পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●ግ• ঘনাচ্ছন্নদৃষ্ট ধনাচ্ছন্নমৰ্কং যথা নিম্প্রভং মন্তত্বে চাতিমূঢ়ঃ ! তথা বদ্ধবদুভার্তি যো মূঢ়স্কৃষ্টে: স নিত্যোপলব্ধি z = স্বরূপোহহমাত্মা ॥ ইহার অর্থ ঃ– ' মেঘাচ্ছন্ন দৃষ্টি মূঢ় ব্যক্তি যেমন মেঘাচ্ছন্ন স্বৰ্য্যকে, প্রভাহীন মনে করে, সেইরূপ মূঢ়জনের দৃষ্টিতে ক্ষেআমি মোহাচ্ছল্লের স্তায় প্রতিভাত হই, সে-আমি নিত্য জ্ঞানস্বরূপ অমাত্ম । আমাদের দেশের আদিম ঋষিরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দুইটি মুখ্যস্থানে পরম সত্য পরমাত্মার মঙ্গলময় মুখজ্যোতি দর্শন করিয়া কৃতকৃতাৰ্থ হইয়াছিলেন—ভয়াবহ সংসারে অভয় প্রাপ্ত হইয়াছিলেন-মৃত্যুময় সংসারে অমরত্ব লাভ করিয়াছিলেন-দুঃখশোকময় সংসারে পরমানন্দের থনি পাইয়াছিলেন ; সেই ধন পাইয়াছিলেন--যাহ পাইলে -ক্ষতা অপেক্ষ। অধিক আর-যে-কিছু পাইবার আছে তাহ মনে হয় না, আর, যাহাতে ভর করিয়া দাড়াইলে গুরু বিপদেও মন বিচলিত হয় ন!— “বং লব্ধ, চাপরং লাভং মন্যতে নাধিকং ততঃ। যস্মিন স্থিতো ন দুঃখেন গুরুণাহপি বিচাল্যতে ॥” ভগবদগীত। অধ্যায় ৬। শ্লোক ২২ ৷ এই দুইটি মুখ্যস্থানের একটি হচ্চে বৃহদব্ৰহ্মাণ্ডের হিরন্ময়-কোষ—যাহাকে বলা যাইতে পায়ে একৃতিপুরুষর অভেদস্থান, এবং আর-একটি হ’চ্চে ক্ষুদ্রব্রহ্মাণ্ডের হিরন্ময়-কোষ—যাহাকে বলা যাইতে পারে জীবাত্মা পরমাত্মার অভেদ-স্থান । প্রশ্ন । কাহাকেই বা তুমি বৃহদ ব্ৰহ্মাণ্ডের হিরন্ময় কোয বলিতেছ—কাহাকেই ব! তুমি ক্ষুদ্র ব্রহ্মাণ্ডের হিরন্ময় কোয বলিতেছ, অীর, সে দুইটি কোষের কাহাকেই বা কী-অর্থে মুখ্যস্থান বলিতেছ তাহা আমি বুঝিতে পারিতেছি না ; অতএব তোমার বক্তব্য কথাটা তুমি আমাকে আর-একটু স্পষ্ট করিয়া ভাঙিয়া বলে। উত্তর ॥ মুখ-শব্দের.শেযীক্ষরে য-ফলা দিলেই তাহা মুখ্য-শব্দে পরিণত হয়। তোমার মুখমণ্ডলটাই তোমার শরীরের মুখ্য স্থান ; আর, তোমার শরীরের সেই মুখ্যস্থানটিতে তোমার আত্মার ছবি অঙ্কিত রহিয়াছে। প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৮২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড আর সেইজন্ত—তুমি মখন আমায় নিকটে আগমন কর, তখন আমি তোমার মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া বলি যে, “ইনি আমার পরম বন্ধু দেবদত্ত”, তা রই—এ কথা বলি না যে “এটা দেবদত্তের মুখমণ্ডল ।” তুমি আমার সমীপস্থ হইলেই তোমাকে আমি আমার প্রত্যক্ষের আয়ত্তের মধ্যে ধরিয়া পাই বলিয়া তোমার মুখমণ্ডলের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে আমার এক মুহূৰ্ত্তও বিলম্ব হয় না ; পক্ষান্তরে যিনি যত বড়ই জ্যোতির্বিৎ পণ্ডিত হউন্‌ না কেন—সমগ্র বিশ্বব্রহ্মগুকে আয়ত্তের মধ্যে ধরিয়া পাইতে র্তাহার মহা দুবাঁণেরও সাধ্যে কুলায় ন—মহা বিজ্ঞানেরও সাধ্যে কুলায় না ; আর যিনিই যত বড় কবি হউম্‌ না কেন—তাহার স্বর্গমর্ত্যপাতাল-ভেদী মহা কল্পনারও সাধ্যে কুলায় না । কিন্তু তাহা সত্ত্বেও—নব্যযুগের নব্যতম জ্যোতির্বিৎ পণ্ডিতেরা বহুতর অনুসন্ধানের দুবাণ কসিয়া এবং বহুবিধ পরীক্ষার ফাদ পতিয়া এইরূপ একটা জগৎজোড়া সিদ্ধান্ত র্তাহীদের নবীন বিজ্ঞানের আয়ত্তাধীনে বাগাইয়া আনিতে পিছ পাও হ’ন নাই যে, অমুক নক্ষত্র-রাশির অমুক স্থানে সুৰ্য্যের স্বৰ্য্য অধিষ্ঠান করিতেছে, আবার সে স্থৰ্য্যেরও স্বৰ্য্য—দ্বিতীয় স্থৰ্য্যেরও স্বৰ্য্য—আকাশের মুদুরতম আর এক স্থানে অধিষ্ঠান করিতেছে । অতএব যদি বলা যায় যে, মকুষ্যের মুখমণ্ডল যেমন ক্ষুদ্র ব্ৰহ্মাণ্ডের (অর্থাৎ মানবদেহের ) মুখ্যতম স্থান —সৰ্ব্বজগতের কেন্দ্রস্থিত অন্তরতম স্থৰ্য্য তেমনি বৃহদ ব্ৰহ্মাণ্ডের মুখ্যতম স্থান, তবে তাহ নিতান্তই একটা ছেলেভুলানিয়া আরব্য উপন্যাস বলিয়া হাসিয়া উড়াইয়। দিবার কথা নহে। আমাদের দেশের প্রাচীন উপনিযদাদি শাস্ত্রকে সহায় করিয়া আমি তাই বলিতে সাহসী হইতেছি যে, ক্ষুদ্র ব্ৰহ্মাণ্ডের মুখ্যস্থান ‘কিনা ভগবৎপ্রেমী সাধু-পুরুষের প্রসন্ন মুখমণ্ডল যেমন র্তাহার আত্মজ্যোতিতে জ্যোতিষ্মাস্-বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডের মুখ্য স্থান কিনা বিশাল বিশ্বভুবনের অন্তরতম স্বৰ্য্যের স্বৰ্য্য তেমনি পরমাত্মার অপ্রতিম দিব্য জ্যোতিতে জ্যোতিষ্মান ! আরো আমি বলি এই যে, বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডেয় সেই অন্তরতম সূর্য্যের বরণীয় ভর্গের প্রতি—পরমাত্মার মঙ্গলময় মুখজ্যোতির প্রতি —ধ্যান-চক্ষু নিবিষ্ট করিবার পক্ষে গায়ত্ৰীমন্ত্র বিশিষ্টরূপে