পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] পরিহাস ( গল্প ) ( , ) বলুবাহাদুর পাহাড়িযু পাহাড়েই তাহার জন্ম, পাহাড়ই তাহার বাল্যকালের লীলাভূমি, পাহাড়ের উপর বেড়াইয়৷ বেড়াইয়া জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরিয়া বনের পাখী এরিয়া ধরিয়া বলবাহাদুর আজ এত বড় হইয়াছে। তাহার মনে পাহাড় ছাড়া অন্ত কোন স্থানের ধারণা বড় নাই, কারণ যদিও তাহার বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি তবু সে নিজের গ।" ছাড়া দেখিয়াছে শুধু দার্জিলিং । সমতল ভূমির উপর যে কোন মানুষ বসবাস করে এ কথা তাহার বিশ্বাসই হয় না। যাহারা অপেক্ষাকৃত তলদেশে বাস করে তাহদেরও যেন সে ঘৃণার চক্ষে দেখে । জিজ্ঞাসা করিলে কেমন অশ্রদ্ধাস্থচক কথায় বলে “ও নিচু-মা বৈঠত হয়।” কারণ তাহার বাস উচুতে। • পাহাড়ে বাস করিয়া, চারিদিকে আকাশস্পশী নীরব গম্ভীরমূৰ্ত্তি পাহাড় দেখিয়া দেখিয়া তাহার দেহ ও মন সেই রকমই উন্নত ও গম্ভীর। তাহার বাড়ীটি অতি ক্ষুদ্র কুটীর মাত্র। পাহাড়ের গায়ে ঠিক মাতার ক্রোড়ে শিশুর মত লাগিয়া রহিয়াছে। চারিদিকে বড় বড় সাল গাছ দিন রাত্রি হাওয়ায় সে" সো করিতেছে। বাড়ীর ধারেই একটা ঝরণা—কোন অজানা জলাশয় হইতে অবিশ্রান্ত ভাবে নিৰ্ম্মল জলরাশি বহন করিতেছে। পাহাড় প্রায় সব সময়েই মেঘে ঢাকা থাকে। যখন একটু পরিষ্কার হয় তখন সুৰ্য্যের আলোয় ঝরণার জল চকচকু করে আর সেই উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব বাহাদুরের ক্ষুদ্র কুটার-গবাক্ষে প্রতিফলিত হয়। এ সংসারে বাহাদুরের কেহ নাই—আছে কেবঙ্গ তাহার এক মাত্র সাত বৎসরের একটি মেয়ে । সে তাহার “নানী” । বাহাইর তাহার উন্নত বিশাল বুকের মাঝে তাহার বলিষ্ঠ দেহাবরণের মধ্যে যেটুকু দয়ামায়া রাধিত সে-সমস্তটুকুই এই নানীর জড়। জগতে সে কাহাকেও খাতির করিত ন—তাহার সহিত পরিহাস 、ヘヘヘヘヘヘヘ ヘヘく^ヘ-ヘヘヘヘヘーヘヘヘヘヘノ・ヘ/ *へ。ヘ-ヘペ_ヘンマ ہ ھ - ہر "A بریہ۔ بر ."عہ-N .۶۳ ـہ بـہ ، --مبر ۔ ©☾ ・ヘヘヘヘヘヘヘヘヘ% যদি কেহ কখনও চড়া কথা বলিয়াঁছে তবে আর তাহার মাথার ঠিক থাকিত না। একবার এক সাহেব এখানে চাশ বাগান দেখিতে আসিয়াছিল। " বলবাহাদুর তখন সেই বাগানের কুলির সর্দার ছিল। উগ্ৰমস্তিষ্ক সাহেব একদিন ক্রোধান্ধ হইয়া বাহাদুরকে মান্ধিতে উদ্যত হইয়- “ ছিল—কারণ তাহাকে সে তুলি করিয়া সেলাম করে নাই। সাহসী বলিষ্ঠ পাহাড়িয়া সে অপমান সঙ্কু করিল না। নিজের কোমর হইতে কুকরী টানিয়া বাহির করিল—সাহেব ত পলাইয়া বাচে। সেদিন হইতে বলবাহাদুর* চা বাগানের কাজ ছাড়িয়া দিল। এত উগ্র, এত কঠিন, তবু তাহfর “নানীর” কাছে তাহার কোমলতার শেষ থাকিত না। প্রচণ্ড পাবtণস্তুপের গভীরতম প্রদেশেও ঝরণার জলধারার মত তাহারও • দয়ার শেয থাকিত না। (*。) চায়ের বাগানে কাজ ছাড়িয়া দেওয়া অবধি বাহাদুর এখানে এক বাঙ্গালীর ভূত্যের কাজ করিতেছে । বাঙ্গার, বাবুট আত্মীয় স্বজন ছাড়িয়া এই দূর প্লাৰ্ব্বত্য প্রদেশে চা বাগানের কেরানীর কাজ লইয়া আসিয়াছেন—এখানে আধিয়া এই ভূত্যটিকে পাইয়া তিনি তাহাকে সম্পূর্ণ আপনার করিয়া লইয়াছেন। পাহাড়িয়ার কৰ্ম্মক্ষমতায় তিনি সস্তুষ্ট হইতেন, তাহীর আগ্রহ দেখিয়া প্রীত হইতেন, তাহার সরলতা ও সততা দেখিয়া তাহাকে ভাল বাসিতেন। বাহাইরও প্রাণপাত করিয়া প্রভুর সেবা করিত, তক্তিও করিত। সকাল ৭ টার সময় বলবাহাদুর বাবুর বাড়ী কাজে যাইত, দুপুর বেলা একবার খাইতে বাড়ী আসিত ; আবার যাইত, সন্ধ্যার সময় বাড়ী ফিরিত। ৰলবাহাদুর নানীকুে কোথায় পাইয়াছে তাহা কেহ জানে না, সে কখনও বিবাহ করে নাই। কেহ কেহ বলে উহাকে সে কুড়াইয়। পাইয়াছে। যাহা হউক সকলেই জানিত ষে “নানী” তাহার কন্যারও অধিক । বাহাদুরের কুটারখানি অতিশয় সাধারণ রকমের, পাতার ছাওয়া চালে কাঠের খুঁটির বেড়া দেওয়া। স্নেই কুঁড়েথানির ভিতর সে রাত্রিটুকু তাহার নানীকে বুকে লইয়া কাটাইত। ঘরের আসবাবপত্র বিশেষ কিছু নাই । রাধিবার আয়োজন কিছু আছে ।