পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-לףס\ লোক বাস্তবিক,স্বাধীনতা ভোগ করবেই, তাহ বলা যায় ন। স্বদেশী রাজা খুব প্রজাপীড়ক হইতে পারে। আবার এমনও হয় যে বিদেশী রাজার অধীন কোন কোন দেশের লোকের এরূপ কিছু অধিকার থাকিতে পারে যাহা স্বদেশীরাজার অধীন কোন কোন দেশের লোকদের নাই। অতএব “স্বাধীন” বা “পরাধীন” কথা দুটির দ্বারা বিচার না করিয়। রাষ্ট্ৰীয় অধিকারের দিকে দৃষ্টিপাত করা আবশুক । তজ্জন্য আমরা “স্বাধীন” বা “পরাধীন” কোন কথাই ব্যবহার না করিয়। ভবিযাৎ ভারতের আদর্শ সম্বন্ধে আমাদের আশ ও আকাঙ্ক্ষার কথা খুব সংক্ষেপে বলিতে চাই । মানুষের প্রত্যেকের শক্তির-বিকাশ, আনন্দ, সুবিধ। ও উন্নতির জন্য যেরূপ সুযোগ পাওয়া দরকার এবং যাহ। কিছু করা দরকার, তৎসম্বন্ধে কোন কোন দেশের লোকের নিজেদের যতটা হাত আছে, অন্য কোন কোন দেশের লোকদের ততটা নাই। আমাদের আশা ও আকাজক্ষ। এষ্ট ষে, ভারতের ভবিষ্যৎ অধিবাসীরা যে কোন দেশের লোকের সমান সুস্থ এবং দৈহিক ও আত্মিক শক্তিশালী হইবে, তাহদের জীবন যে কোন দেশের লোকের জীবনের ন্যায় আনন্দপূর্ণ হইবে, তাহদের নিজের উন্নতির জন্য তাহার। যাহা আবশ্যক মনে করিবে তাহ করিবার অধিকার ও যোগ্যতা তাহাদের থাকিবে, এবং মাকুষের পক্ষে নিজের ভাগ্যবিধাতা যতটা হওয়া সস্তব, তাহ। হইবে । ভারতের অধিবাসী বলিতে অমর। জাতি, বংশ ও ধৰ্ম্মনির্বিবশেযে ভারতজাত ও ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা সমুদয় নারী ও পুরুষকে বুঝি। ভবিষ্যৎ ভারতে আমরা কোন একটি শ্রেণীর পুরুষ বা নারীর প্রভুত্ব দেখিতে চাই না, কিম্ব নারীর উপর পুরুষের নিরঙ্কুশ প্রভুত্ব দেখিতেও চাই না। ইহাই আমাদের ভবিষ্যৎ ভারতের আদশ। ইহ। অপেক্ষ। খাট কোন অৱস্থাকে আমরা আদর্শ বলিতে পারি না, ইহা অপেক্ষ থাটি কোন জিনিষের চিন্তায় আমাদের আত্মা আনন্দ পায় না । ইহা ভবিষ্যতের কথা। ... কিন্তু ভবিষ্যৎ ধীরে ধীরে আসে, এবং আমরা এই যে মুহূর্তে লিখিতেছি, প্রবাসী—মাঘ, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড তাহার পর মুহুৰ্ত্তই ভবিষ্যৎ, অল্পক্ষণ পরেই তাহাই আবার অতীতে মিলাইয়া যাইতেছে। ভবিষ্যতের আদর্শ বাস্তবে পরিণত হইবে কি না, এবং কখন হইবে, তাহ কেবল ভবিষ্যদ্বংশীয়দিগের উপর নির্ভর করিতেছে না। এখন র্যাহারা বাচিয়া আছেন, বিশেষ করিয়। এখনও র্যাহাদের সম্মুখে দীর্ঘ জীবনপথ পড়িয়া রহিয়াছে, তাহণদের উপরও ইহা নির্ভর করে, এবং তাহারাও ইহার জন্য দায়ী। স্বপ্ন দেখার নিন্দ। আমরা করি না । স্বপ্নদেখার অবিশু্যক আছে । কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবমূৰ্ত্তি দিতে হইলে প্রজ্ঞা, একাগ্রতা, ত্যাগ ও কঠোর শ্রমের প্রয়োজন । ভাগ্যবান তাহার। যাহারা এই প্রয়োজন স্বীকার করে, এবং তদনুরূপ আচরণ করে । শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নতি এবং শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নতি যাহাতে হয়, তাহার আলোচনা করিবার জন্ত প্রতিবৎসর যেখানে কংগ্রেস হয় সেই সহরে একটি সমিতির অধিবেশন হয় । এবার মান্দ্রীজে ইহার অধিবেশন হইয়াছিল । বোম্বাইয়ের মাননীয় মনমোহন দাস রামজী ইহার সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হন। তিনি তাহার সুদীর্ঘ বক্তৃতায় অনেক সারগর্ভ কথা বলেন । র্তাহার মতে স্বদেশী আন্দোলনের ফলে কারখানার সংখ্যা বাড়িয়াছে, যৌথ কারবারের সংখ্যা বাড়িয়াছে এবং ব্যাঙ্কগুলির মূলধন বাড়িয়াছে। স্বদেশী প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ সফল ন হইবার কারণ, তিনি বলেন, বিশেযদক্ষ ( expert ) লোকের অভাব, বাণিজ্যিক বিষয়ে উচ্চতর ধৰ্ম্মনীতির অভাব, গবর্ণমেণ্টের ঔদাসীন্য, এবং বৈজ্ঞানিক শিক্ষার অভাব । শেষোক্ত অভাব, তাহার মতে, গবর্ণমেণ্টই প্রধানতঃ দুর করিতে পারেন। শিল্পের উন্নতির জন্য আজ কাল উচ্চ বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে কাজে লাগাইতে না পারিলে চলে না। এইজন্ত জার্মেনী প্রভূতি দেশে বহু বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ নূতন নূতন প্রণালী আবিষ্কারে নিযুক্ত আছেন । আমাদের দেশে গবর্ণমেণ্ট এইরূপ বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত করিয়া যদি বলিয়া দেন যে কোন কোন ব্যবসা কিরূপে এদেশে চলিতে পারে, তাহা হইলে শিল্পের