পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] গান পোহাল পোহাল বিস্তাবরী পূৰ্ব্ব-তোরণে শুনি বাশরী। . নাচে তরঙ্গ, তরী অতি চঞ্চল, এ কম্পিত অংগুক-কেতন-অঞ্চল, পল্লবে পল্লবে পাগল জাগল আলস-লালস পাসরি । উদয়-অচল-তল সাজিল নন্দন, গগনে গগনে বনে জাগিল বন্দন, কনককিরণঘন শোভন স্তন্দন, নামিল শারদ সুন্দরী। দশদিক-অঙ্গনে দিগঙ্গনাদল ধ্বনিল শূন্ত ভরি’ শঙ্খ সুমঙ্গল, চল রে চল চল তরুণ যাত্রীদল তুলি নব মালতীমঞ্জরী ॥ শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বজ্রাহত বনস্পতি ( গল্প ) > জমিদার কৃষ্ণগোবিন্দ বাবু নিজের হাতে বাস্তুদেবতা রাধাবিনোদের পূজা করিয়া ভোগ দিয়া ঠাকুরের প্রসাদ পাইয়া কাছারী-বাড়ীতে যাইতেছিলেন। যাইবার পথে দালানে আসিয়াই দেখিলেন তাহার গৃহিণী নিত্যকিশোরী একটি সুন্দর ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েকে কোলে করিয়া তাহার প্রফুল্ল শতদলের মতে মুখখানিতে অজস্র চুম্বন করিতেছেন। এই দৃশু দেখিয়া কৃষ্ণগোবিদের মনটিও বাৎসল্যের অমৃতরসে অভিষিক্ত হইয়া উঠিল ; তাহার ধনে পড়িল সে কতদিন তাহার এমনি একটি শিশুর জঙ্ক রাধাবিনোদের কাছে কত মানত কত পূজা করিয়াছিলেন ; তারপর প্রভুর দয়ায় তাহারই চরণধুলার বজ্ৰাহত বনস্পতি ՉԵ Տ A S SA SAS SJSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMeSAA AAAA AAAA SAAAAASA SSASAS SJSJSJAAAA মতে মুদয় এমনি একটি মেয়ে তাহদের শূন্ত কোণ ভরিয়াছিল, ব্যাকুল মনের ক্ষুধা মিটিয়াছিল, মরুভূমির সমান বাড়ীতে শিশুর হাসির ফুল ফুটিয়াছিল, কলধ্বনির অমৃতনিঝর ছুটিয়াছিল। সে র্তাহীদের তুলসীমঞ্জরী। তুলসীমঞ্জরী এখন বড় হইয়াছে ; অনেক খুজিয়া পরম বৈষ্ণব হরেকৃষ্ণ বাবুর সুপুত্র শচীদুলালের সহিত তাহার বিবাহ দিয়াছেন। তুলসীমঞ্জরী এখন পরের হইয়া গিয়াছে ; তবু ত তাহারা তাহাকে বেশি দিন চোখের আড়ালে রাখিতে পারেন না ; সে যে প্রভুর প্রসাদী নিৰ্ম্মাল্যের মতে, তাহদের নিঃসন্তান নিরানন্দ জীবনের প্রথম আশীৰ্ব্বাদ । তারপর একটি পুত্র তাহদের ঘর আলো করিয়াছে ; তাহার রূপে গুণে বিদ্যায় কুল অালো হইবে ; হয়ত দেশও আলো হইবে । সে তাহাদের বংশের দুলাল, বিপুল সম্পত্তির অধিকারী, সে র্তাহীদের অভিলাষ। আজ গৃহিণীর কোলে সুন্দর শিশুটিকে দেখিয়া নিজেয় সন্তানদের শৈশবের ছবি কৃষ্ণগোবিন্দের মনে পড়িয়া গেল ; মনে হইল, আহ ! এমনি আর একটি শিশু, প্রভু যদি আমাদের দিতেন ! কৃষ্ণগোবিন্দ অগ্রসর হইয়। গিয়া দুই বাহু প্রসারিত করিয়া বাৎসল্যভর •হাসিমুখে বলিলেন–গিরি, এটিকে আবার কোথায় পেলে ? নিত্যকিশোরী সস্নেহে শিশুর মুখচুম্বন করিয়া বলিলেন —আহা ! এ আমাদের ও-পাড়ার অখিল মিত্তিরের মেয়ে...... কাল এর মা মীর গেছে...... কৃষ্ণগোবিন্দ বাবুর মুখের স্নেহদ্র প্রফুল্লতা নিমেষমধ্যে ঘুচিয়া গেল, তাহার চক্ষুস্থির, তিনি গম্ভীরস্বরে বলিয়া উঠিলেন–গিন্নি, ওকে কোল থেকে শীগগির নামাও, তোমার জাত গেল...... নিত্যকিশোরী অকস্মাৎ স্বামীর ভাবপরিবর্তন দেখিয়৷ ভীত হইয়া বলিলেন—কেন গো, কি হয়েছে ? —ওকে তুমি কোলে নিয়ে চুমু খাচ্ছি ? —আহা ! কাল এর মা মারা গেছে ; অতবড় সংসারটায় একটা বিধবা বে। ছিল, সেটাও টিকল না, এই মাওড়। মেয়েটিকে দ্যাথে এমন লোক নেই, তাই আমি একে আনিয়ে নিয়েছি... --