পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্য। ] গায়ত্রী-মন্ত্রের এতাধিক মৰ্য্যাদা-মাহাত্ম্য। ক্ষুদ্র ব্রহ্মাণ্ডের অন্তরতম স্বৰ্য্য—যাহা ভগবৎপ্রেমী মহাপুরুষগণের স্বগীয় মুখজ্যোতির মূল আকর—তাহাকে আমাদের দেশের সাধক-মণ্ডলী সহস্ররশ্মির সহিত উপমা দিয়া গুরূপদিষ্ট তাত্ত্বিকী ভাষায় সহস্রদলপদ্ম বলিয় রূপকচ্ছলে নির্দেশ করিয়া থাকেন ; আর ক্ষুদ্র ব্ৰহ্মাণ্ডের ব্ৰহ্মরন্ধু স্থিত এই যে রহস্র-রশ্মি-ইহা বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডের অন্তরতম স্থৰ্য্যের সংক্ষিপ্ত প্রতিকৃতি ( miniature ) । ক্ষুদ্র ব্রহ্মাণ্ডের মুখ্য স্থানের অন্তর্ণিগুঢ় আধ্যাত্মিক জ্যোতিষ্কেন্দ্রকে যে নামেই যিনি নির্দেশ করুন না কেন—নামে কিছুই আইসে যায় না । প্রকৃত কথা এই যে, বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডের হিরন্ময় কোষে, অথবা—যাহ। একই কথা--সৰ্ব্ব জগতের অন্তরতম সূর্য্যমণ্ডলে, পরম পুরুষ পরমাত্মার সহিত অভিন্ন ভাবে সেই জগৎপ্রসবিত্রী প্রকৃতি, সেই সাবিত্রীশক্তি, বিরাজমান৷— গায়ত্রীতে যাহাকে বলা হইয়াছে “বরণীয় ভগ” ; আর, তেন্নিধারা অভিন্নভাবে, ক্ষুদ্র ব্ৰহ্মাণ্ডের হিরন্ময় কোযে পরমাত্মার সহিত জীবাত্মা নিগুঢ়তম প্রেমানন্দে ভাসমান। উপনিষদে স্পষ্ট লিখিত আছে “হিরঞ্চয়ে পরে কোষে বিরজং ব্রহ্ম নিপলং। তছুত্ৰং জ্যোতিষাং জ্যোতিস্তদ যদাত্মবিদে বিদু: ॥” ইহার অর্থ - "হিরন্ময় পরম কোষে নিষ্কলঙ্ক এবং নিষ্কল ব্রহ্ম প্রকাশ পা’ন ;–সেই শুভ্ৰ জ্যোতির জ্যোতি প্রকাশ পা’ন—-যাহাকে আত্মজ্ঞানীরা জানেন।” আমাদের দেশের আদিম ঋষি তপস্বীরা অধ্যাত্ম যোগের সাধনদ্বার! মনকে নিৰ্ম্মল এবং পবিত্র করিয়া–শাস্ত দান্ত সমাহিত হইয়া—ঐ দুই হিরন্ময় কোষে পরম সত্য পরমাত্মার মঙ্গলময় মুখজ্যোতি দর্শন করিয়া পরমকৃতার্থতা লাভ করিয়াছিলেন । পূৰ্ব্বতন কালের সাধু মহাত্মার একদিকে যেমন ধ্যান যোগে পরমাত্মার সাক্ষাৎকার লাভ করিয়া আর কোনো লাভকেই তাহ অপেক্ষা অধিক লাভ মনে করিতেন না, আর একদিকে তেমনি তাহার পরমাত্মাকে স্মরণপূৰ্ব্বক উtহাতে কৰ্ম্ম সমর্পণ করিয়া মঙ্গলকাৰ্য্যের অমু গীতlপাঠের উপসংহার ফলদায়ক বলিয়া