিন কি আর কৃষকগণকে নিরক্ষর থাকিতে হইত, না জলগ্রহণের উপযোগী জলাশয় এতই দুলভ থাকিত, না কলিকাতার রাস্তায় জল দেওয়ার জন্য ব৷ ফায়ার ব্রিগেডের ব্যবহার্য্য নলের ন্যায় একটা লম্ব। পাইপ ও গম্প সরবরাহ করিয়া জলসেচনের বন্দোবস্ত করিবার লোক জুটিত না ? দুর্ভিক্ষের আনুসঙ্গিক নানা পীড়াও ইতিমধ্যেই এদেশে প্রতিষ্ঠা পাইয়াছে। তন্মধ্যে ম্যালেরিয়াই প্রধান । ম্যালেরিয়ার কারণ অসুসন্ধান করিবার জন্য ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে ডাক্তার ইলিয়টের তত্ত্বাবধানে গভর্ণমেণ্টের যে “এপিডেমিক্‌ কমিশন” বসিয়াছিল তাহার সভ্য ডাক্তার লিয়ন, এণ্ডারসন ও কর্ণেল হেগ বলিয়াছেন যে, দরিদ্রতাই এই রোগের একটি বিশেষ কারণ। কৃষকগণকে দরিদ্র রাখিয়া আমরা সমাজের চক্ষে ফাকি দিতে পারি, কিন্তু বিধ{ত যে বিভিন্ন উ {ায়ে তাহীদের সঙ্গে আমাদিগকেও যমালয়ের দিকে টানিতেছেন, মফঃস্বলের পত্রিকাগুলি একবাক্যে তাঁহারই সাক্ষ্য দিতেছে । এবিষয়ে গৗড়দুল্লাত’ অগ্রদূত হইয়া বfলতেছেন— “সহরে কলের ও ম্যালেরিয়ার ভীষণ প্রাপ্ত ভাব হওয়tয় লোকে বড়ই শঙ্কিত হইয়াছে । একে সমস্ত দ্রব্যই দুমুলা, তাহার উপর চিকিৎসার ব্যয় জোগান অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হইয়। উঠিয়াছে।” "যশোহর’ বলেন— 總 সহরে ম্যালেরিয়ার তাওবষু ঠ্য আরত হইয়াছে। & * * পল্লীর অবস্থা নাকি আরও ভীষণ । , চারমিহির’ বলেন— আমরা টাঙ্গাইল ও জামালপুরের নানা স্থান হইতে পুনরায় ম্যালেরিয়ার আক্রমণের সংবাদ পাইতেছি ।