পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬১২ প্রাচীরগুলি প্রায় সিড়ির মত ধাপধাপ। সকল পীরামিড়েরই প্রবেশঙ্কর উত্তরপ্রাচীরে । পীরামিড কবরের পাশ্বেই দেবালয় ও মন্দির ছিল । এক্ষণে তাহার ভগ্নাবশেযমাত্ৰ বৰ্ত্তমান । • পৗরামিড পাহাড়ের উপর দাড়াইয়৷ পূৰ্ব্বদিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিলে সমস্ত নাইল-উপত্যকার উর্ধ্বর কৃষিক্ষেত্র এবং মিশরের শস্যসম্পদ ও কাইরে-নগর দেপিতে পাওয়া शृंiप्र । একটিমাত্র পৗরামিড দেখিয়া পাহাড়ের দক্ষিণদিকে গেলাম। পাহাড়ের পাদদেশে প্রসিদ্ধ ফিঙ্কস (Sphinx) পূৰ্ব্বদিকে মুখ করিয়া অবস্থিত। এই ফিঙ্ক সের মুখ অন্যান্যগুলির ন্যায় মেষের মুখ নয়। ইহার শরীর সিংহের, মুথ নরপতির । আমাদের নরসিংহ অবতারের কথা স্মরণ করিলাম। ইহার লম্বী লম্বা কানদুটি হাতীর কানের মত সুবিস্তুত । স্ফিঙ্কসের দক্ষিণে একট। মন্দির—সম্প্রতি বালুকাপ্রোথিত । এই স্ফিঙ্কসের যথার্থ তত্ত্ব এখনও নিৰ্দ্ধারিত হয় নাই । বোধ হয় পীরামিডের কারিগরেরা সম্মুথে একট। সিংহ সদৃশ পৰ্ব্বতশৃঙ্গ দেখিয়া ইহার শিরোদেশে রাজমুখ তৈয়ারী করিয়া রাখিয়ছে, অবশ্য পরবত্তী কালে জনগণ ইহার মধ্যে নানা তত্ত্ব বাহির করিয়াছে ! সূৰ্য্যদেবরূপে এই মূৰ্ত্তি পূজাও পাইয়াছে । প্রাচীন মিশরীয়ের স্বকীয় ভৌতিক শরীর নান কৌশলে লোকচক্ষুর অন্তরাল করিয়া আবৃত রাখতে চেষ্টিত ছিলেন। প্রস্তর-সিন্দুকের ভি - রে মাfন্ম রাখিয়া তাহার ভিতর মণিমাণিক্য ইত্যাদি সমস্ত পার্থিব সম্পত্তি র্তাহার। পুতিয়া রাথিতেন । এই প্রস্তরসিন্দুকগুলিকে দস্থ্য তস্কর এবং শক্র নরপতিগণের আক্রমণ চাইতে রক্ষা করিবার জন্যই বিচিত্র কবর-নিৰ্ম্মাণ-বাতি উদ্ভাবিত হইয়াfছল । কিন্তু প্রাচীন কালেই কবর গুলির উপর দমু্যবৃত্তি অনেকবার অনুষ্ঠিত হইয়াছে, প্রায় কোন কবরই রক্ষা পায় নাই । নানা সময়ে নানা লোকেরা পরামিডের গাত্র ভেদ করিয়া, কবরের দ্বার বাহির করিয়া, পৰ্ব্বত-প্রাচীর খুদিয়া ফ্যারাওদিগের লুকায়িত ধনভাণ্ডার লুণ্ঠন করিয়াছে। দৈবক্রমে যেগুলি আজকাল আবিষ্কৃত হইতেছে তাহাদের প্রবাসী—ফাস্তুন, ১৩২১ { ১৪শ ভাগ, ২য় • মধ্যে কোন কোনটিতে দস্থাবৃত্তির চিহ্ন পাওয়া যায় ; কোন কোন কবর ঠিক প্রাচীন অবস্থায়ই রহিয়াছে । প্রাচীন মিশরের জনপদ, নরপতি, অট্টালিকা, দেবদেবী, মন্দির, মস্তাব ও কবর ইত্যাদি সম্বন্ধে একট। কথ। বিশেষ লক্ষ্য কারবার বিষয় ; প্রত্যেক জিনিষেরই প্রায় তিনটা করিয়া নাম । একটা মিশরীয়, একটা গ্ৰীক এবং একট। আরবী । আমর। আজকাল গ্রীক নামেই এই গুলির পরিচয় পাইয়। আসতেছি । গ্রীকের মিশরে রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর প্রায় সকল বিষয়েষ্ট মিশরীয় আদর্শ গ্রহণ করিয়াছিলেন । প্রাচীন মিশরের ধৰ্ম্ম, কলা, শিল্প, সমাজ ও বিদ্যা, কোন বস্তুই গ্রীকের বজ্জন করেন নাই । সকলই তাহার। গ্ৰীকসভ্যতার অঙ্গীভূত করিয়া লইয়াছিলেন । এই কারণে আলেকজাণ্ডারের পরবত্তী গ্রাকের মিশরীগ সভ্যতার সকলপ্রকার অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের নিকট বিশেষরূপেই ঋণ । কেবল তাঁহাই নহে—প্রাচীনতর গ্রীকেরাও মিশরে প্রভাব অগ্রাহ করিতে পারেন নাই । মিশরে ভ্রমণ করিবার জন্য প্রাচীন গ্রীসের কবি, দার্শনিক, ঐতিহাসিক, সকল শ্রেণীর লোকই আস৩েণ । হেরোডোটাস হইতে প্লেটে। পর্য্যস্ত সকলেই মিশরীয় বিদ্যালয়সমূহে ধৰ্ম্ম, সাহি •্য, দর্শন ও অন্যান্ত গুহাতত্ত্ব শিখয়া গিয়াছিলেন । ফলতঃ অনেকদিক হইতে প্রাচীন গ্রাসকে প্রাচীন মিশরের সপ্তানরূপে বর্ণনা ক: যাইতে পারে । এইজন্স দেখিতে পাই--আঞ্জ কালকার পণ্ডিতেরা মিশরের প্রত্নতত্ত্বের আলোচনায় এত উৎসাহী । প্রাচীন মিশরকে ইহঁারা “প্রাচ্য’ বা ‘এসয়াটিক" বলেন না। বরং প্রাচীন ইউরোপীয়সভ্য তার পথপ্রদর্শকরূপে ইহার মিশরকে সন্মান ক&িতেছেন । তাহ ছাড়া মেরী ও যীশুর লীলাভূমিরূপেও মিশর আধুনিক খৃষ্ঠানদিগের তীর্থক্ষেত্র । স্ফিঙ্কস্ হইতে বরাবর দক্ষিণদিকে গর্দভপৃষ্ঠে অগ্রসর হইলাম। লীবিয়পৰ্ব্বতের পাদদেশ দিয়া চলিতে লাগিলাম । খাটি মরুভূমি । ঈষৎ সুবর্ণ-রঞ্জিত বালুকার উপর দিয়া গর্দভ চলিতে লাগিল । বালুর মধ্যে ইহাদের খুর বসিয়া যায়। অথচ গর্দভ-চালকেরা আমাদের পাশ্চাত্য