অামাদের দেশের সাধকগণের নিকটে ৬৭১ SSAS SSAS SSAS SSAS AMM MeS A S A S A S A ষ্ঠানে প্রবৃত্ত হুইতেন। তার সাক্ষী—ভগবদগীতার সপ্তদশ অধ্যায়ে স্পষ্ট লেখা আছে J. “ওঁ তৎসদিতি নির্দেশে ব্রহ্মণস্ত্রিবিধঃ স্মৃ তঃ । ব্রাহ্মণ স্তেন ধোশ্চ যজ্ঞাশ্চ বিহিতাঃ পুঃ , তস্মাদোমিত্যুদাহৃত্য যজ্ঞদান তপঃ ক্রিয়াঃ । প্রবর্তন্তে বিধানেক্তাঃ সততং ব্রহ্মবাদিনীং । তদিত্যনভিসন্ধায় ফলং যজ্ঞ তপঃ কিয়াঃ । দানক্রিয়াশ্চ বিবিধ{ঃ ক্রিয়স্তে মোক্ষকাজিহ্মভিঃ ॥ সদৃভাবে সাধুভাবে চ সদিত্যেতৎ প্রযুজ্যতে । প্রশস্তে কৰ্ম্মণি তথা সচ্ছব্দঃ পার্থ যুজ্যতে ॥ যজ্ঞে তপসি দানে চ স্থিতিঃ সদিতি চোচ্যতে । কৰ্ম্ম চৈব তদৰ্থীয়ং সদিত্যেবাভিধীয়তে ॥” গী তার এই বচন-গুলির তাৎপর্য্য সংক্ষেপে এই ঃ– ক্রিয়াকম্মের অনুষ্ঠানকালে অনুষ্ঠাতা ওঁতৎসৎ উচ্চারণ পূর্বক অমুষ্ঠিতব্য কার্য্যের অনুষ্ঠানে প্রবৃত্ত হ’ন, অs শব্দের উচ্চারণ দ্বারা ব্রহ্মে লক্ষ্য স্থির করিয়া ফলাভিবন্ধি পরিত্যাগ-পূৰ্ব্বক কৰ্ত্তব্য সাধনে তৎপর হন। সৎশব্দ উচ্চারণ-পূর্বক সৎস্বরূপ পরমাত্মাতে কৰ্ম্ম সমর্পণ করিয়া সদুভাবে এবং সাধুভাবে সৎকার্য্যের অনুষ্ঠান করেন । কিয়ুংমাস পূৰ্ব্বে ওঁ তৎসৎ মন্ত্রের অর্থ আমি যাহা বুঝি তাহ সাহিত্য-সন্মিলনীসভায় কোনো একটি বিশেষ অধিবেশনে সংক্ষেপে বলিয়া চুকিয়াছিলাম এইরূপ :– “পারমর্থিক সত্যের মুলতন্ত্র ওঁতৎসৎ । তৎশকের সামান্ত অর্থ--ঘটি' বাট চেয়ার টেবিলু প্রভৃতি ষ-তা জ্ঞেয়বস্ত ; আর তাহার বিশেষ অর্থ-পঞ্চম জ্ঞেয় বস্তু অর্থাৎ সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট জানিবার বস্তু ; তার সাক্ষী—উপনিষদে অাছে “তদূfবজিজ্ঞাসস্ব তদব্ৰহ্ম” “সেই বস্তুকে জানিতে ইচ্ছা কর—সে বস্তু ব্ৰহ্ম।” তৎশব্দের সামান্য অর্থ যেমন যা-ত বস্তু এবং বিশেষ অর্থ যেমন পরম বস্তু— সৎশব্দের সামান্য অর্থ তেমনি তুমি আমি তিনি প্রভূতি যে-সে সজ্জন বা সংপুরুষ, অর, তাহার বিশেষ অর্থ পরম পুরুষ পরমাত্মা। বেদস্তাদি-শাস্ত্রের মতে পরমাত্মা শুধুই কেবল পরম লক্ষ্ম বস্তু নহেন—শুধুই কেবল তৎ নহেন ; একদিকে যেমন তিনি জ্ঞানের পরম বিষন্ন “তৎ", আর এক দিকে তেমনি তিনি জ্ঞানের পরম