পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার মোটেই ছিল না । জ্ঞানের উদয় অবধি সে কোনও বিশেষ নিয়ম ব গণ্ডার মধ্যে আবদ্ধ থাকতে পারত না । যে সময় তার • অন্ত অন্য ভাইরা লেখা পড়া করত, সে তখন মুক্ত আকাশের নীচে মাঠে মাঠে নদjর ধারে খোল প্রাণে গান গেয়ে বেড়াতে ভ{লব{স ত । যে তাকে (府সেই তাকে ভালবাসত। এই সুন্দর আত্মভোল৷ ছেলেটিকে দেখে পল্লীলারীরা তাকে কত আদর যত্ন করত, তাদের ঘরে সীমান্য যা থাবার থাকত তাকে খাইয়ে তারা কত আনন্দ পেত ; সে ও খুব আনন্দে তাদের আতিথ্য স্বীকার করে তাদের সঙ্গে কত গল্প করত, গান শোনাত । ক্রমে যত তার বয়স বাড়তে লাগল ততই এইরূপ খেয়াল বাড়ঙ্গুেগণ। মা বাপে বিস্তর (ઠછે. করে ও তাকে লেখাপড়ায় মনোধোগ দেওয়াতে বা কোনও কাজকর্মে নিযুক্ত করতে পারলেন না । একদিন বিকালে আমার একলা যমুনাতারে বসে ছিল । অস্তগামী স্থয্যের লাল আভা আকাশে প্রতিফলিত হয়ে বিবিধ বিচিত্র বর্ণের মেঘের স্বাক্ট করেছে । সাধাjসমীরণ সেবন করতে কত লোক নদী তীরে বেড়াতে এসেছে ও পরম্পর গল্প করতে করতে হেসে উঠছে । ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা চারিদিকে ছুটোছুটি করে খেলা করে বেড়াচ্ছে । অামার্ক্স নিস্তব্ধ হয়ে বসে এইসব দেখছিল । হঠাৎ পিছন থেকে কে এসে তার দুচোখ টিপে ধরণে। আমার বন্ধে “আর কে, নিশ্চয়ই জামার I ছড়ি, চোখ খোল " জামার তখন উচ্চহাস্ত করে? তাকে সজোরে এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে, আমীরও দ্রুত উঠে তার গল। টিপে দু-চারিটি ঘুসি উপহার দিলে । পরে দুজনেই হাসতে হাসতে এক জায়গায় বসে পড়ল ৷ জামার বলে “তোমায় যে এতক্ষণ কত খুঁজেছি তা বলতে পারি নে, কোন দিকে না পেয়ে শেষ এদিকে এলাম।” আমার এর উত্তরে কিছু না বলে হাসতে লগিল । তখন তার বন্ধু রাগ করে বঞ্জে “হাসলে ষে বড় ? কি দরকার সেটা একবার জিজ্ঞাসা করা হ’ল ন ?” আমীর বলে “ওর আর কি জিজ্ঞাসা করব, তোমাকে ত আমার জানা আছে ।” ৪র্থ সংখ্যা } দেওয়ানার কবর 8રલ . জামার বরে “না না তা নয়। সত্যু সত্য আজ তোমার বাব! আমায় সকলে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বল্লেন তোমাব বয়স হল, লেখাপড়াও ভাল করে শিখলে না, কাজ কৰ্ম্মেও মন দেল না, খালি রাষ্ট্রায়.রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে আর যত অনাস্থষ্ট কম পাগলামি করবে। ত। এরকম আর কতদিন চলবে ?" আমার বল্লে “আমি কি পাগল•? আর পাগলামি ব। আমি কি করে থাকি ? ওসব কথা ত পুরোনো হয়ে গেছে, ওর আর কি উত্তর আছে ? আমি ত কতদিন বলেছি যে ওসবে আমার মন বসে না তাই আমি কিছু করতে পাল্লুম না । বাবাকে বোলে। দাদার। ত সব মাসুম হয়েছে, তা হলেই হল। আমার দ্বারা যা হবে না তার জঙ্গে কেন তিনি কষ্ট পান ?” জামীর বিজ্ঞের মত মাথা নেড়ে বললে “তুমি ত জলের মত এ কথা বলে দিলে, তার প্রাণ কি তা বোঝে ? তুমি যখন শিশু, তোমার মা মারা গেলেন, তখন থেকে কত ধত্বে কত স্নেহে তিনি তোমায় মানুষ করেছেন তা ত জান ? তুমি এমন করে সংসারে উদাসীন হয়ে ঘুরে বেড়াও এতে তার কষ্ট হয় । আঙ্গ তিনি আম{য় ডেকে বল্লেল 'দেখ জামার, অামার এই মাথ-পাগলা ছেলেটিকে তুমি বুঝিয়ে সংসারী করবার চেষ্টা কর, ও ত তোমার কথা শোনে, তোমাকে খুব ভালবাসে, হয়ত তোমার কথা রাখতে পারে । তাকে পোলে যে তাকে ত খেটে খেতে হবে না ; কাজ কৰ্ম্ম ন করে, না করবে। তবে বিবাহ করুক সংসারী হোক এইটেই আমার শেষ জীবনের একমাএ কামনা !" আর আমিও বলি বয়েস ত তোমার কম হল না, এমন করে আর কতদিন কাটাবে ? বিবাহ করে সংসারী হও, বাপর্কে সুখী কর । আমরা সকলেই তা হলে খুশী হব ।” আমার কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থেকে গম্ভীরভাবে বলে “বিয়ে করতে আমার কোন আপত্ত্বি নেই, তবে এখন নয়, ধখন সে ইচ্ছা হবে অfর যাকে আমার প্রাণ চায় তাকে যখন পাব তখন বিয়ের কথা বিবেচনা করা যাবে।” জামীর তথন বিঘ্নিত হয়ে বল্পে “প্রাণ আবার তোমার কাকে চায় ? একথা কই এতদিন ত শুনিনি।”